বেঁচে ফেরা!//
– কামাল আহমেদ
শেষ পর্যন্ত টানা দুই সপ্তাহ কোভিড-১৯ এর সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে ফিরলাম; না কি ফিরে বাঁচলাম, সে বোধশক্তি নিয়ে ভেবে ওঠার মতো মনের অবস্থা এখনও তৈরি হয়নি আমার। কেননা এই ঘোরের মধ্যে ঠিক কি অবস্থায় ছিলাম, তা আমার ছেলে ছাড়া আর কী বলতে পারবেনা। কেননা সে একাই ফেস করেছে করোনার সাথে আমাদের ১২ দিনের যুদ্ধ।
প্রথমে ভেবেছিলাম, আমি একাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। তাই হাসপাতালে যাওয়ার সময় আমার ছোট বঊমার কাছে একটাই অনুরাধ ছিল, তোমার শ্বাশুড়িকে দেখে রেখ বঊ মা, ওর আর যাওয়ার মতো কোন জায়গা নেই!।
কিন্তু দ্বিতীয় দিন যখন হাসপাতালে আমার স্ত্রীকেও ভর্তি দেখলাম, তখন ভাবলাম, সব শেষ। আমার পরিবার আর অবশিষ্ট রইল না!
এরপর টানা ১২ দিনের ২৪ ঘন্টার প্রতিটি সময় কেমন ভাবে পার হয়েছে সে শুধু আমার ছেলে ব্যারিস্টার রাজিন, হাসপাতালের একদল নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক (যাদের অধিকাংশই আমার ছেলের বন্ধু), নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। আমি তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।
কোভিড-১৯ চিকিৎসাব্যয়ের কথা না তোলাই ভালো। যেহেতু এ দেশে এ সংক্রান্ত কোন সুসমন্বিত চিকিৎসাব্যবস্থা নেই, বিশেষ করে বেসরকারি ব্যবস্থায় কোন নিয়ন্ত্রণও নেই, তাই স্থানে স্থানে খরচ লাগামহীন। আমাদের ১২ দিনের চিকিৎসাখরচ গেছে গড়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার। চিকিৎসাখরচ ছাড়া যে বিষয়টি চোখে পড়ার মতো, তা হচ্ছে, সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত টিম অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতা, নিজেদের পড়া জানা ও প্রায়োগিক জ্ঞান
বা এমন কি অনেক ক্ষেত্রে এক্সপেরিমেন্টাল ধাঁচের চিকিৎসা দিচ্ছেন। ফলে একই চিকিৎসায় কেউ ভালো হচ্ছেন, কেউ বা নন।
বিষয়টা বলা যায়, কোভিড-১৯ চিকিৎসা অনেকটা অর্থ এবং ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে!বেঁচে ফিরব ভাবিনি। ভাবার তেমন প্রয়োজনও ছিল না। কেননা, মাত্র ৫ তারিখে একাত্তরে পা দিয়েছিলাম। তখন অবশ্য বলেছিলাম, করোনাকাল অতিক্রম করে বেঁচে থাকলে তাকি আমার তৃতীয় জীবন হবে? সেটা অবশ্য বলেছিলাম, স্বাভাবিকভাবে করোনাকাল অতিক্রম করে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার কথা ভেবেই!
শেষ পর্যন্ত টানা দুই সপ্তাহ কোভিড-১৯ এর সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে ফিরলাম; না কি ফিরে বাঁচলাম, সে বোধশক্তি নিয়ে ভেবে ওঠার মতো মনের অবস্থা এখনও তৈরি হয়নি আমার। কেননা এই ঘোরের মধ্যে ঠিক কি অবস্থায় ছিলাম, তা আমার ছেলে ছাড়া আর কী বলতে পারবেনা। কেননা সে একাই ফেস করেছে করোনার সাথে আমাদের ১২ দিনের যুদ্ধ।
প্রথমে ভেবেছিলাম, আমি একাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। তাই হাসপাতালে যাওয়ার সময় আমার ছোট বঊমার কাছে একটাই অনুরাধ ছিল, তোমার শ্বাশুড়িকে দেখে রেখ বঊ মা, ওর আর যাওয়ার মতো কোন জায়গা নেই!।
কিন্তু দ্বিতীয় দিন যখন হাসপাতালে আমার স্ত্রীকেও ভর্তি দেখলাম, তখন ভাবলাম, সব শেষ। আমার পরিবার আর অবশিষ্ট রইল না!
এরপর টানা ১২ দিনের ২৪ ঘন্টার প্রতিটি সময় কেমন ভাবে পার হয়েছে সে শুধু আমার ছেলে ব্যারিস্টার রাজিন, হাসপাতালের একদল নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক (যাদের অধিকাংশই আমার ছেলের বন্ধু), নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। আমি তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।
কোভিড-১৯ চিকিৎসাব্যয়ের কথা না তোলাই ভালো। যেহেতু এ দেশে এ সংক্রান্ত কোন সুসমন্বিত চিকিৎসাব্যবস্থা নেই, বিশেষ করে বেসরকারি ব্যবস্থায় কোন নিয়ন্ত্রণও নেই, তাই স্থানে স্থানে খরচ লাগামহীন। আমাদের ১২ দিনের চিকিৎসাখরচ গেছে গড়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার। চিকিৎসাখরচ ছাড়া যে বিষয়টি চোখে পড়ার মতো, তা হচ্ছে, সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত টিম অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতা, নিজেদের পড়া জানা ও প্রায়োগিক জ্ঞান
বা এমন কি অনেক ক্ষেত্রে এক্সপেরিমেন্টাল ধাঁচের চিকিৎসা দিচ্ছেন। ফলে একই চিকিৎসায় কেউ ভালো হচ্ছেন, কেউ বা নন।
বিষয়টা বলা যায়, কোভিড-১৯ চিকিৎসা অনেকটা অর্থ এবং ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে!বেঁচে ফিরব ভাবিনি। ভাবার তেমন প্রয়োজনও ছিল না। কেননা, মাত্র ৫ তারিখে একাত্তরে পা দিয়েছিলাম। তখন অবশ্য বলেছিলাম, করোনাকাল অতিক্রম করে বেঁচে থাকলে তাকি আমার তৃতীয় জীবন হবে? সেটা অবশ্য বলেছিলাম, স্বাভাবিকভাবে করোনাকাল অতিক্রম করে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার কথা ভেবেই!
আজ প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। তাই সন্তানদের শুধু বলতে চাই, তোমরা যেভাবে শ্রম, সময় আর লাখ লাখ টাকা বিসর্জন দিয়ে আমাকে বাঁচিয়ে তুলেছ, এ রকম বাঁচতে আমি সত্যিই চাইনি। যে জীবনের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে, যার উপযোগিতা বলতে আর কিছু এখন নেই, যে জীবনের কাঠামোকে শুধু দেহের কাঠামো হিসেবে বয়ে চলা, কোভিড-১৯ এর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া নেওয়া তেমন এক অতিরিক্ত জীবন নিয়ে আমি এখন কী করব, তাকি বলতে পারবে?