সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান এই চারটি নাম বাংলাদেশের ইতিহাসে উজ্জল নক্ষত্রসম। এই চারজনকে ছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা হয়তো সম্ভব না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ১৯৭১ এ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন এই চারজন।
মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বস্ত চার সহযোগী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নৃশংসভাবে জেলের ভেতর হত্যা করা হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বর্বরতা নজিরবিহীন। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়েই খুনিচক্র এই হত্যাকা- ঘটিয়েছিলো বলে সবার ধারণা।
বাংলার ইতিহাসে অনেক গৌরবময় অধ্যায় রয়েছে। এমনই একটি অধ্যায় ১৯৭১। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এটি এক অনন্য অধ্যায়। ১৯৭১ সালে বাঙালিরা তাদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রম হারানোর যন্ত্রণায় বিদীর্ণ বুক নিয়েও যে সাফল্য অহরহ আমাদের গর্বিত করে তা হলো আমাদের ‘স্বাধীনতা’। একটি নিজস্ব পতাকা। একটি পৃথক মানচিত্র এবং আমাদের ভাষা আন্দোলনের সাফল্য। এই প্রাপ্তি বিশ্বসভায় আমাদের উজ্জ্বল এক অহংকারকে সমুন্নত করে রেখেছে। চিরকালই রাখবে।
আবার কোনো কোনো দিনকে কালো মনে করা হয়। আর সেই প্রাপ্তির পাশাপাশি যে লজ্জা আমাদের চিরকাল ম্রিয়মাণ করে রাখবে, সে হলো জাতির জনক হত্যাকা-, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ আর সেই চূড়ান্ত লজ্জা-দুঃখ এবং লজ্জাজনক ঘটনার ধারাবাহিকতায় জেল হত্যাকা- ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫ এর সাথে আরো এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের দিন হলো ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভায় গ্রেনেড হামলা।
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয় ১৭ এপ্রিল কুষ্টিয়ার মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে এক শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী, এম মনসুর আলীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এএইচএম কামারুজ্জামানকে অর্থমন্ত্রী এবং খন্দকার মোশতাক আহমেদকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়েপ্রবাসী সরকার গঠিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করা হয়। ১৭ এপ্রিল গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাঠ করা হয়। বৈদ্যনাথতলার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মুজিবনগর। এই চার নেতা যদি দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধের নেতৃত্বের হাল না ধরতেন তাহলে হয়তো আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমাদেরকে আরো কঠিন মূল্য দিতে হতো।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের রাজনীতির গতিমুখ পরিবর্তনের সূচনা হয়। একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, দেশের রাজনীতিকে প্রগতিবিমুখ ও পাকিস্তানমুখী করে প্রতিশোধ গ্রহণ করেছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে কয়েকজন সেনাসদস্য প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব দিলেও এর পেছনে ছিল দেশি-বিদেশি নানা শক্তি। আওয়ামী লীগের ভেতরেই ছিল ঘাতকদের সহযোগীরা। কয়েকজন বিপথগামী জুনিয়র সেনা কর্মকর্তা আকস্মিক হঠকারিতাবশত ১৫ আগস্ট হত্যাকা- ঘটিয়ে ফেলেছিল, এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। ১৫ আগস্ট না হয়ে অন্য যে কোনো দিন এমন নৃশংস ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা ও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সে অশুভ শক্তির অপতৎপরতা বন্ধ বা দূর করার মতো বিচক্ষণতা দেখানোর অবস্থা ছিল না। নানা কারণে বঙ্গবন্ধু হয়ে পড়েছিলেন রাজনৈতিকভাবে নিঃসঙ্গ। পরামর্শদাতাদের সঙ্গে তৈরি করা হয়েছিল দূরত্ব। বাকশাল তিনি করেছিলেন জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে কিন্তু সেটা হয়নি। আসলে হওয়ার মতো অবস্থাও রাখা হয়নি। ফাঁকফোকর ছিল বেশি। উপযুক্ততা বিচার করে পদপদবি দেয়া হয়নি।
বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মাথা তুলে দাঁড়ালে যাদের গাত্রদাহ হতো তারা শুরু থেকেই সুযোগের সন্ধানে ছিল। আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই বিশ্বাসঘাতক বাছাই করা হয়েছিল। খন্দকার মোশতাক, কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম, তাহেরউদ্দিন ঠাকুররা একদিনে তৈরি হয়নি। তারা যে তলে তলে সর্বনাশের রাস্তা তৈরি করছিলেন, সেটা বঙ্গবন্ধুরও অজানা ছিল না। তবে তিনি তাদের ষড়যন্ত্রকে খুব পাত্তা দিতেন না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত উদার মনের অতি মানবিক গুণসম্পন্ন একজন মানুষ। তিনি নিজে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন না। কোনো ষড়যন্ত্রকারী তাঁর কোনো ক্ষতি করতে পারে সেটাও তিনি বিশ্বাস করতেন না। কোনো বাঙালি তাঁকে হত্যা করবে, এটাও ছিল তাঁর ধারণার বাইরে। তার এই মানবিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে ঘাতকরা।
১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনীতির ধারাকে তছনছ করে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার ঘটনায় গোটা দেশ বিহ্বল হয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধুর অনুসারীরাও ছিল হতভম্ব এবং বিভ্রান্ত। খন্দকার মোশতাক প্রেসিডেন্ট হওয়ায় এবং বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার প্রায় সবাই মোশতাককে সমর্থন করায় সাধারণ মানুষ ছিল দিশাহীন। খুনিরা অতি সহজে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়। তবে খুনি মেজরদেও দৌরাত্ম্যে এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সেনাবাহিনীর মধ্যে তৈরি হচ্ছিল বিরূপতা। সেনাবাহিনীতে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনার তাগিদ অনুভব করতে থাকেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ। তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং দক্ষ ও পেশাদার সেনা কর্মকর্তা। তার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় গড়ে উঠেছিল এক দুর্র্ধর্ষ গেরিলা বাহিনী। খালেদ মোশাররফ হয়তো আশা করেছিলেন তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু একটা করবেন। কিন্তু অচিরেই তিনি বুঝতে পারেন নতুন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে তিনি সঙ্গে পাবেন না।
৩ নভেম্বরের জেল হত্যাকা- নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনিবার্যভাবেই উঠে আসে ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার ভগ্নিপতি পানিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার এক ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি ১৫ আগস্ট নিহত হন। বোঝা যায়, অভ্যুত্থানের লক্ষ্য ছিল একটি পরিবার।আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় চার নেতাকে ২৩ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। ১৫ আগস্টের আট দিন পর। ১৫ আগস্টের পর আট দিন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। সে সময় খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে সরকার ক্ষমতায় ছিল, যার মন্ত্রিসভা। সকল সদস্য আওয়ামী লীগের। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামান জাতীয় চার নেতা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত; মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁরা প্রবাসী সরকারের নেতৃত্ব দেন। তাঁদের হাত ধরেই স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সরকারের পথচলা শুরু হয়।
জাতিকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৭১এর ১৪ ডিসেম্বর ঘটেছিল বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড আবার নতুন করে জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করে ফেলার মহাপরিকল্পনা হিসাবে প্রথমে জাতির পিতাকে সপরিবার-সবান্ধব হত্যা করা হলো অত্যন্ত নারকীয়ভাবে। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে গেলেন তাঁর দুই কন্যা, আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা। যে মহানায়কের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অবদানে বিশ্ব মানচিত্রে সগর্বে নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল একটি নতুন দেশ, যে একটি জ্বালাময়ী বক্তৃতায় এদেশবাসী স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল দেশের লক্ষ বীর সন্তান, হাসিমুখে জীবন দিতে পিছপা হয়নি, ছিনিয়ে এনেছিল একটি স্বাধীন পতাকা, সেই মহান নেতাকে, বাংলাদেশের স্থপতিকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। এবার তারা মনোযোগ দিল স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাকি নেতাদের প্রতি।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যে অপশক্তি বারবার চেষ্টা করেছে আমাদের মুক্তির স্বপ্নকে ধুলিস্যাৎ করে দিতে, তার আজো বিপুল বিক্রমে সক্রিয়। কারাগারে ঢুকে চার নেতাকে হত্যা করে। মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে কাজ করাই ছিল এই চক্রটির মূল উদ্দেশ্য। মোশতাক সরকারের পতনের পরে ওরা ভেবেছে এই চার নেতামুক্তি পেলে জাতিকে আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সংগঠিত করে ফেলতে পারবেন। আর এমন হলে দেশের উন্নয়নের ধারাকে প্রতিহত করার তাদের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করতে পারবে না। এদের এই হত্যাকা-গুলো ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরতরে বিনষ্ট করে দেবার এক গভীর চক্রান্ত। এবং এতে যে তারা অনেকটাই সফল হয়েছে, তা অনস্বীকার্য। যে শোষণহীন, ধর্ম বৈষম্যহীন এক প্রগতিশীল সমাজের প্রতিশ্রুতিতে দেশ স্বাধীন হয়েছিল তা থেকে এখন আজ আমরা অনেক দূরে সরে এসেছি। ১৯৭৫ এর পট পরিবর্তনের ফলেই এটা হয়েছে।
১৯৭৫ এর হত্যাকা-ের পরপরই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা আদর্শের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ এক নতুন ধারার রাষ্ট্রনীতি প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, যারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল দেশের রাজনৈতিক পরিম-লে তারা আবার ফিরে এলোবিপুল বিক্রমে। চলতে থাকলো মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার। তার অনেকটাই প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেল অতিপ্রচারের বদৌলতে।
১৯৭৫ এর ৩রা নভেম্বরের প্রথম প্রহরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত হয়েছিলেন শীর্ষ চারজন রাজনৈতিক নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান। এ নিয়ে একটি মামলা হয়েছে। বিচারও হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি। জেল হত্যা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি।
একটি প্রশ্ন বারবার ফিরে আসেএই চারজন জাতীয় নেতাকে কেন হত্যা করা হয়েছে? এ প্রসঙ্গে একটি সরল ব্যাখ্যা রয়েছে বিশেষ করে গবেষক ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের তাঁরা মনে করেন যে বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য তাঁদের হত্যা করা হয়েছিল। অর্থাৎ তাঁরা নেতৃত্বে ফিরে আসতে পারেন বা তাঁরা ভবিষ্যতে সরকার গঠন করতে পারেন এ রকম একটি সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এটি তাঁদের প্রতিপক্ষ চায়নি। এ জন্য পথের কাঁটা দূর করা হলো। এই চার নেতা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন; মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁদের হাত ধরেই স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সরকারের পথচলা শুরু।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে ৭ নভেম্বর সময়কালে সংঘটিত ঘটনা ও হত্যাকা-ে দেশের সাধারণ মানুষের কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না, এসময়ে শুধু ক্ষমতার জন্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা, হত্যার প্রতিশোধে হত্যা এবং দেশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করে স্বৈরশাসকদের ক্ষমতায় বসানোর পথ পরিষ্কার করা হয়। বস্তুত ৩-৭ নভেম্বর ১৯৭৫ ছিল সেনাকর্মকর্তাদের ক্ষমতার লড়াই। ইনডেমনিটি আইন করে হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করা হয়।
১৯৯৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয় এবং তারপরই এসব কলঙ্কজনক হত্যাকা-ের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় ২০১৫ এর ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়। বিচার কার্যক্রম শেষ হওয়ার মধ্যদিয়ে জাতির কলঙ্কের তিলক খানিকটা মোচন হয়। জাতীয় চার নেতা মৃত্যুপর্যন্ত দেশের জন্য অবিচল ছিলেন। মৃত্যুও তাঁদের আদর্শ ও সততাকে একটুকু পরিমাণ বিচ্যুত করতে পারেনি। জাতির পিতার প্রতি তাঁরা আস্থাশীল থেকেছেন। ক্ষমতার লোভ তাদের টলাতে পারেনি। তাঁরা ছিলেন বীর, আদর্শ ও চেতনার প্রশ্নে আপোষহীন। তাঁদের আত্মত্যাগ জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে সবসময়।
লেখক: প্রাবন্ধিক ও গবেষক