শায়ন মন্ডল , বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী “একুশে ফেব্রুয়ারি ভবন” থেকে হারিয়ে যাওয়া টাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে কালো ধোঁয়াশা, এতে মুখ খুলছেন না লাইব্রেরিয়ান।
জানা যায়, লাইব্রেরিয়ান (ভারপ্রাপ্ত) নাছিরুল ইসলামের ব্যবহৃত টেবিলের ড্রয়ের থেকে ৭ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। সেটি আবার আকস্মিকভাবে ফিরেও পাওয়া যায়। তবে টাকা ফিরে পাওয়ার আগে লাইব্রেরীর কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে; চুরি হয়ে যাওয়া টাকা নিয়ে কেউ মুখ খুলেনি। অতঃপর কিছুক্ষণের মধ্যেই হারিয়ে যাওয়া টাকা বইয়ের ভিতরে খুঁজে পাওয়া যায় বলে জানা যায়।
লাইব্রেরীর কর্মচারীদের ভাষ্যমতে, টাকা হারানোর বিষয়ে লাইব্রেরিয়ান তার অফিস কর্মচারী আবু সাঈদকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তিনি টাকার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে আবু সাঈদের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি নানাবিধ অজুহাত দেখিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, “টাকা হারানোর বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। কিন্তু লাইব্রেরিয়ান স্যার আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছি।” নোটিশটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই নোটিশে লাইব্রেরির কর্মচারীদের সামনে লাইব্রেরিয়ান টাকা চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন” তবে নোটিশে একাধিক কর্মচারীর স্বাক্ষরও দেখা গেছে। কিন্তু নোটিশে লাইব্রেরিয়ানের নাম ব্যবহার করা হলেও তার কোনো স্বাক্ষর এবং সিল দেখা যায়নি।
নোটিশ সম্পর্কিত বিষয়ে জানতে চাইলে লাইব্রেরিয়ান বলেন, “আমার অনুমতি ব্যতিত নোটিশ তৈরি করা হয়েছে, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না এবং চুরি হয়ে যাওয়া টাকা সম্পর্কিত বিষয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দিবেন না বলে সরাসরি মন্তব্য করেন।”
তবে আবু সাঈদ এর পূর্বে বর্তমান সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. হাসিবুর রহমান রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান থাকাকালে ২০২০ সালে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তা জানাজানি হলে তিনি ওই টাকা ফেরতও দেন।
তবে একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিকবার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্টার মুরাদ হোসেন বলেন, “রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে টাকা হারানোর বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে ও তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু লাইব্রেরির বিষয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি।” তিনি আরো বলেন, “আমরা আবু সাঈদের বিরুদ্ধে মৌখিক কিছু অভিযোগ পেয়েছি। আর তার প্রেক্ষিতে ভাইস চ্যান্সেলরের সাথে কথা বলে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করবো এবং দোষী সাবস্ত হলে সেটির ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।” এ বিষয়ে জানার জন্য বশেমুরবিপ্রবি’র উপাচার্যের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।