‘দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে ছিনতাই করতো, ছিনতাইয়ের কাজে অস্ত্র ব্যবহার করতো’

ছিনতাই হওয়া টাকার মধ্যে ৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা উদ্ধার

0

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনায় সম্প্রতি তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় অস্ত্রের ব্যবহার ছিল এবং একই চক্র এসব ছিনতাই কাজে জড়িত। ছিনতাইকারীরা মুলত বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করতো এবং তাদের পিছু নিয়ে কিছুটা নির্জন এলাকায় পেয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করতো। এসব ঘটনায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফেরার পথে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এক গ্রুপ ব্যাংকে টার্গেট করে পিছু নিতো এবং অন্য গ্রুপকে সেটা জানিয়ে দিতো।

ছিনতাইকারীরা দু’টি মোটরসাইকেলে থাকতো চারজন। একটিতে তিনজন, অন্যটিতে একজন। তিনজন ছিনতাই করে, অন্য একজন তাদের পেছনে সাহায্য করে। প্রয়োজনে তারা কিছুদূর গিয়ে ভাগ হয়ে দু’জন দু’জন করে ভাগ হয়ে দু’টি মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। আর নিজেদের বাঁচাতে সবসময় তারা অস্ত্র ব্যবহার করতো। গুলি ছুঁড়ে আতংক সৃষ্টি করে পালিয়ে যেত।

সম্প্রতি পাবনার তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ক্লু উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তার নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।

মঙ্গলবার বেলা তিনটায় পাবনা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় জড়িত মুল পরিকল্পনাকারীসহ ছিনতাইকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেইসাথে ছিনতাইকৃত ৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা উদ্ধার ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পাবনা পৌর সদরের দক্ষিণ মাছিমপুর এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে মাসুদ রানা (৩২), গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রাগোবেন্দ্রপুর গ্রামের ধুলা মিয়া ওরফে দুলা মিয়ার ছেলে আল আমিন (৩৬), মানিকগঞ্জ সদরের জয়রা এলাকার মৃত আইয়ুব আলী খানের ছেলে ইব্রাহিম খান ওরফে মোর্শেদ খান ওরফে মামা (৪৯) ও ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর জয়কালী বাড়ি এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম (৩২)।

পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসি বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর, ১ ও ৪ অক্টোবর পাবনা শহর এবং আশপাশের এলাকায় আলাদা তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ছিনতাইকারীরা ২৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাদের বাধা দিতে গেলে গুলিবর্ষণ করে তারা পালিয়ে যায়। এসব ঘটনায় আলাদা তিনটি মামলা রুজু করা হয় সদর থানায়। এরপর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযানে নামে জেলা পুলিশ।

প্রথমে পাবনা শহরের বাংলা ক্লিনিকের গলিতে ছদ্মবেশে ভাড়া থাকা মুল পরিকল্পনাকারী মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য মতে ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চক্রের আরও তিন সদস্য আল আমিন, ইব্রাহিম খান ওরফে মোর্শেদ খান ও আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি পিস্তল, ২টি গুলি, একটি গুলির খোসা, দু’টি মোটরসাইকেল, ৫টি মোবাইল ফোন, ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত পোশাক। চক্রের আরও দু’জন সদস্য পলাতক রয়েছে।

এছাড়া ছিনতাই হওয়া টাকার মধ্যে ৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে ২টি থেকে ৭টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। পরে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.