সোনার বাংলা । মোহীত উল আলম
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের আগে আগে আওয়ামী লীগের একটি সাংগঠনিক সভায় “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গানটি জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত করেন। গানটিতে শ্যামল বাংলার অপরূপতার সঙ্গে মায়ের মুখচ্ছবির তুলনা করে রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতি এবং মানুষের মধ্যে একে অপরকে লীন করে দেন। কিন্তু গানটির অপূর্ব আবেশের সঙ্গে এর রচনাকালীন উৎসের মধ্যে ব্যাপক তফাৎ আছে। গানটি খুবই একটি সুন্দর গান, এবং আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে গীত হয় বলে এটি বস্তুতই সোনার চেয়েও খাঁটি একটি গান। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ গানটি লিখেছিলেন অতীব দু:খ থেকে। ধুরন্ধর ইংরেজ গভর্নর লর্ড কার্জন লক্ষ করলেন যে ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে বাংলা বা বঙ্গদেশ ছিল রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে অস্থির, এবং নানা ইংরেজ-দ্রোহজনিত চেতনার উৎস। তিনি শাসনের সুবিধার জন্য বাংলাকে ভাগ করলেন ১৯০৫ সালে পূর্ববঙ্গ এবং পশ্চিমবঙ্গ এই দুই প্রদেশে। ইতিহাসে কার্জনের কাজটি ‘বঙ্গভঙ্গ’ হিসেবে পরিচিত। এতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অনেক সংস্কৃতি ও রাজনীতি মনষ্ক লোক খুব বিচলিত হয়ে পড়েন। তাঁর দু:খ জানানোর জন্য রবীন্দ্রনাথ ১৯০৬ সালে, অর্থাৎ বঙ্গভঙ্গের পরের বছর “আমার সোনার বাংলা” গানটি রচনা করেন। গানটির মধ্যে যে কাতরতা আছে, মায়ের “বদন মলিন” হবার কথা আছে, এই নস্টালজিক সুরটাই হচ্ছে গানটির সবচেয়ে বড় আবেদন। তবে বিচিত্র রসায়নের প্রক্রিয়ায় গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতে পরিণত হলে, এটির মধ্যে আর কোন নিরাশা এবং হতাশার কথা থাকলো না, থাকলো কেবল এক অনুপম আশাবাদ যে বাংলাদেশ একদিন সোনার বাংলায় রূপ লাভ করবে।
আমার আজকের আলোচনাটির সূত্রপাত হচ্ছে কয়েকদিন আগে, ২৬ মে, ২০২২-এ একটি পুস্তক-মোড়ক উন্মোচনী অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকা থেকে। চবির মাননীয়া উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের দু’টো বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের অনুষ্ঠান করল “তৃতীয় চোখ” গোষ্ঠীর অধিকারক আলী প্রয়াস। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকলেন বাংলা একাডেমির সম্মানীত মহাপরিচালক জাতি সত্ত্বার কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা, আর সভাপতিত্ব করলেন চবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ, আর আরো বক্তৃতা করলেন কবি ও নাট্যজন অভীক ওসমান।
শিরীণ আখতার তাঁর “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক বইটির এক জায়গায় উল্লেখ করলেন যে বঙ্গবন্ধুর দু’টো লক্ষ্য ছিল। একটি হলো, বাংলাদেশ স্বাধীন করা, আরেকটি হলো বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করা।
এই বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করার বিষয়ে কিছু কথা মনের মধ্যে গিজগিজ করে উঠছে বিধায় সে কথাগুলি ফেবুর বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য আলোচনার সূত্রপাত করছি। দেখি, কীভাবে এগোয় চিন্তাটি। রবীন্দ্রনাথের দর্শনে বঙ্গদেশকে সোনার মতো মনে হয়েছিল একটি কাব্যিক অভিব্যক্তি থেকে। যার উৎস ছিল “নমোনমো নম, সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি! / গঙ্গার তীর, স্নিগ্ধ সমীর জীবন জুড়ালে তুমি!” কিন্তু নিছক কাব্যিক অভিব্যক্তি বললে ভুল হবে, কারণ রবীন্দ্রনাথের গভীরতম উচ্চারণের মধ্যেও প্রকৃতি ছাড়িয়ে একটি বিষয়সংলগ্ন দ্যোতনা আছে। রবীন্দ্রনাথের পক্ষে জমিদারী পরিচালনা করা, কর আদায় সম্পর্কে সম্যক ধারণা তাঁর কাব্যচক্ষুকে অর্থনৈতিক চেতনা দিয়ে খানিকটা পরিপুষ্ট করার কথা। সে জন্য অস্বাভাবিক হলেও মার্ক্সীয় পুঁজিবাদী অর্থনীতির সমালোচনা তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাই তাঁর পক্ষে এই “দুই বিঘে জমি” কবিতাটিতে লেখা সম্ভব হয়েছিল, “এই জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি, / রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।”
বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশ স্বাধীন করার ব্রতে নামলেন, তখন তাঁর রাজনৈতিক দর্শনে মূলত ছিল “এই কাঙালের ধন চুরি” থেকে প্রপীড়িত উচ্ছন্ন দরীদ্র বাঙালীকে উদ্ধার করা। রবীন্দ্রনাথের মানবতা দর্শনের ব্যাপ্তিকে খানিকটা রাজনৈতিক চালুনির মধ্যে ফেলে বঙ্গবন্ধু একটি রাজনৈতিক দর্শন দাঁড় করালেন যার প্রাথমিক লক্ষ্যে ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক শাসন ও শোষণ থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে মুক্ত করা, কিন্তু দ্বিতীয়ত এবং গভীরতর লক্ষ্য ছিল গরীব মানুষকে মানুষের মতো বাঁচার জন্য রাস্তা খুলে দেওয়া।
তাই রবীন্দ্রনাথের ‘সোনার বাংলা’ বলতে যে আপাত শ্যামলিমা বাংলার অপরূপতা ফুটে ওঠে বলে পূর্বে বলেছি, সেখানে সোনা অর্থ হচ্ছে একটি অপার্থিব স্বর্গীয় একটি অনুধাবণ যার নিরেট কোন রূপ নেই, নেই কোন সাকার প্রকাশ। কিন্তু যে মুহূর্তে রবীন্দ্রনাথের গানটি বঙ্গবন্ধু একটি রাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত হিসেবে বেছে নিলেন, তখন সেখানে ‘সোনা’ শব্দটির একটি নিশ্চিত পর্যায়ন্তর হলো। অর্থাৎ আগে যে সোনা বলতে আমরা প্রকৃতিকে বুঝেছি—গগণে গরজে মেঘ ঘন বর্ষা বুঝেছি, বুঝেছি আম্র মুকুল, জ্যোৎস্না রাত ইত্যাদি, সেই ‘সোনা’ জাতীয় সংগীতে রূপ নেওয়াতে এর অর্থ বদলে গিয়ে একটি জাতির অবশ্যই অর্থনৈতিক আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে রূপান্তরিত হলো। সোনা একটি স্পর্শযোগ্য, অধিকারযোগ্য, সাকার বস্তুতে পরিণত হলো। অর্থাৎ, সোনা বলতে এখন আর আম্র বাগানের সৌন্দর্য বোঝাচ্ছে না, সোনা বলতে এখন বোঝাচ্ছে সে আম্রবাগান থেকে আম পেড়ে বাণিজ্যিক ভাবে এর সৎকার করা।
তাই বলতে চাইছি, রবীন্দ্রনাথের “সোনার বাংলা” থেকে বঙ্গবন্ধুর “সোনার বাংলা”য় পর্যায়ন্তরের যাত্রাটি মূলত অর্থনৈতিক। এবং অর্থনীতির মূলে সোনা বা স্বর্ণ হচ্ছে মূল প্রণোদনা। কাগজের টাকার যে বারবণিতা সম সচল চলাচল সেটি সম্ভব হতো না যদি অক্ষয় সোনার মজুত রাজভান্ডারে জমা না থাকতো। তা হলে শিরীণ আখতার বঙ্গবন্ধুর “সোনার বাংলা”র যে স্বপ্নের কথা বলেছেন, সেটি আপাতদৃষ্টিতে রবীন্দ্রনাথের ন্যায় মানবতার মুক্তির প্রতীক মনে হলেও বস্তুত সেটি হচ্ছে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির গল্প।
স্বর্ণ (বা ঐ অর্থে টাকা) একটি রাষ্ট্রীয় সমাজে দুষ্টগ্রহের মতো হলেও এটা ছাড়া মানবসমাজ চলে না। তাই স্বর্ণের একটি স্বীকৃত ব্যবহার আছে, যেটি এ্যারিস্টোটল তাঁর “পলিটিক্স” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এভাবে যে যে স্বর্ণ দিয়ে জিনিষপত্র আদান-প্রদান করা যাবে, মানুষ তার অভাব বা চাহিদা মেটানোর জন্য উপযোগ্যতা লাভ করবে, সেটি হলো স্বর্ণের বা টাকার স্বীকৃত সামাজিক ব্যবহার। আমাদের নবী রসুলে করীম (স: ) নিজেই প্রথম জীবনে একজন বণিক ছিলেন, তাই তিনিও এই মতটি স্বীকার করে গেছেন যে দ্রব্যের আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে টাকার ব্যবহার ধার্য করা হবে।
কিন্তু টাকা বা স্বর্ণ নিজেই একটি সমস্যা তৈরি করে। সেটি হলো, সে দ্রব্যের উপযোগিতার মাধ্যম না হয়ে নিজেই একটি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। অর্থাৎ, এ্যারিস্টোটল কথিত টাকাকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করে টাকাকেই উপজীব্য হিসেবে যখন ব্যবহার শুরু হয় তখন টাকার আর ব্যক্তিমাত্রিক মানুষের চেহারাটা থাকে না, টাকা অ-ব্যক্তিগত বা ইমপারসন্যাল একটি উদ্দিষ্ট বস্তুতে পরিণত হয়। টাকার এই দ্বিতীয়মাত্রিক সঞ্চালনকে কার্ল মার্কস বাণিজ্যিক সঞ্চালন হিসেবে সমালোচনা করেছিলেন। অর্থাৎ, টাকার যে সামাজিক সঞ্চালনের প্রেক্ষাপটে এ্যারিস্টোটল টাকাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন, সেটি যখন সামাজিক ব্যবহার থেকে সরে গিয়ে মানুষের উপযোগিতা তৈরি করার বদলে মানুষকে টাকার দিকে ছোটাতে বাধ্য করে তখন এ্যারিস্টোটল এর তীব্র সমালোচনা করলেন। টাকার এই অপচয়িত ব্যবহারের সবচেয়ে সক্ষম অস্ত্র হচ্ছে সুদ। এ্যারিস্টোটল বললেন, সুদ সর্বোত পরিত্যাজ্য, কারণ এর ফলে টাকা থেকে টাকার বাচ্চা তৈরি হয়, ফলে টাকার মানবিক উপযোগিতা আর থাকে না, সেটা বিনিময়ের মাধ্যম না হয়ে নিজেই একটি গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়। অর্থাৎ টাকা অমনুষ্যত্ব তৈরি করে। এ্যারিস্টোটল এই কথা বলার প্রায় পাঁচশ বছর পরে খ্রিষ্ট ধর্ম জন্ম লাভ করলে সেখানেও ওল্ড টেস্টামেন্টের কতিপয় গ্রন্থে (ডিউট্রোনমি, লুক, এভিকটিটাস ইত্যাদি) গরীবদের ওপর থেকে সুদ খাওয়া নিষেধ করা হয়। আবার পবিত্র কোরান শরীফে সুরা বকর, সুরা ইমরান ইত্যাদি সুরায় সুদ খাওয়া বা ‘রিবা’ নেওয়া সম্পূর্ণত নিষিদ্ধ করা হয়।
কিন্তু প্রারম্ভিক আধুনিক যুগের শুরু হলে ইতালী সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যখন ব্যাংক নামক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি যাত্রা শুরু করে তখন টাকা টাকা আনার অর্থাৎ টাকা নিজেই টাকার বাচ্চা জন্ম দেবার মতো অবস্থা তৈরি করে, যার প্রধান মাধ্যম হয়ে পড়ে সুদ। সুদের অর্থ টাকা থেকে টাকার বৃদ্ধি। পুঁজিবাদী অর্থনীতির সমালোচনাকালে ১৮৪৪ সালে তাঁর “ইকোনোমিক্স-ফিলোজফিক্যাল-ম্যানাসক্রিপ্টে” চমৎকারভাবে বাণিজ্যিক সঞ্চালনে ব্যয়িত টাকার ব্যাখ্যা দিয়ে বললেন “টাকা হলো সর্বোচ্চ বিচ্ছিন্নকৃত একটি পারঙ্গমতা –“The most alienated ability”—যার অর্থ দাঁড়ায় যে টাকা দিয়ে সব কিছু সম্ভব হবার যে উগ্র মানসিকতা তৈরি করে দেয় পুঁজিবাদী সমাজ সেটিই মানবতার উন্নয়নে সবচেয়ে বড় বাধা। তিনি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে: আমি কুৎসিত হতে পারি। কিন্তু আমার টাকা থাকলে ঐ টাকা দিয়ে আমি সুন্দরীতম রমণীকে বিয়ে করতে পারি, তখন আমি আর কুৎসিত থাকব না। বিচ্ছিন্নকরণ সক্ষমতা বলতে এই বোঝানো হচ্ছে যে তাঁর শারীরিক সৌন্দর্যের খামতিকে তিনি টাকা দিয়ে পুষিয়ে নিয়েছেন। অর্থাৎ টাকা এতটা ইম্পার্সন্যালি সক্ষমতা তৈরি করে দেয় যে একজন লোক কোনরকম ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট না থেকেও টাকা দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারে। এটা যতক্ষণ সদর্থক অর্থে ব্যবহৃত হয় ততক্ষণ ভালো, কিন্তু বিপদটা হচ্ছে এইটা সবসময় নেতিবাচক ব্যবহারের দিকে ধাবিত হয়।
এ্যারিস্টোটল থেকে শুরু করে মার্কস পর্যন্ত আলোচনার জের টেনে বোঝা গেল যে বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা বলতে অর্থের বা টাকার যে সামাজিক সক্ষমতার কথা দার্শনিকভাবে চিন্তা করেছিলেন, যে কারণে তিনি গরীব মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কথা ভেবেছিলেন, সেই সোনার বাংলার অর্থে টাকার বিনিয়োগ বাংলাদেশে বর্তমানে হচ্ছে কিনা এটি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যেমন সম্প্রতি সোয়াবিন তেল এবং চালের মজুদ করতে দেখা গেছে কিছু কর্পরেট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে যারা মার্কসের তত্ত্বানুযায়ী টাকার বিচ্ছিন্নকৃত সক্ষমতার দ্বারা শুধু টাকার জোরে যারা কোনদিন তেলের ব্যবসা করেনি, বা চালের ব্যবসা করেনি তারা তেল বা চাল গুদাম জাত করছে। টাকার এই বিকৃত ব্যবহার বঙ্গবন্ধু কথিত সোনার বাংলায় সোনার যে মানবিক চেহারা তার সঙ্গে যায় না। কারণ মজুত করণের ফলে সরাসরি শিকার হয়ে যাচ্ছে দরীদ্র জনগন যাদের ভাগ্যোন্নয়ণেই হলো, শুরুতে বলেছি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সর্ববিধ কারণ।
এবং টাকার বিচ্ছিন্নকরণ সক্ষমতার আরেকটি দৃষ্টান্ত যে সীতাকুন্ডের ইনফার্নোর ঘটনায় ফুটে ওঠেনি তা নয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো যদি সত্য হয়, তা হলে দেখা যাচ্ছে কোন রকমের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে কেমিক্যালসের মতো বিষ্ফোরক দ্রব্যাদি হাজার হাজার লিটার সেই কন্টেইনার ডিপোতে আড্ডা দিচ্ছিলো। এটাও টাকার এক ধরনের সক্ষমতা, কিন্তু এই সক্ষমতা কীরকম বিপদ ডেকে আনলো সেটি চোখের সামনে দেখলাম।
টাকা দিয়ে সব কিছু হয়। যেমন ধরুন একজন অভিনেত্রী, যিনি ক্রিকেটের ‘ক্রি’ও জানেন না তিনি একটি ক্রিকেট টিম কিনে ফেলতে পারেন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক রেগুলেটরি সংস্থাগুলোর দায়িত্ব সর্বাগ্রে। যেমন ধরুন, সাধারণ পণ্যবাহী কন্টেইনারের সঙ্গে বিস্ফোরক কেমিক্যালসের কন্টেইনার কীভাবে জমাকৃত হতে পারে এই প্রশ্ন জাতি করবেই! সরকারের কোন কোন সংস্থাগুলির শৈথিল্যের কারণে এভাবে একটা বিরাট বিপদের ফাঁদে পড়ে গেল দেশটা! যে কোন সমস্যা নতুন সুযোগ তৈরি করে দেয়। সরকারের পক্ষে এখন সম্ভব হচ্ছে এই ধরনের অনৈতিক, অমানবিক টাকার সক্ষমতা অর্জনকারীদেরকে স্তব্ধ করে দেয়া এবং এই ধরনের বিপথগামী অর্থনীতির পথগুলি সম্পূর্ণরূপে রুদ্ধ করে দেওয়া। কাজটি কঠিন সরকারের পক্ষে, কিন্তু অসম্ভব নয়। বস্তুত যতদিন পর্যন্ত সমস্তরকম বিপর্যয়ের শিকার গরীব মানুষেরা হতে থাকবে ততদিন পর্যন্ত প্রকৃতপক্ষে সোনার বাংলা তৈরি করা কঠিন হবে।
=শেষ=
৬ জুন ২০২২