নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বাংলাদেশ থেকে আর নিউইয়র্কে ফেরা হলো দেলোয়ারা বেগমের। অবশেষে না ফেরার দেশেই চলে যেতে হলো। বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্ক আসার পথে কানাডায় প্রাণ হারালেন মোছাম্মৎ দেলোয়ারা বেগম (ইন্না লিল্লাহে ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, এক পুত্র, এক কন্যা ও নাতি নাতনি সহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে যান। তার গ্রামের বাড়ী মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া ইউনিয়নের চরচাষী। খবর ইউএনএ’র।
জানা গেছে, নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় সপরিবারে বসবাসকারী মোহাম্মদ শাহজাহান সরকার গত ১৮ আগষ্ট মঙ্গলবার তার স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম এবং মেয়েকে সাথে নিয়ে টার্কিশ এয়ারলাইন্স যোগে নিউইয়র্ক আসছিলেন। বিমানটি তখন কানাডার আকাশ সীমায় এবং সেটি নিউইয়র্কে পৌঁছাতে আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকী। এসময় নিজ আসনে বসা দেলোয়ারা বেগম হঠাৎ ঢলে পড়েন। পরবর্তী এবং ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিমানের পাইলট কানাডার কুইবেক ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করেন। সেখানে দেলোয়ারা বেগমকে জরুরী চিকিৎসার জন্য নামিয়ে রেখে টার্কিশ এয়ারলাইনসের বিমানটি প্রায় সাড়ে তিনশত যাত্রীর সবাইকে নিয়ে নিউইয়র্ক চলে আসে। পরে শাজাহান চৌধুরীর পরিবারকে দেলোয়ারা বেগের মৃতু্যু সংবাদ জানানো হয়। তবে তার মৃত্যুর সঠিক কারন জানতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
মরহুমা দেলোয়ারা বেগম-এর পুত্র মোহাম্মদ মুকুল মিয়া বৃহস্পতিবার ইউএনএ প্রতিনিধি কে জানান, বিগত ৬ বছর ধরে তার মা-বাবা সহ পরিবারের সদস্যরা নিউইয়র্কে বসবাস করছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার পর পরই কানাডার ইমিগ্রেশনের এক কর্মকর্তা তাকে ফোনে জানান যে, তার মা বিমানেই মারা গেছেন। তবে তার কোন শারীরিক সমস্যা ছিলো না বা তিনি অসুস্থ ছিলেন না। তিনি বলেন, তার মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে বিমানটি জরুরী অবতরণ করলে তার (দেলোয়ারা বেগম) অবস্থা নিশ্চিত হতেই তাকে বিমান থেকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার বাবা ও ছোট বোন অন্যান্য যাত্রীদের সাথে নিউইয়র্কে ফিরে আসেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাহজাহান সরকার-কে তার স্ত্রীর মুত্যুর খবর জানানো হয়নি।
মোহাম্মদ মুকুল মিয়া জানান, তার মায়ের মরদেহ বর্তমানে স্থানীয় ফিনেরাল হোমে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে মরদেহ বাংলাদেশ পাঠাতে কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তারা সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। তবে কবে নাগাদ কিভাবে কোন ফ্লাইটে মায়ের মরদেহ দেশে পাঠানো হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কেননা, টার্কিশ এয়ারলাইন্স-এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি জানান, মায়ের মরদেহ দেশে পাঠানো না পর্যন্ত ফিউনারেল হোমে রাখা সহ আনুসঙ্গীন খরচ তাকেই বহন করতে হবে। অপরদিকে বাংলাদেশে মরদেহ পাঠাতে কোন ফ্লাইট ও টিকিট পেতেও সমস্যা হচ্ছে। তবে টিকিট আর ফ্লাইট নিশ্চিত হলে তিনি সহ পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশে গিয়ে মায়ের মরদেহ দাফন করার প্রস্তুুত নিচ্ছেন।