ত্রিশালে ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীরা

0

এনামুল হক, ময়মনসিংহ : ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ৬৮ নং কোনাবাড়ী জি.সি সরঃ প্রাথঃ বিদ্যালয়টি ১৯৬৯ সালে স্থাপিত হয়। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সুনামের সাথে শিক্ষাপাঠ পরিচালনা হয়ে আসছিল। এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা আজ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। কালের বিবর্তনে স্কুলটির পুরনো শিক্ষক মন্ডলী, স্কুল পরিচালনা কমিটি ও জমিদাতারা অনেকেই পরপারে চলেগেছে। পরির্বতন হয় স্কুলের কমিটি ও শিক্ষক মন্ডলী। তাদের নতুন দায়িত্ব পুরনো নিয়মনীতি নিয়ে চলতে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে বার বার বাধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। তবুও নানা ধরনের সমস্যার মধ্যেও সফলতার সাথে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে জি.সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

আশপাশের গ্রাম থেকে এখানে পড়াশুনা করতে আসেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের চারপাশে পুকুর আর পুকুর। স্কুলে যাওয়ার রাস্তাটি পুকুরের পানি দিয়ে গলিয়ে ফেলা হয়েছে যে কারণে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবন ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়তই যাতায়াত করতে হচ্ছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দূর্ঘটনা। স্কুলে আসার সময় পুকুর পাড়ের দু’পায়ের রাস্তার জন্য শিক্ষার্থীরা পরে গিয়ে মারাত্বক ভাবে জখম হয়।

স্কুলের জমি মৎস্য চাষিদের ফিসারীতে চলে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাদুলা ও আগের মত শরীরচর্চা করতে পারছেনা। খেলার কোন উপকরণ পুকুরে পরে গেলে সাঁতার না জানা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে পুকুর থেকে তুলে আনেন। বিদ্যালয়ের চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল নেই এবং নিদির্ষ্ট খেলার মাঠ না থাকার কারনে ছোট পরিসরে খেলাধুলা করে শিক্ষার্থীরা। যার কারনে মাঝে মধ্যেই খেলার সামগ্রীগুলো পুকুরে পরে যায় এটাও একটা বড় ধরনের ঝুঁকির কারণ। একারণে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের স্কুলের মাঠ বড় না থাকায় স্কুলের সামনের খালি যায়গা ও বারান্দায় খেলা করি। অনেক সময় পুকুরে খেলনা পরে গেলে সেটা আনতে পুকুরের পানিতে সাঁতার না জানা সহপাঠীরা ডুবে যাওয়ার ভয়ে খেলনা আনতে যায়না। মাঠের চারিদিকে বাউন্ডারি না থাকলে আমরা খেলবো কোথায়। তাছাড়া আমরা অনেকেই সাঁতার জানিনা ভয় লাগে যদি হঠাৎ খেলতে খেলতে পানিতে পরে যাই। তাই মন চাইলে সে ভাবে খেলতে পারিনা।

স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়টি অনেক পুরোনো কিন্তু সে অনুয়ায়ী সার্বিক উন্নতি হয়নি। দূর-দুরান্ত থেকে এখানে অনেক কোমলমতি শিশুরা পড়তে আসে। স্কুলটির নেই সীমানা প্রাচীর, নেই কোন ভালো খেলার মাঠ এভাবে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান সম্ভব নয়। স্কুলের চারিদিকে পুকুর যেকোন সময় আমাদের শিশুরা পানিতে পরে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ স্কুলটি আমাদের সন্তানদের জন্য নিরাপদ নয়, কদিন আগেই দেখলাম পুকুর পার ভেঙ্গে গেছে। স্কুল এর চারিদিকে বাউন্ডারি দেয়াল নেই, যেটুকু সময় ছাত্ররা বারান্দায় খেলে তাও আবার কিছু পুকুরে পরলে পুকুরের মালিকরা খেলার সাামগ্রী আনতে দেয়না। এত সমস্যার মাঝে কিভাবে আমাদের ছোট ছোট বাচ্চা স্কুলে পাঠাবো?

কোনাবাড়ী জি.সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, পুকুর পারের চারিদিক দিয়ে শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ার কোন রাস্তা নেই, চারিদিকে শুধু ফিসারী। ফিসারির পাড়ের দু’পাশের রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা আসা যাওয়া করে, এ কারনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করাতে হচ্ছে। অনেক সময় অবিভাবকগণ শিশুদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেন। তিনি আরো বলেন, পুকুর মালিকদেরকে বার বার অনুরোধ করেছি যদি রাস্তাটি একটু বড় করার উদ্যোগ নিতো তাহলে স্কুলের যাতায়ত ব্যবস্থা সুন্দর হতো ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করতো নিরাপদ ভাবে। তারা আমাদের কথাগুলো শুনছেন না বরং স্কুলের জমি তাদের পুকুরের দখলে চলে যাচ্ছে। এবিষয়ে উপেজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিলোনা, সরেজমীনে গিয়ে বিষয়টি জেনে দ্রুত একটা ব্যবস্থা নিবেন।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.