নিউইয়র্ক (ইউএনএ): যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বৃহত্তর সিলেটবাসীদের সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার আসন্ন নির্বাচন ঘিরে প্রবাসী জালালাবাদবাসীদের মাঝে নানা আলোচনা চলছে। বাড়ছে উদ্বেগ-উত্তেজনা বাড়ছে। আগামী মার্চের মধ্যে এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এদিকে অতীতের মতো এবারও একাধিক প্যানেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শীর্ষস্থানীয়রা একক প্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পক্ষে থাকলেও অপর একটি অংশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। অপরদিকে আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আরো প্রার্থীর নাম উঠে আসছে। ফলে জমতে শুরু করেছে এই নির্বাচন। ইউএনএ’র।
সূত্র মতে, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সভাপতি পদে ইতিমধ্যেই সংগঠনের বর্তমান সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল, সাবেক সভাপতি বদরুল হোসেন খান, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদুল হক ছানুর নাম আলোচনায় আসলেও আবার নতুন করে এই পদে প্রার্থী হিসেবে ওজনপার্কের সাবেক বাসিন্দা, বর্তমানে পেনসেলভেনিয়ায় বসবাসকারী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নানু’র নাম শুনা যাচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক পদে এসোসিয়েশনের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ মইনুল ইসলামের পাশাপাশি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দরুদ মিয়া রনেল এবং সাইকুল ইসলাম আগ্রহী বলে জানা গেছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সেলিম বার্তা সংস্থা ইউএনএ প্রতিনিধি-কে জানান, এখনো ভোটার তালিকা হাতে পাইনি। তাই নির্বাচন বিষয়ে কোন উদ্যোগ বা তফসিল ঘোষণা করতে পারছি না। তিনি জানান, কার্যকরী পরিষদের কাছ থেকে ভোটার তালিকা পেলেই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবো। তিনি বলেন, আগামী রোববার (৩০ জানুয়ারী) কার্যকরী পরিষদ ও ট্রাষ্টিবোর্ডের সাথে নির্বাচন কমিমনৈর বৈঠক হওয়ার কথা। আশা করছি ঐদিনই আমরা ভোটার লিষ্ট পাবো। তিনি বলেন, আমরা (ইসি) যথাসময়েই নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাই। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সূত্র মতে, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নির্বাচনে ‘বদরুল-মইনুল’ প্যানেল চুড়ান্ত বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এছাড়াও সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল ও সহ সভাপতি আহবাব হোসেন চৌধুরী খোকন অর্থাৎ ‘হেলাল-আহবাব’ প্যানেল নিয়েও আলোচনা চলছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি মাসুদুল হক ছানু স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। দরুদ মিয়া রনেল, সাইকুল সাধারণ সম্পাদক পদে প্যানেল অথবা স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হতে আগ্রহী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কর্মকান্ডে কিছুটা স্থবিরতা বিরাজ করছে। বিশেষ করে বিগত ও বর্তমান কমিটির প্রতিশ্রুতি মোতাবেক নিউইয়র্কে জালালাবাদ ভবন নির্মাণের বিষয়টি শুধু মুখে মুখেই ঘোরপাক খাচ্ছে। এনিয়ে জালালাবাদবাসীদের মধ্যে ক্ষোভও বিরাজ করছে। অথচ এক সময় জালালাবাদ এসোসিয়েশন কমিউনিটির একটি আলোচিত এবং অন্যতম বড় সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হতো। সেই সংগঠনের সদস্যদের আগ্রহ-উদ্দীপনায় হ্রাস পেয়েছে।
সংশ্লিস্টরা জানান, এসোসিয়েশনের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে বিশেষ করে জালালাবাদ ভবন নির্মাণের প্রকল্প সম্পন্ন করতে আবার সভাপতির দায়িত্ব নিতে চান সাবেক সভাপতি বদরুল হোসেন খান। তার সাথে তিনি বর্তমান কোষাধ্যক্ষ মইনুল ইসলাম-কে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চান। অপরদিকে এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আবার প্রার্থী হতে চান। পাশাপাশি মাসুদুল হক মনে করেন যোগ নেতৃত্বের অভাবে জালালাবাদ এসোসিয়েশনে যে স্থবিরতা এসেছে তা কাঠিয়ে উটৈ সংগঠনেকে চাঙ্গা করতে চান।
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নির্বাচন প্রসঙ্গে দরুদ মিয়া রনেল বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন-কে আমরা কারো পকেট সংগঠনে বানাতে চাই না। আমরা চাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এসোসিয়েশনে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হোক। এজন্যই আমি নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছি। আমার কাছে জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, সংগঠনকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চালানোই বড় কথা।
অপর প্রার্থী সাইকুল ইসলাম বলেন, পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হচ্ছি। সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার সন্তান সাইকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে জালালাবাদ এসোসিয়েশনে স্বচ্ছতা এবং কর্মতৎপর পরিবেশ প্রয়োজন। দীর্ঘদিন হয়ে গেলো এসোসিয়েশনের নিজস্ব কার্যালয় নেই। এই শূন্যতা পূরণে কাজ করবেন বলে জানান সাইকুল ইসলাম। তাছাড়া তিনি নির্বাচিত হলে জালালাবাদ এসোসিয়েশনকে প্রবীণ এবং নবীনের মধ্যেসমন্নয় করে পরিচালিত করবেন। নতুন প্রজন্মকে নিয়ে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবেন- এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করবেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বৃহত্তর সিলেটের চার জেলার ৩৯ উপজেলার বাসিন্দারা ভোট দিয়ে থাকেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নির্বাচনে। বিভিন্ন কারণে বিগত দুই টার্ম ধরে এসোসিয়েশনের নির্বাচন হচ্ছে না। ২০১৭ জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আগামী নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যেই গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন। কমিশনের কর্মকর্তারা হলেন: প্রধান নির্বাচন কমিশনার- আতাউর রহমান সেলিম, কমিশনার যথাক্রমে মোশারফ আলম (সুনামগঞ্জ, নিউজার্সী), সাব্বির হোসেন (হবিগঞ্জ), মিনহাজ আহমেদ সাম্মু (মৌলভীবাজার) ও আহমদ হাকিম (সিলেট)।