রিজাউল করিম সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় ফলন বাড়াতে সমলয় পদ্ধতিতে যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে বোরো ধান রোপন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। এর আগে ভালো মানের চারা উৎপাদনের জন্য উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্রে-তে বীজ বপন করছিলেন কৃষকরা। নতুন এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানালেন জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক।
জনসংখা বৃদ্ধির সাথে সাথে কমছে কৃষি জমি। তাই স্বল্প জমিতে অধিক ধান উৎপাদন করে মানুষের খাদ্য চাহিদা পুরণের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সাতক্ষীরায় উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষাবাদ শুরু হয়েছে। সরকারি কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙা ইউনিয়নের মাধবকাটি ব্লকের বলাডাঙা গ্রামে স্থানীয় ৫৫ জন কৃষক মাটিভর্তি ট্রে-তে বপন করছে তেঁজগোল্ড হাইব্রিড জাতের ধানবীজ। সমলয় চাষাবাদের নতুন মাত্রায় মেশিন দিয়ে ৫০ একর জমিতে রোবো ধানের চারা রোপন করা হয়। এবার জেলার চারটি উপজেলায় ৩০০ একর জমিতে এ জাতের ধান রোপন করা হচ্ছে। ট্রে-তে বীজ বপনের ১৪০ থেকে ১৪৫ দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলা যায়। বিঘা প্রতি ২০ বস্তা বা ৩০ মণ ধান উৎপাদন হবে। একইভাবে এ চাষে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে কৃষকদের ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ সরকারি অনুদান দেওয়া হবে।
কৃষির সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উচ্চ ফলনশীল একই জাত ব্যবহার, ট্রে-তে বীজ বপন, কম বয়সের চারা রোপন, চারা রোপনে রাইচ ট্রন্সপ্লান্টার ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার, আইল ফসল, ধান কর্তনে কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো, উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকটের সমাধান সম্ভব হবে এই সমলয় চাষাবাদে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাইচ ট্রন্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ৪৫ থেকে ৬০ মিনিটে এক বিঘা জমিতে চারা রোপন করা যাবে। এ বিষয়ে কৃষকদের কারিগরি সুবিধা ও সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।কৃষকরা বলেন, প্রথম চাষ করছি। ট্রেতে ধান ফেলে মেশিনে রোপন করা হয়। বিঘা প্রতি ২০ বস্তা ধান হবে।এক বিঘা জমি রোপন করতে ৪/৫ জন শ্রমিক লাগে। কিন্তু ম্যশিনে সময় লাগে এক ঘণ্টা। ধানের বীজতলা তৈরি থেকে কাটা পর্যন্ত ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন সময় লাগে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে সমালয় পদ্ধতিতে সদর উপজেলার মাধবকটি বলাডাঙায় ৫০ একর জমিতে হাইব্রীড তেঁজগোল্ড বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে। রোপন পদ্ধতি দেখে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়েছে।
সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা কর্মসুচির আওতায় এবার ৫০ একর হাইব্রীড জাতের বোরো ধান রোপন করা হচ্ছে। ৪ হাজার ৫০০ ট্রে-তে হাইব্রীড ধানের বীজতলা লাগানো হযেছে। সার ও কীটনাশকসহ কর্তণ সরকারি উদ্যোগে করা হবে। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, এবার সাতক্ষীরা জেলায় ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরা ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চারটি উপজেলার ৬টি স্থানে ৩০০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে হাইব্রীড ধান চাষ করা হচ্ছে। চাষীদের অর্থের অপচয় কম ও সময় সাশ্রয়। রাইস প্লান্টার এর মাধ্যমে বপন, রোপন, কর্তন ও কর্ষণ সবগুলো হচ্ছে যান্ত্রিকভাবে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ১০০ ভাগ কর্ষণ ও ১২ ভাগ কর্তণ হলেও রোপন ২ শতাংশ হচ্ছে। কম্বাইন হারভেস্টারের জন্য যন্ত্রপাতি কিনতে সরকার অনুদান দিচ্ছে।