নিউইয়র্ক (ইউএনএ): মহামারী করোনায় মৃত্যুবরণকারী যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদ বাকির সহ দলীয় ১৪ নেতা স্মরণে নিউইয়র্কে বিশেষ দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানে গভীর শ্রদ্ধার সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সহ মৃত্যুবরণকারী দলীয় নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্থ্যতাও কামনা করা হয়। বিশেষ করে মরহুম আজাদ বাকির-কে স্মরণ করতে গিয়ে দলীয় নেতৃবৃন্দ আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। খবর ইউএনএ’র।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র ব্যানারে গত ১২ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় আয়োজিত দোয়া-মাহফিলে বিশেষ দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন বিশিষ্ট আলেম, নিউইয়র্কের সানিসাইড মসজিদের ইমাম মাওলানা জুবায়ের আল রশীদ। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৬ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে আজাদ বাকির ইন্তেকাল করে। তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আরো উল্লেখ্য, করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী আজাদ বাকির ছাড়াও কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল এনামুল করীম শহীদ সহ অন্যান্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক খায়ের, আনোয়ারুল ইসলাম বাচ্চু এবং কবি শরাফত সিদ্দিকী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ ও গিয়াস মজুমদার, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী শাহ আলম ভূইয়া, সদস্য সর্দার মোশারফ হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মাহফুজ, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দফতর সম্পাদক তানভির হাসান প্রিন্স, মহিলা দলের নেত্রী রাশেদা ইসলাম মুন, জিয়া পরিষদের সাবেক সভাপতি হাজি আমিরুল হক এবং ব্রুকলীন বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল হাসেম ভূইয়া-কে স্মরণ এবং তাদের বিদেহী আতœার মাগফেত কামনা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুলের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দোয়া মাহফিল শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও বাংলাদেশী-আমেরিকান জাতীয়তাবাদী ফোরামের তিন নেতা যথাক্রমে আনোয়ারুল ইসলাম, নিয়াজ আহমেদ জুয়েল ও শামসুল ইসলাম মজনু বিভিন্ন পর্ব পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ সম্রাট ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস আহমেদ। পরবর্তীতে মরহুম আজাদ বাকিরের মরদেহ দাফন কাজে যারা অংশ (৫জন) নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কামাল সাঈদ মোহন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ এবং বাংলাদেশ সোসাইটির দুই কর্মকর্তা যথাক্রমে মইনুল উদ্দিন মাহাবুব ও মোহাম্মদ নওশেদ হোসেন সংক্ষেপে স্মৃতিচারণ করেন। এসময় অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। উল্লেখ্য, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে মাত্র ৫জন ব্যক্তি মরহুম আজাদ বাকিরের জানাজায় অংশ নেন। তার মরদেহ লং আইল্যান্ডের ওয়অশিংটন মেমোরিয়ালের মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা হয়। ঐ ৫ ব্যক্তির মধ্যে অপরজন ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সহ সভাপতি আব্দুল খালেক খায়ের। পরবর্তীতে তিনিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বছর ইন্তেকাল করেন।
অনুষ্ঠানে উল্লেখিত বক্তারা তাদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আজাদ বাকিরে মৃত্যু সেদিন বিশ্বাস হয়নি। সেদিন এক কঠিন সময় অতিক্রম করেছি। তার মরদেহ দাফন করার লোক পাওয়া যায়নি। আমরা মাত্র ৫জন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার মরদেহ দাফন করেছি। তারা বলেন, ব্যক্তি জীবনে আজাদ বাকির খুব ভালো মনের, পরোপকারী, ন¤্র-ভদ্র, স্বজ্জন মানুষ ছিলেন, দলের নিবেদিত কর্মী ছিলেন। বিএনপি করতে গিয়ে সোনালী এক্সচেঞ্জে তার চাকুরী হারিয়েছেন। বক্তারা বলেন, তার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। তাকে স্মরণ করেই আমাদেও মাঝে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
দোয়া মাহফিলে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন সহ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী সহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সোলেমান ভূঁইয়া, মনজুর আহমেদ চৌধুরী, এডভোকেট জামাল আহমেদ জনি, আনোয়ার হোসেন, এমদাদুল হক কামাল, আবুল কাশেম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম, সৈয়দুল হক, ফিরোজ আহমেদ ও গিয়াস উদ্দিন, ভিপি জহিরুল ইসলাম মোল্লা, বিএনপি নেতা ফারুক চৌধুরী, ফারুক হোসেন মজুমদার, সৈয়দা মাহামুদা শিরীন, নিউইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা অলিউল্লাহ মো. আতিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান সাঈদ, দেওয়ান কাউসার, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলহাজ্ব বাবর উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সুরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এম এ বাতিন, ব্রুকলীন বিএনপি নেতা মাহাফুজুল মাওলা নান্নু, খলকুর রহমান, আরাফাত রহমান কোকো পরিষদ, ইউএসএ’র সভাপতি শাহাদাত হোসেন রাজু, ব্রুকলীন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সোহরাওার্দী, গোলাম মোহাম্মদ, জাকির হাওলাদার, পারভেজ সাজ্জাদ, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম খান, ডা. জাহিদ দেওয়ান, এম এ বাসিত রহমান, বদরুল হক আজাদ, তারেক রহমান মুক্তি পরিষদ, ইউএসএ’র সভাপতি পারভেজ সাজ্জাদ, ইউসুফ আলী, রাফায়েল তালুকদার, রফিক উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম ডালিম, সোহরাব হোসেন, মাইনুল হাসান মুহিত, নাজমুল হাসান বাবু, ইঞ্জিনিয়ার মাইনুদ্দিন, মোহাম্মদ জামাল হক, লং আইল্যান্ড বিএনপির সভাপতি মিয়া আলম পাখী ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুরাদুল হাসান রিয়াজ, রিয়াজ মাহমুদ, আবুল কাশেম, গোলাম মাহমুদ, শামীম আহমেদ, সোহরাব হোসেন, সোয়েব আহমেদ, মোহাম্মদ মুহিদ, সিদ্দিক হোসেন রুবেল প্রমুখ।