ইদানীং দেখা যায়, প্রবল প্রচেষ্টা, তদবির ও ব্যক্তিগত সংযোগ ব্যতিরেকে স্বীকৃতি যেন ঠিক মিলছে না। বাহারি পদক, পুরস্কার ও ক্রেস্ট পেতে গেলে মেলা ক্লেশ স্বীকার করতে হয়। তারপর নেহাত বরাত ভালো থাকলেই মেলে টুকটাক স্বীকৃতি।
অ্যান্টেনা ছাড়া যেমন দূরদর্শনে ভালো ছবি দেখা যায় না, কেমন ঝিরঝির করে, ঠিক তেমনি শক্ত সংযোগ ছাড়া স্বীকৃতি মেলা ভার। আপনি যতই কষ্ট করুন বা কলম পেষেন, পাওয়ার বেলায় লবডঙ্কা! কিন্তু এক শ্রেণির লোক আছে যারা, তড়িঘড়ি কিছু একটা করেই অমনি পদক বা স্বীকৃতি বাগিয়ে নেয়।
ওরা জানে, কবে কার সঙ্গে কতটুকু সংযোগ স্থাপন করলে কার্যোদ্ধার সম্ভব।
পদকের সঙ্গে পাদোদকের বিশেষ সম্বন্ধ কিন্তু লক্ষণীয়। একেবারে বিনা প্রচেষ্টায় স্রেফ যোগ্যতার বলে কেউ পদক পেয়েছে এমন কাহিনী কিন্তু প্রায় শোনাই যায় না। বরং প্রায়শ উল্টোটা হয়। যারা স্বীকৃতি দেন তাদের সঙ্গে অল্পবিস্তর চেনা-জানা থাকলেই হবে না, বেশ জোরালো কানেকশন বা সংযোগ থাকলেই কেবল পদক বা পুরস্কার জোটে।
কোন পদক বা পুরস্কার মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে। কারণ স্বাভাবিকভাবে কাজের স্বীকৃতি পেলে মানুষ আনন্দিত হয়। এই পুরস্কার আরও কাজে উদ্বুদ্ধ করে। আর না পেলে মন খারাপ হয়।
এই পদক বা পুরস্কারকে যারা ব্যবসার মানদণ্ডে নামিয়ে এনেছে তাদের জন্য মেধার মূল্যায়নের এই দুর্দশা।পুরস্কার শব্দটি মানুষের কাজের স্বীকৃতি এবং দক্ষতার মূল্যায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তবে এমন মানুষও আছেন যারা পুরস্কারের জন্য কাজ করেন না। এসব মানুষের সংখ্যা বেশি নয়। হাতে গোনা। তারা কাজ করেন নীরবে, নিভৃতে তাঁদের মধ্যে সুরকার গীতিকার ও সংগীত শিল্পী ‘বিজয় সরকার অন্যতম। দেশের খ্যাতিনামা এই সংগীত শিল্পী সুরকার ও গীতিকারের দেশের ২য় বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক প্রদানের দাবীতে সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধমে ব্যাপক দাবি জানিয়েছেন তাঁর গানের হাজারো ভক্তবৃন্দ।
বিজয় সরকারের রচনাশৈলী সুর ও গায়কী যাবতীয় বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সঙ্গেই বিজয় সরকারের সংগীত হয়ে উঠেছে স্বতোৎসারিত প্রবাহের মত৷ অমৃতেনর প্রবাহ বললে খুব ভুল হবে না৷ তাঁর সৃষ্টির এই বিশেষ দিকটিতে ধরা পড়েছে তাঁর প্রতিটা গানগুলোর ভিতরেই।
হোক তা প্রণয়,বিরহ, ভালোবাসা থেকে প্রকৃতি কিংবা স্বদেশ চেতনা থেকে বৈরাগ্য অথবা পূজা থেকে রসবোধ৷ জীবনযাপনের সব শাখাতেই, মানব মনের সব অনুভূতি নিয়েই সংগীত রচনা সুর ও গায়কীর ভেলায় ভাসিয়ে দিয়েছেন মানুষকে অপরূপ সুরের আর বাণীর স্রোতে৷ এমন মহৎ সংগীতজ্ঞকে বাংলাদেশের জাতীয় এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানে ভূষিত করা হবে বলে আশাবাদী তাঁর ভক্ত অনুরাগীরা।
— জাহিদ হাসান নিশান।