নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্কের মুক্তধারার কর্ণধার বিশ্বজিৎ সাহার বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্ট অব দ্যা ষ্টেট অব নিউইয়র্ক কাউন্টি অব কুইন্স কোর্টে প্রতারণার মামলা হয়েছে। বাদীর নাম ফারহানা আক্তার। গত ১৭ অক্টোবর এই মামলার অভিযোগ করা হয় বলে জানা গেছে। মামলার ইডেক্স নং ৭২৪৩২৭/২০২১, রিসিভডএনওয়াইএসসিইএফ: ১১/০১/২০২১। মামলায় বিশ্বজিৎ সাহা, মুক্তধারা ইনক, মুক্তধারা নিউইয়র্ক ইনক, মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ইনক এবং জনৈকা ইশমত আরা জাহান-কে বিবাদী করা হয়েছে। খবর ইউএনএ’র।
বাদী তার মামলায় উল্লেখ করেন যে তার দুই বন্ধু/পরিবারের সদস্য ভিজিট ভিসায় আমেরিকা আসার চেষ্টা করে বারবার ব্যর্থ হলে পরিচিতজনদের পরামর্শে বাদী নিউইয়র্ক মুক্তধারার কর্ণধার বিশ্বজিৎ সাহা ও ইসমত আরা জাহানের সাথে যোগাযোগ করেন। মুক্তধারার জ্যাকসন হাইটস অফিসে যোগাযোগ করার পর প্রথমে লোকজনদেরকে ভিসা করিয়ে দেয়ার কথা অস্বীকার করলেও কথাবার্তার এক পর্যায়ে তারা তাকে সহায়তা করার আশ্বাস দেন এবং দেশ ও প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সহজেই ভিসা পাওয়ার আশ্বাস দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এজন্য মাথাপিছু ৫০ হাজার ডলার ফি ধার্য করা হয়। এসময় মাথাপিছু ফি ৫০ হাজার শুনে বাদী প্রচন্ড অবাক হল এবং পরবর্তীতে দুইজনের জন্য ৮০ হাজার ডলারে চুক্তি হয়। ষাট হাজার ডলার অগ্রিম আর ভিসা পাওয়ার পর পাসপোর্ট নেয়ার আগে বাকী অর্থ দেওয়া হবে এবং চুক্তির অর্থ শুধুমাত্র ক্যাশ দিতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী বাদী একজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ষাট হাজার ডলার প্রদান করা হয়। কিন্তু ভিসা হচ্ছিলো না; বিশ্বজিৎ সাহা বা ইসমত আরা জাহানও কোন প্রকার যোগাযোগ করছিলেন না। অত্যন্ত কৌতূহলী হয়ে বাদী একদিন কল করলে বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘আর একবার ফোন করলে সব চুক্তি শেষ।’ বলেই ফোন কেটে দিয়েছিলেন। পরে বাদীকে জানানো হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্ক আসছেন। প্রধানমন্ত্রী’র ডেলিগেট হিসেবেই বাদী’র বন্ধু/পরিবারের সদস্যরা চলে আসবে। কিন্তু বন্ধু/পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে না আসায় বাদী বিশ্বজিৎ সাহা ও ইসমত আরা জাহানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তবে প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে থাকাকালীন সময়েই বাদীকে ব্লক নম্বর থেকে হুমকি দেয়া হয়। ফলে বাদী নিরূপায় হয়ে কোর্টের স্মরণাপন্ন হয়েছেন।
এব্যাপারে গত ৭ নভেম্বর, রোববার বিশ্বজিৎ সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই মামলার ব্যাপারে আমি বিস্তারিত জানিনা। আর মামলার বাদীকেও আমি চিনতে পারছি না। তার কোন ঠিকানাও নেই। ‘কেউ কি কাউকে ক্যাশ যাট হাজার ডলার দেয় বা এতো অর্থ হাতে রাখেন’- এমন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আমি মামলা আর বাদীর ব্যাপারে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। তবে আনগতভাবেই বিষয়টি মোকাবেলা করা হবে। বিশ্বজিৎ সাহা আরো বলেন, বাদী আদৌ আমাকে ফোন করেছে কিনা? কবে করেছে এবং আমার সাথে সরাসরি দেখা করেছে কিনা? তা যাচাই-বাছাই করতে আমি ইতিমধ্যে আমার মোবাইল ফোনের কল লিষ্ট সংগ্রহ করছি। সেই সাথে মুক্তধারা’র সিসি ক্যামেরার ভিডিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।