জায়গার বিরোধ নিয়ে প্রতিবেশীকে রাতের অন্ধকারে হামলার চেষ্টা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ
বান্দরবান প্রতিনিধি : জায়গার বিরোধ নিয়ে প্রতিবেশীকে রাতের অন্ধকারে হামলার চেষ্টা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে ব্রিগেড এলাকার বাসিন্দা সুমন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ।
দীর্ঘদিন ধরে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে ব্রিগেড এলাকার এজাহার মিয়া কলোনির বাসিন্দা সুধীর চক্রবর্তীর ছেলে সুমন চক্রবর্তীর সাথে প্রতিবেশী রুবেল দাসের।
আর সেই সূত্র ধরে সুমন চক্রবর্তী ও তার পরিবারের সদস্য মিলে রাতের অন্ধকারে ৬ – ৭ জন মুখোশধারী অজ্ঞাত সন্ত্রাসী নিয়ে তার বাসার সামনে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি, অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে এবং ওই ঘরে বসবাস করলে তাকে মেরে পুঁতে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে যায় সুমন চক্রবর্তীর ভাড়াটে অজ্ঞাত মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা।
৫ অক্টোবর বুধবার রাতের অন্ধকারে বান্দরবান সদরস্থ ব্রীগেডের সামনে এজাহার মিয়ার কলোনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে সম্পূর্ণ এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি পুলিশের উদ্ধতন কর্মকর্তা সহ সকল গোয়েন্দা সংস্থার উদ্ধাতন মহলে জানানো হয়েছে।
এমতা অবস্থায় ৬ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রুবেল দাস নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগও জিডি করেন সুমন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে রুবেল দাস জানান, আমি এই জায়গা কিনেছি যার সম্পূর্ণ কাগজপত্র আমার কাছে আছে। প্রয়োজনে আমি মহামান্য আদালত ও আইনের কাছে সম্পূর্ণ কাগজ পত্র প্রদান করব। কিন্তু প্রতিবেশী সুমন চক্রবর্তী ও তার পরিবার জোরপূর্বক আমার জায়গা দখল করার চেষ্টা করছে এবং বর্তমানে রাতের অন্ধকারে আমাকে হুমকি প্রদান করেছে। যা একমাত্র এই শান্তি-সম্প্রীতির বান্দরবানে দালাল সন্ত্রাসীরা করতে পারে। সে এই কাজের মাধ্যমে নিজেকে সে শ্রেণীর মানুষ হিসেবে প্রমাণ দিয়েছে। এছাও আমার জায়গায় আমি ঘরের কাজ করার সময় নানা ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।
এই জায়গার জন্য সুমন চক্রবর্তী কে আদালতের নির্দেশে কোর্টে বারবার গিয়ে জবাবদিহি করতে হয়েছে এবং বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঁইয়া তদন্ত শেষে তার রিপোর্ট প্রদান করলে মহামান্য বিজ্ঞ আদালত ৩/১০/২২ তারিখের ৬৯/ ২১ মামলার এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করে সকল সাক্ষ্য-প্রমাণের ও তদন্ত শেষে রুবেল দাস এর কাগজপত্র সত্য বলে উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে সুমন চক্রবর্তী তার মামলা চালাতে পারছে না বলে স্বীকার করে মামলা প্রত্যাহার করেন।
উল্লেখ্য যে সুমন চক্রবর্তী, এর আগেও বান্দরবানের থানছি উপজেলায় বলিপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের পাশে হিন্দুপাড়ায় ভুয়া কাগজ দিয়ে ৫ একর জমি সন্ত্রাসী নিয়ে দখল করার চেষ্টা করলে সম্পূর্ণ পাড়াবাসী এর প্রতিবাদ করে তাকিয়ে পিটুনি দিলে সে সেখান থেকে পালিয়ে আসে বলে অভিযোগ করেন ঐই এলাকার সকল এলাকাবাসী।
তাছাড়া সে নিজেকে বিআরটিসি অফিসে চাকরি করে মিথ্যা ভুয়া পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন মোটা অংকের টাকা নিয়ে অবৈধভাবে কাগজপত্র ও লাইসেন্স তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। লোকজন পরবর্তীতে জানতে পারে সে মূলত একজন মিথ্যাবাদী প্রতারক দালাল সে কোন অফিসে চাকরি করে না।
এই বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ে বিআরটিএ অফিসে যোগাযোগ করলে তারা জানায় এ নামে কোন ব্যক্তি চাকরি করে না। দালাল সুমন চক্রবর্তী যদি বিআরটিএ অফিসের নাম বিক্রি করে মিথ্যা কথা বলে অভিযোগ পাওয়ার যায় আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব ।
ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে সুমন চক্রবর্তীর মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তার নাম্বারটি বার বার বন্ধ পাওয়া যায়।
বর্তমানে সুমন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আনিত সকল তথ্য প্রমানের ভিক্তিতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মানুষকে অবৈধভাবে লাইসেন্স করে দেওয়ার অভিযোগ সাপেক্ষে বাংলাদেশ দুনীতি কমিশন দুদক সহ বান্দরবানের সকল গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সকল ডকুমেন্ট প্রেরনের প্রক্রিয়া প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান সদর থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক চিন্ময়ের যোগাযোগ করলে তিনি জানান, দুই পক্ষই আমার সাথে থানায় এসে যোগাযোগ করেছে এবং বাদী এবং বিবাদী দুইপক্ষ অভিযোগ দাখিল করেছে। আমরা ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করছি সাথে তাদের জায়গার সকল কাগজপত্র প্রদান করতে বলেছি। যদি এটি এখানে সমাধান না হয় তাহলে তা কোর্টে প্রেরণ করা হবে।