মাতারবাড়ীতে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি, জলাবদ্ধতা যেন ললাট লিখন
ইয়াছিন আরাফাত, মহেশখালী : মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নে বর্ষার শুরুতে টানা বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে । এতে ভোগান্তি যেন ললাটলিখন বিভিন্ন জনপদের মানুষের। সংকট উত্তরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। এতে পানি বন্দি মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
উপজেলার মাতারবাড়ীতে দেশের সর্ববৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হওয়ার সুবাদে ইউনিয়নের চতুর্দিকে বেড়িবাঁধ নিমার্ণের কথা রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু মাতারবাড়ী রাঙ্গাখালি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে আগে সব সুইচগেট ও চিংড়ি ঘেরের পলবোট ছিল তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে ছোট পরিসরে পানি প্রবাহিত হওয়ার জন্য রাঙ্গাখালী যে পোল বসিয়েছেন কোল-পাওয়ার জেনারেশন কর্তৃপক্ষ যা পানি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত হওয়ায় পুরো মাতারবাড়ীর অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এতে অন্তত শতাধিকের ও বেশি পরিবার বর্তমানে পানিবন্ধি হয়ে পড়ে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। উক্ত পরিবারগুলোর প্রায় ৩ হাজার সদস্য সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। পানিবন্দি বাসিন্দা ডাক্তার ইয়াকুবসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা দীর্ঘদিন যাবত পানির সঙ্গে বসবাস করে এলেও পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি আদৌও।
তারা আরো জানান, মাতারবাড়ীতে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ১৪শ ১৪ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবদারে সাড়া দিয়ে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন স্থানিয়রা। তাতে প্রধানমন্ত্রীও খুশি হয়েছেন মাতারবাড়ীর মানুষের প্রতি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ীর মানুষকে সব ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের সুযোগ দিলেও এক শ্রেণির দালাল সাধারণ জনগণের অধিকার বঞ্চিত করে নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, চলতি বর্ষায় বৃষ্টির পানি আর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে এখন স্বপ্নের সিঙ্গাপুরখ্যাত মাতারবাড়ীতে নিচু এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়ে প্রায় ৩ হাজার নারী-পুরুষ এক মাস যাবত পানিবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
এতে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কোল-পাওয়ার কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের ছোট আকারে ব্যবস্থা করায় পানি সরতে পারছেনা ফলে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাতারবাড়ী দক্ষিণ রাজঘাট ও ফুলজান মোরা এলাকার মানুষের কষ্ট আর যাতায়াতের অসুবিধাসহ রান্না-বান্না করাও ভীষণ কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের। মাতারবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, পানিতে কয়েকটা গ্রাম অথৈ জলে ভাসছে। এটি খুব দুঃখ লাগে। পানি নিষ্কাশনের জায়গা বড় করার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ মাহাফুজুর রহমান বলেন, মাতারবাড়ীতে জলাবদ্ধতার কথা স্থানিয় জনপ্রতিনিধি অবগত করছে
আর আমি সংশ্লিষ্ট কোলপাওয়ার কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করব । তারা অতি শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন আশা রাখি।