নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনায় ক্যাপসিকামের বাণিজ্যিক চাষে বাড়ছে সফলতা। আর বিদেশী এই সবজি আবাদের দিকে ঝুঁকছে চাষিরা। বাজারের চাহিদায় সারাদেশে সরবরাহ করে কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন চাষিরা। এ দেখেই জেলায় দিনদিন বাড়ছে ক্যাপসিকাম আবাদের পরিধি। উচ্চমূল্যের ফসলটির আর্থিক সম্ভাবনার কথা জানিয়ে আবাদে চাষীদের উৎসাহ দিচ্ছে জেলার কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা সদরের মধুপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম। উচ্চশিক্ষিত অনুসন্ধিৎসু এই কৃষক প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি দুই বছর শখের বসে চার বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক আবাদ করেন বিদেশী ফসল ক্যাপসিকাম। অভিজ্ঞতা না থাকায়, ফলন ভালো না হলেও দমে যাননি নজরুল ইসলাম। ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আবাদের বিষয়ে জেনেছেন। তিনি সরেজমিনে গাজীপুরে গিয়ে ক্যাপসিক্যাম আবাদ দেখে এসে তার চাষবাসে ভুল ত্রুটি শুধরে এ বছর দুই বিঘা জমিতে ক্যামসিকাম আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মৌসুমের শুরুতেই মিলেছে ভালো ফলন।
উচ্চ শিক্ষিত কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর ক্যামসিক্যাম ক্ষেতে আগাছার কারণে ফলন ভালো হয়নি, খরচও বেশী হয়েছে। সে ঝামেলা এড়াতে এবার জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে পলিথিন বিছিয়ে চারা রোপণ করেছেন। আর তাতেই বাজিমাত। নজরুলের হিসেবে প্রতিটি গাছ থেকে তিনি গড়ে এক কেজি ফলন পেলেও তার লাভের অঙ্ক চার লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
নজরুলের এমন সাফল্যে ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আশপাশের গ্রামের চাষীরাও। মকবুল হোসেন, রাশেদুল ইসলাম নামে দুই কৃষক জানান, অল্প জমিতে বেশি আবাদ করা যায়। এতে লাভবান হচ্ছেন তারা। বেশি খরচ নেই, পরিচর্যাও বেশি করতে হয় না। এ কারনে সবার মাঝে ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
ক্যামসিকামের চাহিদা রয়েছে জেলার চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও তারকা হোটেলগুলোতে। রাজধানী থেকেও পাইকার এসে কিনে নিয়ে যান ক্ষেত থেকেই। জেলার মাটি ও আবহাওয়া ক্যাপসিকাম চাষের উপযোগী। তাই প্রতিনিয়ত জেলায় আবাদের পরিসর বাড়ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি পাবনার উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, ক্যাপসিকাম একটি সম্ভাবনাময় ফসল। কৃষক যদি প্রতি কেজি একশ’ টাকা দরেও বিক্রি করে তাহলে এক একর জমি থেকে একজন কৃষক কয়েক লাখ টাকা আয় করতে পারবে। পাবনার মাটি ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযোগী। ধীরে ধীরে আবাদের পরিধি বাড়ছে। আশা করি পাবনার কৃষকরা এই ফসল চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। ক্যাপসিকাম চাষ বৃদ্ধিতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পাশে থাকবো।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, পাবনা জেলায় এ বছর পাঁচ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকাম আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হেক্টর প্রতি ৪০ মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যাবে। ক্যাপসিকাম চাষ বৃদ্ধিতে কৃষকদের নানা ভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে।