নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি (জেবিএফএস) সুপরিচিত নাম। সিটির কুইন্স বরোর জ্যামাইকার কতিপয় তরুণের ভিন্ন চিন্তা-চেতনায় কমিউনিটি বিনির্মানে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ারের নেতৃত্বে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জেবিএফএস। হাঁটি হাঁটি পা পা করে সংগঠনটি তার কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে আজ একটি প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কমিউনিটির গন্ডি পেরিয়ে ফ্রেন্ডস সোসাইটির কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকানদের মাঝে। ইউএস কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু, ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রীন, সাবেক কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান ডিষ্ট্রিক্ট এটর্নী মেলিন্ডা কাটস, সিটি কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো প্রমুখ মূলধারার রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের মুখে মুখে জেবিএফএস’র নাম। গেলো সপ্তাহে নিউইয়র্ক সহ টাই ষ্টেট এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া হ্যারিকেন আইডা আর নজিরবিহীন বৃষ্টি-বন্যায় খতিগ্রস্থ আমেরিকানদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা অজন করেছে সংগঠনটি।
জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে ট্রাইষ্টেট এলকায় বয়ে যাওয়া হ্যারিকেন আইডা আর মারাত্বক বৃষ্টি পর সৃষ্ট তাৎক্ষনিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিউইয়র্কের বিপুল সংখ্যক মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক বাসা-বাড়ী। বেসমেন্টে বৃষ্টির পানিতে আটকা পড়ে কুইন্সের হলিস, এলমহার্স্ট ও ফ্লাশিং এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০/১২জন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পরদিন শনিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাজিও, সিটির আগামী নির্বাচনে ডেমেক্র্যাট দলীয় প্রাইমারীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এরিক অ্যাডামস সহ জনপ্রতিনিধিরা। গত মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসি থেকে দেখতে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নিউইয়র্কের জনপ্রতিনিধিদের সাথে দেখা যায় বাংলাদেশী তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে যেকোন ধরণের সাহাযের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এলাকার সমস্যা নিয়ে কথা বলছেন জনপ্রতিনিধিদের সাথে।
সংশ্লিস্টরা জানান, ফ্রেন্ডস সোসাইটি সহ ইকনা রিলিফ, সাদাকা ফাউন্ডেশন সহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে গত ৫ সেপ্টেম্বর রোববার কুইন্সের ক্ষতিগ্রস্ত হলিস এলাকায় খাবার সহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছে। রান্না করা প্যাকেট খাবার, পানি সহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করে ফ্রেন্ডস সোসাইটি। সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আল আমীন রাসেলের নেত্বত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, উপদেষ্টা ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, উপদেষ্টা ছদরুন নূর, সাবেক সভাপতি সাইফুর ইসলাম প্রমুখ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে সাদাকা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে খাবার বিতরণে অংশ নেন মওলানা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। আরেক সামাজিক সংগঠন ‘ভালো’র পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার সহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার জানান, সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের সহযোগিতায় ফ্রেন্ডস সোসাইটির কর্মকান্ড এগিয়ে চলেছে। এজন্য তিনি সংগঠনের সকল কর্মকর্তা, পৃষ্ঠপোষক, সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সবাল সহযোগিতা না পেলে ফ্রেন্ডস সোসাইটি আজকের অবস্থানে আসতে পারতো না। সামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি মহামারী করোনায় বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে থাকা পর এবার হ্যারিকেন আইডা অঘাত হানার পর দল-মত, ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে সর্বস্তরের আমেরিকানদের পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্রেন্ডস সোসাইটি। ইতিমধ্যেই ফ্রেন্ডস সোসাইটির উদ্যোগে ৫ শতাধিক পরিবারের মাঝে শুকনো ও রান্না করা খাবার সহ অন্যান্য নিত্য প্রযোজনীয় বিতরণ করা হয়েছে। যা মূলধারার জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকদের মাঝে প্রমংসিদ হয়েছে। প্রশংসিত হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ আমেরিকানদের কাছেও। তিনি বলেন, ফ্রেন্ডস সোসাইটির বাংলাদেশী কমিউনিটি ছাড়াও যেকোন আমেরিকানের আপদে-বিপদে পাশে থাকবে।
ফকরুল ইসলাম দেলোয়ার জানান, ফ্রেন্ডস সোসাইটির কার্যক্রম পরিচালনায় অনেকেই সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন। এবার আইডায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় যারা সাহাযের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের মধ্যে গ্রেটার নোয়াখালি সমিতি ইউএসএ’র সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহিদ মিন্টুর অবদান অনস্বীকার্য।