উত্তাল তিস্তা ,নীলফামারীতে পানি বন্দী হাজার হাজার মানুষ
সত্যেন্দ্র নাথ রায়, নীলফামারী,প্রতিনিধি : হু হু করে উজান হতে ধেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে গত ৩’দিনের অবিরাম বর্ষনে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে খুলে দেয়া হয়েছে ৪৪টি গেট। ¯্রােতে ভেসে গেছে ঘর বাড়ি সহ ফ্লাড বাইপাস,ভেঙ্গে গেছে গ্রামের রাস্তা ঘাট, ক্রমাগত পানি বাড়তে থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ। এছাড়া ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ৩ টি বাঁধ ডুবে গেছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি, এরই মধ্যে প্রায় শতাধিক ঘর বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এই সব এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দী ও আতংকিত হয়ে পড়েছে।
নদীর তীরবর্তী নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ২২টি চরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে ডিমলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ স্পার বাঁধ ও শুঠিবাড়ি তেলির বাজারের স্বপন বাঁধ।
বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৬ টায় বিপদ সীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুর ১টায় ২০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে তিস্তা ব্যারাজ সংলগ্ন এলাকায় রেড এলার্ড জারি করা হয়েছে। নীলফামারী ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউ-দৌলা জানান, আমাদের তিস্তা ব্যারাজে যে ফ্লাড বাইপাস আছে তাতে নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপদসীমা ছাড়ালে ঐ বাইপাস খুলে যায়, সেটি পানির ¯্রােতে ভেসে গেছে। মঙ্গলবার রাত ১০ টার পর থেকে নদীতে পানি বাড়তে থাকে। বুধবার সকাল ৬টায় প্রথম বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। ভারতে কয়েক দিন প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানি বিপদসীমার উপরে উঠে যাওয়ায় তারা তিস্তা ব্যারাজের গজলডোবার ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে। যে কারণে আমাদের এখানে হঠাৎ এমন পানি বৃদ্ধি ঘটেছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারীসহ ১০টি ইউনিয়ন এলাকার ২২টি চর গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ। চরাঞ্চলের এসব বাড়ি-ঘরে ৩ থেকে ৫ ফুট পানি উঠেছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট সহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি।
ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর ইসলাম জানান, রাত থেকে মাইকিং করে ছাতুনামা, কেল্লাবাড়ী ও ভেন্ডাবাড়ি চরের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী শাসন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
যা তিস্তা পয়েন্টে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ পানি প্রবাহ। এ কারনে পানিতে ভেসে গেছে ফ্লাড বাইপাস তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট খুলে দিয়েও পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। পাউবো’র লোকজন সতর্কতার সাথে বাঁধে উপস্থিত থেকে নজরদারি করছে।