নিজস্ব প্রতিনিধি : মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে শহিদ মিনারে ফুল দেয়া নিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে। এ সময় দুই নারী কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন এক পক্ষ।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরের শহিদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পক্ষ।
অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন নামের কর্মকর্তাদের একটি সংগঠন রয়েছে। সম্প্রতি একটি পক্ষ পাস্ট ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স এসোসিয়েশন নামের আরেকটি সংগঠন তৈরি করেন। এ নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বুধবার সকালে শহিদ মিনারে দুই পক্ষ ফুল দিতে যান। প্রথমে পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে শ্রদ্ধা জানাতে শহিদ মিনারের সামনে যান নতুন সংগঠনের নেতারা। আর তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলীতে বাধা দিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা ফুলের তোড়া ও সংগঠনের নাম সম্বলিত প্যানা ছিনিয়ে নেন পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা এছাড়া নতুন সংগঠনের দুই নারী সদস্যকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ। এ সময় উভয়পক্ষের কর্মকর্তাদের হট্টগোলের সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক হয়।
পাস্ট ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক জিএম শামসাদ ফখরুল ও সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ফুল নিয়ে শহিদ মিনারের সামনে যাওয়ার পরপরই কর্মকর্তা পরিষদের নেতারা বাধা দেন এবং আমাদের ফুলের তোড়ায় থাকা আমাদের সংগঠনের নাম সম্বলিত প্যানা ছিনিয়ে নেন। এরপর আমাদের দুই নারী কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। আমরা এ ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছি।
পাবিপ্রবি কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হারুনর রশিদ ডন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের একটিই সংগঠন আছে সেটা হলো পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। একটি পক্ষ প্রায় একই নামে আরেকটি সংগঠন তৈরি করেছে। তারা যেহেতু আমাদের সংগঠনেরই ভোটার তাই আমরা তাদের বলেছি- একই নাম ব্যবহার না করে অন্য কোনো নামে সংগঠন তৈরি করতে। এসব নিয়েই আজ সকালে শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে, আর কিছু নয়। হাতাহাতি, প্যানা ছিনিয়ে নেওয়া ও কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ মিথ্যা।
পাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘শহিদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের দুইটি সংগঠনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। একই সংগঠনের নামে দুটি সংগঠন হওয়ায় তাদের মধ্যে একটু বাগ্বিণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে দুই পক্ষই শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে পাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, শহিদ মিনারে কর্মকর্তাদের দুই পক্ষের একটা ঝামেলা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও মানবিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. খালেদ ইকবাল চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।