অভয়নগরে চাঁদার টাকা না দেয়ায় খুন হয় ইউপি মেম্বার উত্তম : অস্ত্র-গুলি ও বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধার : গ্রেপ্তার-৫

0

যশোর প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড নিয়ে একটানা ৬দিন প্রশাসনের একাধিক টীম অভিযান চালিয়ে অবশেষে ৬ দিন পর নবনির্বাচিত মেম্বার উত্তম সরকার হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা, যশোর (ডিবি)। রোববার সকাল ১১টায় ডিবি অফিসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান ডিবি, চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ‘নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি’ নামে একটি চরমপন্থী দলের সদস্যদের হাতে খুন হন উত্তম।

খুনের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আলামত হিসেবে উদ্ধার করেছে হত্যা মিশনে ব্যবহৃত একটি ওয়ান শুটারগান, তিন রাউন্ড গুলি, দুটি গুলির খোসা, ছয় রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, একটি লোহার রড, একটি ককটেল, ১০ গ্রাম গান পাউডার, ৫০ গ্রাম তারকাটা, একটি শপিং ব্যাগ, পাঁচটি মোবাইল ফোনসহ একটি এয়ারগান।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার রুদাঘর উত্তরপাড়ার মো. ইসাহাক গোলদারের ছেলে ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল (১৯), যশোরের অভয়নগর থানার সুন্দলী পূর্বপাড়ার মৃত নিতাই বিশ্বাসের ছেলে প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট (৪৬), মণিরামপুর থানার সুজাতপুর গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে পল্লব বিশ্বাস ওরফে সুদিপ্ত (২৪), সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের মৃত শিব পদ মন্ডলের ছেলে প্রশান্ত মন্ডল (৩৮) ও খুলনা ডুমুরিয়া থানার দিঘলিয়া গ্রামের মৃত বিষ্ণুপদ মন্ডলের ছেলে বিজন কুমার মন্ডল ওরফে বিনোদ (৪২)। গতকাল রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করে প্রেস ব্রিফিং করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

গোয়েন্দা শাখা কার্যালয়ে জেলা ডিবি পুলিশের অফিসাস ইনচার্জ (ওসি) রুপম কুমার সরকার প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত সোমবার (১০ জানুয়ারি) অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন নবনির্বাচিত মেম্বার উত্তম সরকার। ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডি) উপর তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।

পুলিশ পরিদর্শক শেখ শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হোসেন ও এসআই মফিজুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি চৌকশ দল ১৫ হতে ১৬ জানুয়ারি (রবিবার) ভোর পর্যন্ত খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানা, যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

এসময় হত্যা মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরকদ্রব্য, মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা নিজেদেরকে কথিত ‘নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি’র সক্রিয় সদস্য বলে দাবি করেছে।

দলীয় ছদ্মনাম ব্যবহার করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় হত্যা, চাঁদাবাজি করে থাকে তারা। এরই ধারাবহিকতায় গত ১০ জানুয়ারি সোমবার রাত আনুমানিক ৮টার সময় অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামনে নবনির্বাচিত ইউপি মেম্বার উত্তম সরকারের নিকট চাঁদার টাকা না পেয়ে গুলি করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে তারা। তাদের একটি সংবদ্ধ দল রয়েছে। অনেক সদস্য পলাতক রয়েছে। তবে পলাতক আসামী আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান। প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাতে নিজ বাড়ি ফেরার পথে অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য (মেম্বার) উত্তম সরকার। এরপর থেকে পুলিশের কয়েকটি টিম হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের আটকে অভিযান অব্যাহত রাখে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.