মাস্ক না খোলার পরামর্শ স্বাস্থ্য অধিদফতরের
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে করোনা শনাক্তের পরিমাণ আগের দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। তবে মৃত্যু কমেছে আগের দিনের চেয়ে। গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫২৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে আটজনের। একই সময়ে সারা দেশে মোট ২০ হাজার ১৩২টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্তের হার হয়েছে ২.৬৩ শতাংশ। আগের দিন শনিবার করোনা শনাক্তের হার ছিল ২.১১ শতাংশ। একই সময়ে গতকাল করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন তিন হাজার ৩৪০ জন।
সারা দেশে ৫২৯ জনের করোনা শনাক্ত হলেও ঢাকা মহানগরীতেই শনাক্ত হয়েছে ৩৯০ জন। ঢাকা মহানগরী এখনো করোনার হটস্পট হিসেইে রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রমক রোগের পরিচালক অধ্যাপক ডা: রোবেদ আমিন কিছু সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। তিনি করোনা পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, স্থিতিশীল থাকলেও এখনো সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। একই সাথে মেনে চলতে হবে করোনাবিষয়ক সব স্বাস্থ্যবিধি। এখনই মাস্ক খুলে ফেলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গতকাল রোববার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা: রোবেদ আমিন অনলাইন বুলেটিনে এভাবেই সতর্ক করছিলেন।
তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্থিতিশীল। গত সাত দিনের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ৪ শতাংশের মতো শনাক্তের হার ছিল; কিন্তু গত ৫ মার্চ শনাক্তের হার নেমে আসে ২.১১ শতাংশে। চলতি বছর এই প্রথম করোনা শনাক্ত ২.১১ শতাংশে নেমেছে। এভাবে সংক্রমণ কমতে থাকলে অচিরেই করোনা শনাক্ত ২ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, করোনা শনাক্তের হার কমে গেলেও আরো অনেকদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক খুলে ফেলার মতো এখনি কিছু ঘটেনি। এখনো মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনার প্রভাব এখনো কমেনি তবে শনাক্ত এবং নমুনা পরীক্ষা কমেছে।
অধ্যাপক রোবেদ আমীন বুলেটিনে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, করোনা শনাক্ত কমে যাচ্ছে বলে এখন অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না, মাস্ক খুলে চলাফেরা করছেন। কিন্তু আমাদের খেয়াল করতে হবে, গত ৫ মার্চও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অধ্যাপক রোবেদ আমীন বলেন, মনে রাখতে হবে করোনাভাইরাসের রূপান্তর (মিউটেশন) হচ্ছে। আবারো নতুন করে কোনো ভ্যারিয়েন্ট চলে আসার শঙ্কাতো থেকেই যাচ্ছে। ওমিক্রনের যেসব নতুন নতুন উপধরন বিএ.২ বা বিএ.১ শক্তি সঞ্চয় করে বিপদ ঘটিয়ে ফেলতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের যেসব রিস্কি গ্রুপ আছে যেমন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, ক্যান্সারের রোগী তাদের ক্ষেত্রে ওমিক্রন এখনো বিপদের কারণ হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে যে আটজনের মৃত্যু হয়েছে এদের মধ্যে পুরুষ ছিলেন ছয়জন এবং নারী দুইজন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৮ হাজার ৫৬৬ জন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে এবং আর নারীর মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৫১৯ জন। করোনা মৃত আটজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন চারজন। বাকি চারজনের মধ্যে চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে মারা গেছেন দুইজন করে। অধিদফতর জানাচ্ছে, মৃত আটজনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন সাতজন আর বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন একজন।