ইবি প্রতিনিধি: বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর নিম্নস্তরের সিগারেট বন্ধসহ চার দফা দাবিতে কুষ্টিয়ায় বিড়ি শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিড়ির শুল্ক ১৮ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা করা, বিড়ি শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি করা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীর আগ্রাসন বন্ধ করা এবং বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর নিম্নস্তরের সিগারেট বন্ধ করার দাবি জানান শ্রমিকরা।
বুধবার (২৪ মে) সকাল ১১ টায় কুষ্টিয়া বিড়ি শ্রমিক সংগ্রাম পরষিদরে আয়োজনে জেলা পাবলকি লাইব্রেরি মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শ্রমিক নেতারা।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসনের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সহ সভাপতি নাজিম উদ্দিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজগর আলী। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। বিষেশ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, কুষ্টিয়া জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন (বিএসসি), সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত লাবলু, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসানে, বিড়ি শ্রমিক নেতা আকমল হোসেন, সাদ আলী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কুষ্টিয়া অঞ্চলের মাটি এবং আবহাওয়া তামাক চাষের উপযোগী। এই অঞ্চলে অন্য ফসলের ফলন ভালো না হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত। এই তামাক বিড়ি কারখানায় ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এই অঞ্চলের কয়েক লক্ষ অসহায় শ্রমিক বিড়ি কারখানায় কাজ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে। অথচ ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানীর ষড়যন্ত্রে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্প আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে এসে পৌঁছেছে। আগামী বাজেটে বিএটির দালালেরা বিড়ি শিল্পের শুল্ক বৃদ্ধির জন্য ষড়যন্ত্র করে চলেছে, তাদেরকে হুঁশিয়ার সাবধান করে দিতে চাই। এই ব্রিটিশ আমেরিকা আমাদের দেশের শত্রু, সরকারের শত্রু ও জনগনের শত্রু। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধীতা করে আমেরিকা-ব্রিটিশ সপ্তম নৌ-বহর পাঠিয়েছিলেন। সুতরাং এদেশে থেকে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীর আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। একইসাথে প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্পকে রক্ষায় আগামী বাজেটে বিড়ির শুল্ক ১৮ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা করতে হবে এবং বিড়ি শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি করতে হবে।
বক্তরা আরো বলেন, দেশের অর্থনীতিতে বিড়ি কারখানার মালিকদের অবদান অপরিসীম। এই শিল্পের মালিকরা এ দেশে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। অথচ বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানী ও দেশের কিছু এনজিও এই শিল্পকে ধ্বংস করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। নিম্নস্তরের সিগারেট দিয়ে বিড়ি শিল্পকে ধ্বংস করতে চায় তারা। বর্তমান বাজারে নিম্নস্তরের সিগারেটের সিংহভাগই বিদেশি কোম্পানির। দেশীয় শ্রমঘন বিড়ি শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষার্থে বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর নিম্নস্তরের সিগারেট বন্ধ করতে হবে। বিড়ি শিল্প ও শ্রমিকদের নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে আমরা দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এছাড়া ব্রিটিশ-আমেরিকাসহ যেসব দেশ আমাদের প্রশাসনের উপর শ্যাংসন দিবে দেশবাসীকে তাদের সিগারেটসহ সকল পণ্য বর্জনের আহবান জানান বক্তরা।