আধুনিকতায় হারিয়ে গেল কুপিবাতি
সত্যেন্দ্রনাথ রায় , নীলফামারী প্রতিনিধি : এক সময় ছিল রাতের আঁধার কে দুর করার একমাত্র অবলম্বন ছিল কুপি বাতি। যার ব্যবহার ছিল বাসা বাড়ী দোকান পাট সহ সর্বোত্রই। কিন্তু কালের বিবর্তনে প্রযুক্তি ব্যবহারে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেল বহুল ব্যবহৃত এই কুপিবাতি।
গ্রামীন সমাজে প্রতি বাড়িতেই নানা ধরনের কুপি বাতির প্রচলন ছিল।কোনটা ছিল মাটির, কোনটা কাঁচের , কোনটা বা পিতলের এমনকি কোনটা টিনের। আকারে ও প্রকারে এটি বড় ও ছোট হত। দাম ছিল প্রায় ৫-২০ টাকা পর্যন্ত। বড় কুপিবাতি গুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এমনকি দোকানপাট এবং ছোটগুলো ব্যবহৃত হতো বাসা বাড়িতে।
এটি জ্বালানোর জন্য ব্যবহৃত হতো কেরোসিন তেল। আর আলোর তারতম্য ঘটানোর জন্য লাগত কাপরের ছোট- বড় টুকরা বা পাটের আঁশ। যাকে শৈল্তা বলা হতো। এক সময় দেখা যেত গ্রামের মানুষজন হাটে যাওয়ার সময় পাশাপাশি একটি করে চিকন রসিদিয়ে ঝুলে বোতল নিয়ে যেত যেখানে কুপি বাতির জন্য হাট হতে ব্যবহৃত কেরোসিন তেল নিয়ে আসত। আর গ্রামীন বধুরা প্রতি সন্ধ্যায় জ্বালানোর জন্য এটিকে পরিষ্কার – পরিচ্ছন্ন ও ঠিকঠাক করে রাখত।
অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের বাজারে দেখা যেত দোকানিরা এটিকে একটি খুটির সাথে বেঁধে দোকান করত। গ্রামীন জনপদের মানুষের অন্ধকার দুর করার একমাত্র অবলম্বন ছিল এটি। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তি ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিদ্যুতের আবিস্কার ও ইলেকট্রিক অনেক উপকরণ (টর্চলাইট, এলইডি বাল্ব, সোলার প্যানেল)এর ফলে হারিয়ে গেছে বহুল ব্যবহৃত কুপিবাতি।যা সমাজের মানুষের কাছে বর্তমানে শুধুই স্মৃতি।
এ বিষয়ে কথা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার (সাবেক ডোমার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান),শালমারা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক জিতেন্দ্র নাথ রায় (এম বিবিএস ডা,তপন চন্দ্র রায় এর পিতা) বলেন আমরা নিজেই কুপিবাতি দিয়ে পড়াশোনা করেছিলাম। এই কথা মনে হলে আমাদের আগেরকার কথা মনে পড়ে। সে সময় প্রচুর অভাব ছিল মানুষের। এটির সাথে আমাদের জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িত।তবে অদুর ভবিষ্যতে এটিকে দেখতে তরুণ প্রজন্মকে জাদুঘরে যেতে হবে।