পাবনা পৌরসভার মেয়র পদে নৌকার মাঝি আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি
নিজস্ব প্রতিনিধি : সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পাবনা পৌর সভায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন পেলেন আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি। বৈশ্বয়িক মহামারী করোনা ভাইরাসে সারাদেশ যখন সকল কর্মকান্ডে স্থবির। সেই মুহুর্তে করোনা মহামারী প্রতিরোধে সন্মুখ যোদ্ধাদের মধ্যে পাবনার বিশিষ্ট শিল্পপতি, পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও তরুণ রাজনীতিবিদ আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনির নামটিও আষ্ঠেপিষ্ঠে জড়িয়ে পড়েছে।
করোনাকালীন সংকটময় মুহুর্তে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ স্কয়ারের সহযোগিতায় এবং পাবনা জেলা যুবলীগের আয়োজনে পাবনা পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের ২৬ হাজার অসহায়, দুস্থ, কর্মহীন ও গরীব মানুষের মুখে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছেন আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি ও তার নেতাকর্মিরা। তিনি জেলা যুবলীগের আহবায়ক। পাশাপাশি পাবনার তরুণ শিল্পপতি। মাসপো জুট মিলস্, মাসপো ফ্লাওয়ার মিলস্ ও মাসপো বিজনেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
করোনার এই সংকটময় সময়ে মানুষ যখন জীবন মরণের এক বেঁচে থাকার যুদ্ধে অবতীর্ণ। সেই সময়ে প্রাণসংশয়ের তোয়াক্কা না করে পাবনা পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ড মহল্লা থেকে শুরু করে সদর উপজেলার মালিগাছা, দাপুনিয়া, মালঞ্চি, হেমায়েতপুর, ভাড়ারা, দোগাছি, সাদুল্লাহপুর, আতাইকুলা, চরতারাপুর, গয়েশপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে মানুষের দ্বারে দ্বারে খোঁজ খবর নিয়েছেন। পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্য সহায়তা।
করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে দেখলে যেখানে প্রাণ সংশয়ের ভয়ে মানুষ কাছে যেতে সাহস পেতেন না। সেখানে আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি তার সক্রিয় কর্মি বাহিনী নিয়ে করোনা প্রতিরোধে সন্মুখ সারির যোদ্ধায় অবতীর্ণ রয়েছেন। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে খোঁজ খবর নেয়া, তাকে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স যোগে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে করোনা ইউনিটে নিয়ে যাওয়া এবং মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনের ব্যবস্থাও করেছেন।
আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি’র অসাংবিধানিক নির্বাচন প্রতিহত, নির্বাচন পরবর্তী সকল আন্দোলন ও কর্মসূচী পালন, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা ও সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে জেলা ছাত্রলীগের সকল কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ, ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী লগিবৈঠা আন্দোলনে দলীয় নেতাকর্মি নিয়ে সক্রিয় অবস্থান, ১/১১ তে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে দলীয় সকল কর্মসূচীতে সম্পৃক্ততা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবীতে সকল কর্মসূচীতে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।
সনি বিশ্বাস বলেন, ১৯৯৫ সালে বিএনপির সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে সরকার বিরোধী আন্দোলনের কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তারা পৈত্রিক ভাবেই সম্ভান্ত মুসলিম পরিবার। দাদা, চাচা ও বাবাদের সময় থেকেই ধারাবাহিক ভাবে পাবনার বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী নেতারা যখন কারা অভ্যন্তরে বন্দি ও আশ্রয়হীন ছিলেন। ওই সময়ে তাদের পরিবারগুলোকে বিশ্বাস পরিবারের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা এবং নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সনি বিশ্বাস বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার মামা ইসমাইল হোসেন গামা রণাঙ্গনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। তার স্মৃতিতে পাবনা জেলা স্কুলের পাশে ১০৮ নং শহীদ গামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
পাবনা জেলা যুবলীগের আহবায়ক আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত। সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যায়নকালে তিনি ছাত্র সংসদে জেলা ছাত্রলীগ মনোনীত প্যানেল থেকে আমোদপ্রমোদ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি পাবনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সিনিয়র সহসভাপতি। পাশাপাশি তিনি এফবিসিসিআই ঢাকার জেনারেল বডির সদস্য, রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি, ঐতিহ্যবাহী অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির কার্যনির্বাহী সদস্য, বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের আজীবন সদস্য, স্পেশাল অলিম্পিক বাংলাদেশ সাব চেপ্টার পাবনার সহসভাপতি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পাবনা জেলা শাখার আজীবন সদস্য, রাইফেল ক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং সুধীর কুমার হাইস্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে ন্যায়, নিষ্ঠা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
আলী মর্তুজা সনি বিশ্বাস পাবনা জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরবর্তীতে বাবা আব্দুল মজিদ বিশ্বাসের বিশাল ব্যবসা পরিচালনার দায়ভার নিজ কাঁধে তুলে নেন। স্বল্প সময়ে এবং স্বল্প বয়সেই তিনি ব্যবসায়ী মহলে বেশ সুনাম অর্জন করেন। দ্রুত তিনি পাবনার শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতিদের তালিকায় নিজেকে স্থান করে নিতে সক্ষম হন। পৈত্রিক ব্যবসার পাশাপাশি তিনি ক্রমাগত ভাবে রাজনৈতিক কর্মকান্ডসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে হাত করেছেন প্রসারিত।
একান্ত আলাপচারিতায় আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি বলেন, বংশ, পরিবার, অর্থবিত্ত, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিটা ক্ষেত্রতে আমার বিচরণ, আমার সম্পৃক্ততা, আমার উঠাবসা। আমার চাওয়া পাওয়াটা মোক্ষম নয়। তবে মানুষের কল্যাণে নিজেকে সপে দিতে চাই। মানুষের পাশে সহায়তা, সহযোগিতার হাত বাড়াতে চাই। সেবা দিতে চাই অকুষ্ঠ চিত্রে।
সনি বিশ্বাস বলেন, পৌরসভার নাগরিক হিসেবে দেখেছি। উপলব্দি করছি। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও এখনও পাবনা পৌরবাসী নাগরিক অধিকাংশ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমি পৌরবাসীর সেবার মানসিকতা নিয়ে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করে পাবনাবাসীর সেবা করতে চাই । দল আমাকে মনোনয়ন দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে ধন্যবাদ। আমি যদি নৌকা প্রতীক নিয়ে সাধারণ ভোটারের অকুণ্ঠ ভালোবাসায় নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারি, তাহলে প্রাচীন জনপদ পাবনার এই অবহেলিত পৌরসভাকে আমি দেশের মডেল পৌরসভারগুলোর একটি তৈরি করতে চাই।
সনি বিশ্বাস আরও বলেন, পাবনা পৌরসভার অধিকাংশ সেবা হয়ে গেছে অপরিকল্পিত। যেন তেন সেবা দিয়ে মানুষের কল্যাণের পরিবর্তে উল্টো মানুষকে বোঝা বইতে হচ্ছে। পৌরসভার একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে, একজন ভোটার হিসেবে নাগরিক অধিকার কতটুকু সেটা যদি আমি বুঝতে পারি, তাহলে দীর্ঘদিন ধরেই নানা মেয়র এসেছেন ক্ষমতায়। তারা কেন বুঝেন না, আর সেই সেবা দিয়ে ভোটারদের কাছ থেকে ভোট নেয়ার সময়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেটা বাস্তবায়ন করেন না। এটা আমার বুঝে আসে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, বারবার নির্বাচিত সফল প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনক-এর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দিয়ে পাবনা পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচনের সুযোগ দিয়েছেন এজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। তিনি জানান আমি পর্যায়ক্রমে এই পৌরবাসীর সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে বদ্ধ পরিকর থাকবো।
পাবনা শহরকে যানজট মুক্ত করতে যুগোপযোগী পদক্ষেপ, প্রয়োজনে ফুটওভার ব্রীজ, অবৈধ ফুটপাত দখল মুক্ত, পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ পানি নিষ্কাশনে পরিকল্পিত পরিকল্পনা গ্রহণ, শহর সৌন্দর্যবর্ধন, পৌর এলাকায় সড়কবাতি, হকার্সদের দু’পাশ থেকে সড়িয়ে পথচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচল এবং ফুটপাতের হকার্স ব্যবসায়ীদের জন্য পৃথক মার্কেট ব্যবস্থা, পৌর ট্রাফিক ব্যবস্থায় ডিজিটালাইড, নিরাপদে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বাণিজ্য করা, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম বন্ধ করাসহ নাগরিক সকল সুযোগ সুবিধা সহজে প্রাপ্তিতে মনিটরিং জোরদার করাসহ নানা যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানালেন আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি।