এক সড়কেই বাণিজ্যের নতুন দ্বার
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শুরু হতে যাচ্ছে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেন সড়কের কাজ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন করেছেন। মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে বাড়বে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য। বিকাশ ঘটবে পর্যটন সম্ভাবনার- এমনটি বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেট বিভাগের তিন দিকে ভারত সীমান্ত। সিলেটের বিভিন্ন স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হয়ে থাকে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে। সিলেটের পার্শ্ববর্তী ভারতের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা থাকলেও অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে তা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। সূত্র জানায়, দক্ষিণ এশিয়া জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বৈদেশিক ও দেশীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধিকরণ; প্রকল্প এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবন-জীবিকার মান উন্নয়ন; অত্র অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন; এবং নিরাপদ, টেকসই যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যেই এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পীর হবিবুর রহমান চত্বর থেকে তামাবিল পর্যন্ত ৫৬.১৬ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। সড়কটি সংযুক্ত হবে সিলেট-ঢাকা ৬ লেন মহাসড়কে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা।
প্রকল্পের আওতায় ৫টি সেতু, ১১টি ফুটওভারব্রিজ, সাতটি বাসস্ট্যান্ড, ছয়টি ইউলুপ ও একটি টোলপ্লাজা নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে মহাসড়কটির জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। গত শনিবার মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। ২০২৫ সালের জুন মাসে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। জানা গেছে, সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। রপ্তানিও হয় বিভিন্ন পণ্য।
মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে স্বল্প সময়ে পণ্য পরিবহন সম্ভব হবে। বাড়বে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যও। এ ছাড়া চার লেনের মহাসড়কটি সিলেটের পর্যটন ব্যবসায়ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটনকেন্দ্রই সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের আশপাশে অবস্থিত। ফলে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে জাফলং, লালাখাল, শ্রীপুর ও পান্তুমাইসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে যাতায়াত আরও সহজ হবে। এতে সিলেটে বাড়বে পর্যটকদের আগমন।
সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ সভাপতি আবদুল জব্বার জলিল জানান, ব্যবসায়-বাণিজ্যের দিক থেকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কয়লা, পাথর এবং বিভিন্ন ধরনের ফল ও মসলাবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে ভারতে। পণ্যবাহী এসব ট্রাক সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করে থাকে। মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে আরও সহজে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ব্যবসায়ীদেরও আগ্রহ বাড়বে এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে ব্যবসা-বাণিজ্যে।