বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দুই দিনের বিনিয়োগ সম্মেলনে ২৭০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, এরই মধ্যে কিছু সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আগামী কয়েক দিনে আরও কিছু সমঝোতা স্মারক সই হবে। তিনি বলেন, যদিও এবারের সম্মেলনে বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি পাওয়ার চেয়ে বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাতগুলোকে তুলে ধরাই মূল উদ্দেশ্য ছিল।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে তিনি এসব তথ্য জানান। রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে দুই দিনের এ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজক বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। দুই দিনের এ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা নিরাপদ। কর কাঠামো ও নীতি সুবিধার কারণে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য এখন আদর্শ স্থান।
এর আগে দিনের অন্য কর্ম অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। এমনকি বিদেশি বিনিয়োগ আনতে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন নীতি-কৌশল বারবার পরিবর্তন না করে ধারাবাহিকতা চেয়েছেন তারা। সম্মেলনের শেষ দিনে বিভিন্ন কর্ম অধিবেশনে ব্যবসায়ীরা তাদের এসব চাওয়ার কথা তুলে ধরেন।
সম্মেলনের শেষ দিনে আজ বিষয়ভিত্তিক মোট ছয়টি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। বিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারের সম্মেলনে ৫৪ দেশের ৬ হাজারের বেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
পোশাক ও বস্ত্র খাত নিয়ে আয়োজিত কর্ম অধিবেশনে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, নীতি-কৌশলেরও ধারাবাহিকতা জরুরি। যত দ্রুত সম্ভব মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ করার তাগিদ দেন তিনি।
এ সময় অন্য বক্তারা বলেন, পোশাক খাতে কাস্টমস ও এনবিআর সংক্রান্ত অনেক জটিলতা রয়েছে এখনো। এগুলো দূর করতে হবে। এনবিআরকে বিনিয়োগ বান্ধব নীতি গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া, ব্যবসার উন্নতি ঘটাতে যানজট নিরসনে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তারা। ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কর্ম অধিবেশনে উপস্থিত বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সরকারের নীতি-কৌশলের ধারাবাহিকতার রক্ষার আশ্বাস দেন।
টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ শিরোনামে দিনের অন্য এক কর্ম অধিবেশনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নও ফজলে কবীর বলেন, দেশে এখন ৪৫ বিলিয়ন বা সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলারের রিজার্ভ। করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি সাড়ে পাঁচ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। আর্থিক খাতও বেশ স্থিতিশীল রয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা।
এ অধিবেশনে অন্য বক্তারা বলেন, ব্যাংকখাতে ঋণ খেলাপির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। খেলাপি ঋণ যেন আর বাড়তে না পাওে সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান তারা। এসময় তারা আর্থিক খাতের সংস্কার, এসএমই খাত ও আন্তর্জাতিক অর্থায়নের বিষয়ে বৈচিত্র্য আনার তাগিদ দেন তারা।