ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন ধার্মিক। নিজ শেকড় অস্বীকার করে নয়। ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বড় সত্য আমরা বাঙালি। এটা কোনো আদর্শের কথা নয়। এটি একটি বাস্তব সত্য। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায়, ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে, তা মালা, তিলক, টিকিতে কিংবা টুপি, লুঙ্গী, দাঁড়িতে ঢাকবার জোঁ নেই।
ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে আমাদের “মঙ্গল শোভাযাত্রা”। বাংলার অসাম্প্রদায়িক লোকায়ত ঐতিহ্যের উৎসব “মঙ্গল শোভাযাত্রা” ইতিমধ্যে ইউনেস্কো ”অধরা বিশ্ব ঐতিহ্য” শিরোপার স্বীকৃতি লাভ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনষ্টিটিউটের এই উৎসব পালন এর ধারাবাহিকতা প্রায় সব জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশে। সে কথা স্মরণ রেখে প্রথম বারের মতো ছোট পরিসরে শান্তি নিকেতনে ১৪২৬ নববর্ষের ১লা বৈশাখে “মঙ্গল শোভাযাত্রা” আয়োজন করেছিলো। বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পী- সংগঠক তথা হিহিরি পিপিড়ি আর্ট রেসিডেন্সিবৃন্দ ও কবিগুরুর শান্তিনিকেতন এর শিল্পী বন্ধুরা সম্মিলিত ভাবে প্রথম এই’মঙ্গল শোভাযাত্রা’ এর মূল ভাব নির্ধারন করেছিলো-“ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে-মানুষ শুধু”, মানবতা ও সম্প্রীতির উৎসব “মঙ্গল শোভাযাত্রা”। দুটি প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার পোস্টার এর নকশা করেন বিশিষ্ট শিল্পী তরুন ঘোষ।
চারুকলা থেকে বিশাল মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে আবার। ‘কাল ভয়ংকর বেশে ঐ আসে সুন্দর’ এ শ্লোগানে মুখরিত হবে রাজপথ। মুখোশের আড়ালে মুখোশ। কারো মুখ পেঁচার মতো কারও বা সিংহের। কেউবা আবার ফুলপরি, কেউবা সুর্যমুখী। গরম রোদে পা তাতিয়ে, পাখার বাতাস করতে করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা আবার নিশ্চয় হবে। নিশ্চয় শিল্পী তরুণ ঘোষের রঙ তুলি আঁচরে আবার হেসে ওঠবে শোভা যাত্রার পোস্টার। মানুষ থাকবে মানুষের পাশে।
“মঙ্গল শোভাযাত্রা” উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ১ম পোষ্টার এর নকশা শিল্পী তরুণ ঘোষ দাদা, কবি সামসুল আরেফিন ভাইয়ের সাথে লেখক জেমী হাফিজ। ১৯৯৭ সালে যখন তাঁরা দুজন জাতীয় যাদুঘরে চাকুরী করতেন তখনকার ছবি। শুভ হোক বাঙালির নুতন বছর। শুভ হোক নতুন বছরের যাএা, সবার জীবন সুন্দর হোক, সুখ শান্তিতে ভরে উঠুক আগামীর পথ চলা। সকলের জন্য রইলো অনেক শুভেচ্ছা।
লেখক : কলাম লেখক