বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে মস্কোতে ‘মৈত্রী
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বাংলাদেশ ও ভারতীয় দূতাবাস যৌথভাবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তিতে ‘মৈত্রী দিবস’উদযাপন করেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় ভারতীয় দূতাবাসের দূর্গা প্রসাদ ধর মিলনায়তনে মৈত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে রাশিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দসহ দুই দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাশিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী দুই দেশের নাগরিকদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা পর্বে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান ৯ মাসের দীর্ঘ মুক্তিযুদ্ধে ভারত যেভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল তা গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও তার অনেক আগেই মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও সর্বাত্মক সহযোগিতা পেয়েছিল, যা তাদের মনোবল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে ভারত মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত বার্ষিকীতে এই মৈত্রী দিবসের উদযাপন দিনটিকে আরও অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক এই সম্পর্ককে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনন্য এক মাত্রায় নিয়ে গেছেন। দুই দেশের মধ্যেকার এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এ সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথাও রাষ্ট্রদূত কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
আলোচনা পর্বে ভারতের রাষ্ট্রদূত পবন কাপুর বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহসিক সস্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে দুই দেশের মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের যে ভিত্তি রচিত হয়েছিল, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে তা আরো সুদৃঢ় হয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অভিন্ন লক্ষ্যকে সামনে রেখে দুই দেশই একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ভারতের রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সব সময় ভারতের কাছে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মৈত্রী দিবস উপলক্ষে দুই দেশের নির্মিত দুটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনাবলীর ওপরে একটি বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শিত হয়।