তেমনি নিরন্তর ছুটে চলা জীবনের এক পথিক ‘যাযাবর।’ যারা প্রকৃতির মধ্যেই জীবনের বৈচিত্র্য খুঁজে পায়। দিনশেষে কোনরকম মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেই কাটিয়ে দিতে পারে রাত। বৃষ্টির পানি বা রোদ এড়ানোই মুখ্য। যাযাবরদের প্রথম পরিচয় তাদের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা নেই। নেই জীবিকা অর্জনের জন্য সভ্য মানুষের রীতি। ধরাবাঁধা চাকরি নেই। ব্যবসা যারা করে সেটাও সাময়িক। নিরন্তর ছুটে চলা এক জীবনের পথিক। ইতিহাস বলে, বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন দেশের ও সম্প্রদায়ের মানুষ বেছে নিয়েছে এমন ছন্নছাড়া জীবনযাপন। এর মধ্যে রয়েছে আকস্মিক যুদ্ধ, খরা বা নদীভাঙ্গন।
উপায় না পেয়েই এই মানুষগুলো যাযাবর জীবনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে। তবে দুর্গম অঞ্চলে যাযাবরদের বিচরণ বেশি দেখা মেলে। দুর্গম পাহাড়-পর্বত কিংবা গহিন অরণ্যে দলবেঁধে থাকে তারা। আবার জলের ওপর ভাসমান নৌকায়, তুষারাচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে শুরু করে মরুভূমির মাঝেও থাকে এরা। বংশ পরম্পরায় এই যাযাবর জীবনই তাদের পরিচয় হয়ে ওঠে। তবে বর্তমানে তাদের সংখ্যা অনেকাংশেই কমে গেছে। যাযাবর বৃত্তি ছেড়ে শহুরে জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে অনেকেই।
যাযাবরদের জীবনযাপন সত্যিই রহস্যময়। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দেখা যায় এদের। অঞ্চলভেদে একেক নাম, আর বেঁচে থাকার বিচিত্রসব পেশা। নর-নারী, শিশুর অদ্ভুত তাদের চেহারা, অদ্ভুত তাদের কথাবার্তা। যাযাবর বলেই এদের জীবন বৈচিত্র্যময়। বৈচিত্র্যময়তাই এদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন মানুষ স্বভাবতই সামাজিক জীব। কিন্তু এরা নির্দিষ্ট কোন সমাজে আবদ্ধ নয়। ঘুরে বেরায় খেয়ালখুশিমতো। এতেই তারা আনন্দ পায়। তাদের মাঝে কখনোই অসন্তুষ্টির ছাপ চোখে পড়েনা।
লেখক : সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ।