নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বার্বিকিউ, বিশেষ দোয়া, আলোচনা, প্রাইমারীতে নির্বাচিত বাংলাদেশী দুই প্রার্থীকে সম্মাণনা জানানো আর ফায়ার ওয়ার্কসহ বর্ণাঢ্য আয়োজনে সাপ্তাহিক বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো ‘ফোর্থ জুলাই’ যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হলো। দিনটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। এবছর ছিলো ২৪৫তম স্বাধীনতা দিবস। রোববার বিকেলে জ্যামাইকাস্থ সাপ্তাহিক বাংলাদেশ কার্যালয়ের সামনে ‘জেএমসি ওয়েতে’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনের সহযোগী আয়োজক ছিলো জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি এবং সহযোগিতায় ছিলো জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)। মূলধারার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠে উৎসবমুখর। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠাস্থলে আলোক সজ্জাও করা হয়। খবর ইউএনএ’র।
বিকেলে চানাচুর-মুড়ি, বার্বিকিউ আর পোলাও-ডাল দিয়ে আগতদের অতিথি আর প্রবাসীদের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্বাধীনতা উদযাপনের অনুষ্ঠান। হাফেজ সাজ্জাদের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এরপর খোলা রাস্তায় মূল মঞ্চে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন জেএমসি’র খতিব ও ইমাম মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। বার্বিকিউ ছাড়াও অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো সন্ধ্যায় আতশবাজী আর বিশাল টিভি স্কীনে ফায়ার ওয়ার্কস প্রদর্শণ। রাত ১০টা পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।
প্রবাসের বিশিষ্ট উপস্থাপক আশরাফুল হাসান বুলবুলের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ডা. ওয়াজেদ এ খান এবং জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। এরপর অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচনে বেসরকারীভাবে ব্রুকলীনের কাউন্সিল ডিষ্ট্রিক্ট-৩৯ থেকে বিজয়ী শাহানা হানিফ-কে ডা. বুশরা ওয়াজেদ, কুইন্স কাউন্টির জজ পদে জয়ী এটর্নী সোমা সাঈদ-কে মাহিয়া শুভ্র এবং ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু-কে ইয়াফিজ ইসলাম ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানায়।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কের ষ্টেট সিনেটর, ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড আই ওয়েপ্রীন, সাবেক এমপি ও সাপ্তাহিক ঠিকানা’র চেয়ারম্যান/ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এম এম শাহীন, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, সিটি নির্বাচনে প্রাইমারীতে বিজয়ী শাহানা হানিফ ও সোমা সাঈদ, ডেমোক্র্যাট পার্টির কুইন্স ডিষ্ট্রিক্ট লীডার এট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী, জেএমসি’র সেক্রেটারী মনজুর আহমেদ চৌধুরী। এসময় ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, উপদেষ্ট সালেহ আহমেদ, বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী ও ডিষ্ট্রিক্ট ২৪ থেকে কাউন্সিলম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মোহাম্মদ সাবুল উদ্দিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমনি সিদ্দিকী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ, ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, সাবেক প্রধান উপদেষ্টা নাসির আলী খান পল, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আল আমীন রাসেল, ডিষ্ট্রিক্ট ২৪ থেকে কাউন্সিলম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মোহাম্মদ সাবুল উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট জুলকার হায়দার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জ্যামাইকায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজেনের প্রশংসা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশ। এই দেশ আমাদের যেমন সবকিছু দিয়েছে তাই এই দেশের জন্য আমাদের করনীয় রয়েছে। আগামীতে আরো বৃহৎ আকারে স্বাধীনতা দিবস তথা ফোর্থ জুলাই’র অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। তারা বেসরকারীভাবে নির্বাচিত শাহানা হানিফ ও সোমা সাইদ-কে অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠানে শাহানা-সোমা বলেন, আমাদের বিজয় বাংলাদেশী কমিউনিটির বিজয়। এই বিজয় ধরে রাখতে হবে। যেকোন নির্বাচনে ভোটে অংশ নিতে হবে। ভোট ছাড়া গণতন্ত্র সুসংহত হয় না, অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায় না। তারা আগামী নভেম্বর অনিুষ্ঠিতব্য জেনারেল ইলেকশনে ভোট দিয়ে চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত করার এবং নতুন প্রজন্মকে মূলধারার রাজনীতিতে উৎসাহিত করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।