হীরেন পণ্ডিত : অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি। দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ নির্বাচন চেয়েছে, ঠিক সে রকমই হয়েছে আমাদের জাতীয় নির্বাচন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিলো সরকারের পক্ষ থেকেও। সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করেছে সরকার। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছে।
একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনই সবার প্রত্যাশায় ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে একটি অভূতপূর্ব ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিসহ সব শক্তি একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কাজ করেছে।
দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলেও যদি নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়, তাহলে ভালো নির্বাচন হতে পারে। এবারের নির্বাচনে এটাই সবচেয়ে ইতিবাচক দিক। ভোটারদের বাধা এবং ভোট বর্জনকারীদের নানা অপপ্রচারের পরেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেছেন। মানুষ ভোট দিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। দুই একটি জায়গায় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে এবং এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সতর্ক ছিল।
এমনকি সরকারি দলের একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। সবকিছু মিলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে। মানুষ খুব হাসি-খুশির সাথে ভোট দিতে পেরেছেন। এবার নির্বাচন কমিশন খুব সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করেছে। মানুষ কোনো হয়রানি বা ঝামেলা ছাড়া ভোট দিয়ে এসেছেন। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে এবং এই নির্বাচন সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য।
নির্বাচনে ৪১.০৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। নাশকতা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম না থাকলে আরও বেশি ভোট পড়ত। নির্বাচন বর্জনকারীদের অপপ্রচারের ফলে মানুষের মধ্যে ভোটের দিন ঘিরে এক ধরনের ভীতি সৃষ্টি হয়েছিল। শুরুর দিকে ভোটারের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি বেড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা নির্বাচন প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে।
আমাদের নির্বাচনের সংস্কৃতির মধ্যে একটি তুলনামূলকভাবে ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। দলীয় সরকারের অধীনেও নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন সরকারদলীয় এমপি প্রার্থী এবং সিটিং এমপির প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এটার মধ্য দিয়ে একটি নজির স্থাপন করা হলো। অনেককে জেল ও জরিমানা করা হয়েছে।
নির্বাচনের দিন সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, বিজিবি, পুলিশ ও র্যা ব মোতায়েন থাকায় এমনিতেই মারামারি হওয়ার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। যারা সংঘর্ষ বাধাতে পারত তারা সশস্ত্র বাহিনীর সামনে এসে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ পায়নি। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টরা কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি করেনি বলে সারা দেশে নির্বাচন নিয়ে তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা দেখা যায়নি।
শক্তি প্রয়োগ কি কখনো গণতন্ত্রের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ? আমাদের দুর্ভাগ্য হলো, আমরা সব সময় মুখে গণতন্ত্র চর্চা করি কিন্তু কার্যত আমরা শক্তি নির্ভরশীল। এটা যতদিন চলতে থাকবে, যতদিন আমরা গণতন্ত্রকে একটি জীবনবোধ এবং মূল্যবোধ হিসেবে গণনা করতে না পারব ততদিন এই সংকট চলতে থাকবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে দাবি করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচনে ৪১.০৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। তিনি জানান, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকে। সরকারের তরফ থেকে আন্তরিকতা ও সহযোগিতা পেয়েছি বলেই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।
শঙ্কা ছিল ভোটার উপস্থিতি আরও কম হবে। নির্বাচন বর্জন করে পরোক্ষভাবে প্রতিহত করার চেষ্টা করা হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে গিয়ে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছে মানুষ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কৌশলী নীতি সফল হয়েছে, এমন কথা বলা ভুল হবে না। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বর্জনের মধ্যে সারাদেশে গড়ে ৪১.০৮ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে এ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রাখেনি। তা ছাড়া নির্বাচন নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অভিমতও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরে। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী এবং বর্তমান সরকারের মন্ত্রীও নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে।
এটিও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রমাণ দেয়। ভোট দেওয়া নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে এর বিধান আছে। এটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের অধিকাররূপে এটি গ্যারান্টিপ্রাপ্ত। মানবাধিকারও বটে। ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণায়ও এটি মানবাধিকার হিসেবে ঘোষিত।
বিরোধী দল তাদের দাবির পক্ষে তারা মিছিল-সমাবেশ করেছে, সরকার পতনের দিন-তারিখ ঘোষণা করেছে, পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে, গণহারে সাংবাদিক পিটিয়ে হাসপতালে পাঠিয়েছে, হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে, প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বাড়িতে হামলা করেছে, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে, রেলপথে নাশকতা করেছে, যার ফলে শিশুসহ অনেকে নিহত হয়েছে। এবারের নির্বাচন অন্য সব নির্বাচনের চেয়ে কিছুটা আলাদা ছিলো। এই একটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। অন্যদিকে যাঁরা মনোনয়ন পাননি, তাঁরাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে পারবেন বলে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা জানিয়ে দেন।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দেশে ও দেশের বাইরে একটি বিশাল শক্তি সক্রিয় ছিলো। আওয়ামী লীগের প্রতীক নিয়ে বা স্বতন্ত্র হিসেবে যাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন, তাঁদের এই বিষয়টি মনে রেখেছেন। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা একটি বড় ঝুঁকি নিয়েছেন। তিনি এমন একটি নির্বাচন করতে চান, যে নির্বাচন প্রমাণ করবে সদিচ্ছা থাকলে একটি দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব। এটাই মনে রেখেছেন যে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা। যত বেশি ভোটার এই নির্বাচনে অংশ নেবে, নির্বাচনের সর্বজনীনতা তত বৃদ্ধি পাবে, যা আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ এই নির্বাচনে যাঁরাই অংশ নিচ্ছেন, তাঁরা চাইছেন। এটি করতে পারলে যাঁরা এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছিলেন, তাঁদের বলার তেমন কিছু থাকবে না।
নির্বাচনের আগে ও পরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়মিত বাহিনী ছাড়াও ৩ জানুয়ারি থেকে মাঠে আছে সেনাবাহিনী। কিন্তু সব কিছু নির্ভর কিছু যেসব দল ও ব্যক্তি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের ওপর।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিই। আমি খুব আনন্দিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে পেরে। এ বিজয় আমার বিজয় নয়, এটি জনগণের বিজয়। দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা জানান। শেখ হাসিনা জানান, এবারের নির্বাচন ছিল ব্যতিক্রমী। সাধারণত দলগুলো প্রার্থী দেয়। এবার আমি প্রার্থী দেওয়ার পাশাপাশি সবার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিই।
তিনি জানান, একটি দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি, কারণ তারা কখনো অংশ নিতে চায় না। যারা মিলিটারি ডিক্টেটরের হাতে তৈরি হয়, তাদের জনসমর্থন থাকে না। নির্বাচনকে তারা ভয় পায়। আমাদের দল হলো জনগণের দল। তিনি উল্লেখ করেন, এবারের নির্বাচনে জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, আমাদের অনেক স্বতন্ত্রও নির্বাচিত হয়েছে এবং অন্য দলগুলো থেকেও নির্বাচিত হয়েছে, দেশের মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি উল্লেখ করেন, এ বিজয় আমার বিজয় নয়, আমি মনে করি এটি জনগণের বিজয়। কারণ এখানে জনগণের যে অধিকারটা আছে, সরকার গঠন করার ক্ষমতা তাদের হাতে, যেটি আমার দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, জনগণের ভোটের অধিকার, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে, বিদেশী পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
আওয়ামী লীগের এবারের লক্ষ্য দেশকে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণ ঘটানো। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা একান্ত প্রয়োজন। এজন্য ‘স্মার্ট নাগরিক’, ‘স্মার্ট সরকার’, ‘স্মার্ট অর্থনীতি’ ও ‘স্মার্ট সমাজ’-এই চারটি স্তম্ভের সমন্বয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজের কথা উল্লেখ করা হয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে যতদিন পর্যন্ত সুস্থ ধারা ফিরে না আসবে, ততোদিন আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দুর্বলতা কাটবে না। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সবার প্রত্যাশা ছিলো। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শোষণহীন বৈষম্যমুক্ত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে পারে।
কোনকিছুতেই ছাড় দেয়া হয়নি এটি বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য একটি উল্লেযোগ্য ঘটনা হতে পারে। দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে নিজেদের প্রতিনিধি বাছাই করার জন্য অপেক্ষা করেছে। বিদেশীরা অতি উৎসাহী হয়ে বসে আছে আমাদের নির্বাচন দেখার জন্য। সবার জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা। আশা করা যায় এই অগ্নিপরীক্ষায় সবাই পাশ করেছে।
কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নির্বাচকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিদ্যমান থাকে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একান্ত প্রয়োজন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে। নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন, শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হয়েছে। কেননা নির্বাচন পরিচালনার সব দায়িত্বই নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যাস্ত।
গণতন্ত্র মানে আত্মমর্যাদা, ন্যায়বিচার, সুশাসন, মানবিক উন্নয়ন অর্থাৎ একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি করা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেকেই শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যে ছিলো। নির্বাচনপূর্ব সহিংসতা, অস্থিরতা বা রাজনৈতিক টানাপড়েন সব সময় থাকে।
জনগণ সবসময় শঙ্কামুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। এ চাওয়া জনগণের মৌলিক অধিকার। এ অধিকারের প্রাপ্তি থেকে জনগণ হোঁচট খেতে চায় না। জনগণের একটি বড় অংশ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর সাধারণ মানুষকে সুখী করাটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব।
ভোটাররা যেন নিরাপদে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন, তারা যেন নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেজন্য প্রথমেই প্রয়োজন নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিলো এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী ছিলো নির্বাচনের কয়েকদিন পর পর্যন্ত। এবারের নির্বাচন জাতির সামনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং দলীয় সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রশংসনীয় নির্বাচন করা সম্ভব তা প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে।
হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক