পাবনা-৪ উপনির্বাচনে ঈশ্বরদীতে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অবস্থানকালে দলীয় কার্যালয়ের দখল ও আধিপত্য নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ : সভাপতি-সেক্রেটারিসহ আহত ১০

0

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন ঘিরে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় দুটি গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। সোমবার বেলা ১০ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসহাক মালিথা গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এখনও দু’গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। প্রাণ ভয়ে সাধারণ মানুষ দিকবিদিক ছুটাছুটি শুরু করে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের আহতরা হচ্ছেন; পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইসহাক মালিথা, মুলাডুলি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি বক্কার মালিথা, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের পুত্র রনিসহ অন্যরা। এদের মধ্যে ধারালো অস্ত্রাঘাতের শিকার রনির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবে জরুরী সংবাদ সম্মেলনে বসেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দখল, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইসহাক মালিথা গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ৬ বছর পর রোববার সন্ধ্যায় সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু দলীয় কার্যালয়ে একক আধিপত্য বিস্তার করতে যায়। এতে বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে বচসার সৃষ্টি হয়। সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় নেতাদের ফুল দেয়া নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে মিন্টু ও ইসহাকের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে খবর পেয়ে উভয়গ্রুপ জড়ো হলে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, জামাত-শিবির অনুসারীরা আসন্ন নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে একের পর এক অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অপ্রীতিকর ঘটনার পেছনে তারাই দায়ী বলে দাবী করেন মিন্টু। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইসহাক মালিথা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই আবুল কালাম আজাদ মিন্টু নোংড়ামি করে আসছে। এটা নতুন কিছু নয়। মাঝে মধ্যেই দলীয় কার্যালয়ের একক দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকতেই পরিকল্পিতভাবে পৌর মেয়র এই ন্যাক্কারজকন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনাগুলো স্বচক্ষেই কেন্দ্রীয় নেতারা দেখেছেন এবং গুরুতর অভিযোগগুলো তাদের অবহিত করা হয়েছে। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্থা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুসহ নেতৃবৃন্দদের ফুলের শুভেচ্ছা জানানোর সময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে দফায় দফায় দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতার পরও দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.