নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্কে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ওজন পার্কে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলীতে এক বাংলাদেশী যুবক নিহত হয়েছেন। তার নাম খন্দকার মোদাচ্ছের, ডাক নাম জিতু (৩৬)। স্থানীয় গ্লেনমোর এভিনিউয়ের কাছে ফরবেল স্ট্রিটে বুধবার রাত ১২টার দিকে এই হত্যাকান্ড ঘটে। এই ঘটনায় বাংলাদেশী কমিউনিটিতে উদ্বেগ-আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহত খন্দকার মোদাচ্ছের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ বলে জানা গেছে। তিনি ওজন পার্কের ২০০ ফরবেল স্ট্রীটের বাসায় মা, স্ত্রী ও ৪ বছরের সন্তান নিয়ে বাস করছিলেন। খবর ইউএনএ’র।
জানা যায়, খন্দকার মোদাচ্ছের জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্র্মস্থল থেকে বাসয় ফেরার পথে ওজন পার্কের গ্লেনমোড় ও ফরবেল স্ট্রিটের কর্ণারে গুলীবিদ্ধ হন। অজ্ঞাত বন্দুকধারী পরপর দু’টি গুলী করে দ্রুত চলে যায়। গুলীর শব্দ পেয়ে কে বা কারা ৯১১-এর কল করার পর খবর পেয়ে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাকে (খন্দকার মোদাচ্ছের) অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একটি সূত্র জানায়, দূর্বৃত্তরা গাড়ি ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে তিনি বাঁধা দিলে দূর্বত্তরা তাকে গুলি করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এদিকে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারী) ওজনপার্কের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম। তিনি হত্যাকান্ডটিকে অনভিপ্রেত উল্লেখ করে নিহতদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সম্ভাব্য সকল সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, এই ওজন পার্কেই ২০১৬ সালে বাংলাদেশী দু’জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে দিনে দুপুরে মোটর গুলি করে হত্যা করা হয়। এর আগে একই এলাকায় দৈনিক ইনকিলাবের ফটো সাংবাদিক মিজানুর রহমান খুন হয়েছিলেন। দূর্বত্তরা তাকে ব্যাট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। প্রবাসীদেও দাবীর প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে সিটি প্রশাসন সাংবাদিক মিজানের নামে ফরবেল স্ট্রীটের একাংশের নামকরণ ‘মিজানুর রহমান ওয়ে’ করে।
আরো উল্লেখ্য, সাম্প্রতিকালে নিউইয়র্ক সিটিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। প্রায়ই সিটির বিভিন্ন এলাকায় গোলাগুলি ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশীরাও সন্ত্রাসী হামলা শিকার হচ্ছেন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটিতে শতাধিক গুলির ঘটনা ও হামলা হয়েছে। গুলিতে নিউইয়র্ক পুলিশের দু’জন অফিসারও নিহত হয়েছেন। নিউইয়র্কের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটনায় গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিউইয়র্কে সফর করে। প্রেসিডেন্ট ম্যানহাটনস্থ পুলিশ প্রধান কার্যালয়ে নিউইয়র্কের গভর্ণর ক্যাথি হুকুল ও মেয়র এরিক এডামস’র সাথে বৈঠকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। তারপরও সিটির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় জনমনে ভীতি বাড়ছে।