আল এনায়েত করিম রনি,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রাম জেলার দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ব্যাংকগুলো থেকে কৃষি ঋণ কার্যক্রমে নেই কোন গতি। টার্গেট অর্জনকে চ্যালেঞ্চ মনে করায় ব্যাংকগুলো ঋণ প্রদানে অনিহা প্রকাশ করছে। ফলে প্রতিশ্রুত কোটি কোটি টাকা ব্যাংকে অলস পরে থাকলেও কৃষকের কোন কাজে আসছে না।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে জেলা কৃষিঋণ কমিটির মাসিক সভায় এই তথ্য উঠে এসেছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জিলুফা সুলতানা। এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক নকুল কুমার, কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংকের সহকারি মহাব্যবস্থাপক বায়েজিদ মো. আশরাফুজ্জামান, ন্যাশনাল ব্যাংকের ম্যানেজার ফুলজার হোসেন, রুপালী ব্যাংকের ম্যানেজার মর্তুজা সাইফুল্লাহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলায় কর্মরত ১৮টি ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
লীড অগ্রণী ব্যাংকের সহকারি মহাব্যবস্থাপক বায়েজিদ মো. আশরাফুজ্জামান জানান, জেলায় কৃষি ঋণের বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৫২ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। সেখানে বিতরণ হয়েছে ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বিতরণের হার ১৯ভাগ। এই সাইকেলে একেবারেই ঋণ বিতরণ করেনি কর্মসংস্থান ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও এনসিসি ব্যাংক।
এছাড়াও চাষীদের জন্য মশলা জাতীয় পণ্য উৎপাদন করতে ব্যাংকগুলোতে ১৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ১লক্ষ টাকার ঋণ বিতরণ করলেও বাকী ১৭টি ব্যাংক তা করেনি। লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭ভাগ ঋণ প্রদান করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে পাওয়া গেছে ২৭লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। বিতরণ হয়েছে ২৬লক্ষ ৫ হাজার টাকা।
তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত ১৮টি ব্যাংকে ২হাজার ৮৬৭টি সার্টিফিকেট মামলা চলমান রয়েছে। এতে বকেয়া রয়েছে ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। অপরদিকে অর্থনৈতিক মামলা করা হয়েছে ৭৩টি। এতে ৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে।
কৃষি ঋণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সভার সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জিলুফা সুলতানা জানান, ঋণ পাওয়ার বিষয়টি কৃষকদের জানাতে জেলার ৭৩টি ইউনিয়ন, তহশীল অফিস ও হাটবাজারগুলোতে প্রচারণামূলক পোস্টার প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও সকল ব্যাংকগুলোকে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কৃষিঋণ বিতরণে আরো গতিশীল হতে হবে।