গৌরীপুর ধান চাষের জমির নাম সুরিয়া!

0

মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর প্রতিনিধি : নদীমাতৃক এই দেশের সর্বত্রই জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য নদ-নদী। ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী নদী সুরিয়া। এক সময় সুরিয়া নদী সারা বছর পানিতে টইটম্বুর ছিলো। নদীর বুকে পাল তুলে চলত ছোট বড় শত শত নৌকা। দুই পাড়ের কৃষকরা হাজার হাজার একর ফসলি জমিতে সেচ দিতেন এই নদী থেকে। বর্তমানে নাব্যতা হারানো, দখল ও দূষণে অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে রয়েছে নদীটি। স্নিগ্ধ, স্রোতস্বিনী সুরিয়ার সেই জৌলুস আর নেই। নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় নদীর বুকে এখন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হচ্ছে।

নদীর দুই পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময় সুরিয়া নদীতে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ছিল, নদীতে থাকতো প্রচুর পরিমান পানি। তা দিয়ে চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ করা যেত। আর বোরো ফসলের মাঠে সেচ দেওয়ার কোনো চিন্তা করতে হতো না। এখন আর জমিতে সেচ দেয়ার মতো পানি নেই। দীর্ঘদিন ধরে খনন না হওয়ায় নদীর তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দুই তীরে যাদের জমি রয়েছে তারাই নদী দখলে নিচ্ছে। যাদের জমি নেই তারাও ধান লাগানোর ছলনায় নদী দখল করছে।

গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর ও মাওহা ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দারা জানান নদীর যেটুকু অস্তিত্ব রয়েছে তা এখন দখল ও দূষণের কবলে। পুরো নদীটি ধানের জমিতে পরিণত হয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না থাকায় সুরিয়ার এই অবস্থা চলছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সুরিয়া নদীটি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নেত্রকোনা জেলার হাওড় অঞ্চলে গিয়ে মিশেছে। কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি নদীর কুঁড়ের (গভীর) অংশ শুকিয়ে মাছ ধরে ও বাকী অংশে ধান চাষ করেছে। এই ব্যাপারে স্থানীয় সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন নীরব থাকায় নদীর উপকারিতা থেকে বি ত হচ্ছে মানুষ। আর সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
এ বিষয়ে মাওহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ফারুক জানান, ছোট বেলায় দেখছি নদীটি অনেক গভীর ছিল। খনন না করা হলে কয়েক বছর পর হয়ত আগামী প্রজন্ম বিশ্বাসই করতে চাইবে না সুরিয়া নামে একটি নদী ছিল। নদীটি পুনঃখনন না করায় বর্তমানে ধানসহ বিভিন্ন ধরণের চাষ করা হচ্ছে। নদীটি পূনঃখননের দাবী জানান তিনি।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ জানিয়েয়েছ এই সুরিয়া নদীর বিষয়ে আসছে মাসিক সভায় চেয়ারম্যানদের সাথে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.