প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রাখবে ডিজিটাল মাধ্যম
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ‘হেলথ বন্ধু’ স্বাস্থ্য সেবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধনীতে বক্তারা । জনবল সঙ্কট, অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাসহ নানা কারণে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা এখনও অপ্রতুল। তবে, এই অপ্রতুলতা কাটিয়ে উঠতে বড় ভূমিকা রাখবে ডিজিটালাইজড মাধ্যমগুলো। গত শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশনের কনভেনশন হলে ‘হেলথ বন্ধু’ স্বাস্থ্য সেবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এমনটাই প্রত্যাশা করেন। বক্তারা বলেন, দেশের স্বাস্থ্য সেবা অনেক দূর এগিয়ে গেলেও প্রান্তিক পর্যায়ে এখনও যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সেক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যমগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে সরকারের ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো, তবে সেগুলো প্রাইভেটের চেয়ে ব্যবস্থাপনায় কিছুটা পিছিয়ে।
বর্তমানে অনেক হাসপাতাল ডিজিটাল মাধ্যমে চলে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, হেলথ বন্ধু যেটা করতে চাচ্ছে, এটি অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। এখান থেকে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে সেটিও যেন দেখা হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও সেরকম হতে হবে। তবে, হঠাৎ অসুস্থ হলে রোগীকে দ্রুত সময়ে সরকারি কোথায় নেয়া যেতে পারে, সেটি যেন এই মাধ্যমে সুবিধা পাওয়া যায়।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের ধারণা হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। কিন্তু সেটি ভুল। করোনায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমাদের সক্ষমতা জানান দেয়া হয়েছে, একদিনে এক কোটি ২০ লাখ টিকা দিয়েছে সরকার। অনেক দেশ টাকা দিয়েও টিকা পাচ্ছে না। কিন্তু বাংলাদেশে ৫ বছরের শিশুদেরও টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবায় আমরা নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছি। করোনার সময়ে টেলিমেডিসিন সেবা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা হারে হারে টের পেয়েছি আমরা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা এখনো পুরোপুরি পূরণ হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনও মানুষের অসন্তুষ্টি রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় বিড়ম্বনা সেটি শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর বহু দেশে আছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে পৌঁছাচ্ছে না। তাই ডিজিটাল এই সিস্টেমে যদি তাদের মাঝে সেবা পৌঁছানো যায়, তাহলেই সার্থক। এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে চিকিৎসক, নার্স, সেবা পাওয়া নিয়ে অনেক অভিযোগ থাকলেও উন্নতি যে হয়নি তা কিন্তু না। এগিয়েছে বলেই গড় আয়ু বেড়েছে, মা-শিশু মৃত্যুর হার কমেছে।
স্বাস্থ্যের ভালো কাজগুলোর তুলনায় দুই-একটি খারাপ কাজের প্রচার বেশি হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বড় বড় দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারতে লাখ লাখ মানুষ করোনায় মারা গেছে। সেসব দেশে কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত। সেখানে আমাদের অনেক কম। পৃথিবীর ১২১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ পঞ্চম। আরও এগিয়ে যেতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অনেক অপ্রচার হয়। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারে ভালো না হলেও খারাপ নয় বলেও জানান তিনি।