পাবিপ্রবি প্রতিনিধি : পাবনায় অতিদ্রুত করোনা টেষ্টের জন্য পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। আজ মঙ্গলবার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ কোভিড-১৯ মহামারীঃ সচেতনতা, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এ কথা জানান। তিনি বলেন, এর আগেই পিসিআর মেশিন স্থাপন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সংশ্লিষ্ট টেকনিক্যাল লোক না থাকায় আমরা স্থাপন করতে পারি নাই। এখন যেহেতু পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংশ্লিষ্ট টেকনিক্যাল পার্সন আছেন তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে পিসিআর মেশিন স্থাপনের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারী-২ সেমিনারে উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ আরো বলেন, মূলত ঈদের মধ্যে পাবনায় সংক্রমন বেড়েছে। পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। পাবনায় সদর উপজেলা বেশি আক্রান্ত। জেলা প্রশাসন নয়টি লাশ দাফন করেছে। আমাদের সবার মানবিক হতে হবে। জীবন ও জীবিকার যুদ্ধে সকলের সহযোগিতা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মেস ভাড়া ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে। মানুষের যাতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য এক ইঞ্চি জায়গাও আমরা পতিত রাখবো না। পাবনা জেলায় পরিবেশ বান্ধব ২৩ হাজার বট গাছ লাগানো হবে বলে তিনি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারী সোশাল ষ্ট্যাটাসকে চেঞ্জ করে দিয়েছে। মানুষের পেশা চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে- আরো যাবে। তিনি বলেন, এখন প্রত্যন্ত এলাকাতেও কেবল টিভির সংযোগ আছে। প্রশাসনকে উদ্যোগ নিয়ে সকল টিভিতে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে সকল বেসরকারি টেলিভিশনে শিক্ষাবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার বাধ্যতামূলক করা দরকার। তিনি স্বাস্থ্য বান্ধব গাছ লাগানোর উপর গুরুত্ব দেন।
সেমিনারের আলোচক বিশিষ্ট অনুজীব বিজ্ঞানী ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনোয়ার খসরু পারভেজ বলেন, অনেকেই বুঝতে পারছে না তিনি করোনা আক্রান্ত। এদের মাধ্যমে করোনা বেশি ছড়াচ্ছে। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে। করোনা বয়স্কদের জন্য বেশি ঝুকিপূর্ণ। আমরা করোনা আক্রান্তদের সাথে যেন মানবিক আচরণ করি। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত করোনা আমাদের সাথে থাকবে। করোনামুক্ত থাকতে হলে সচেতন হতে হবে। বাসায় থাকতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তথা ইমিউনিটি বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বিকল্প নাই। তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রজেক্টরের মাধ্যমে তিনি করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী বলেন, নিজের নিরাপত্তা নিজের কাছে। বাইরে কম যাই, ঘরে থাকি। সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে অফিস করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বিপদ বাড়বে। করোনা নিয়ে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হই। সরকারের স্বাসস্থ্যবিধি মানলেই কেবল সুস্থ থাকা যাবে। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, অনলাইনে ক্লাস চলছে। লেখাপড়ায় সময় দিলে বাইরে কম যাওয়া হবে। করোনার এই সময়টাকে ক্লাসের পড়ালেখার বাইরে বিশ্ব সাহিত্য, ভালো বইপড়াসহ ভালো কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন মাননীয় উপাচার্য।
আরো বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সহকারী অধ্যাপক ফারুক আহমেদ। সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, প্রক্টর ড.প্রীতম কুমার দাস সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ওমর ফারুক ,সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, পরিবহণ প্রশাসক ড. মোঃ কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার বিজন কুমার বহ্ম্র,অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার পাভেল প্রমুখ।