নিউইয়র্ক (ইউএনএ): সম্প্রীতির বন্ধনে ইয়েলো সোসাইটি নিউইয়র্ক-এর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হলো। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির ফ্লাশিংস্থ গুজরাটি সমাজ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি ছিলো সংগঠনের নবম বার্ষিক পুনর্মিলনী। অবশ্য করোনা মহামারীর কারণে গত দু’বছর এমন আয়োজন সম্ভব হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। খবর ইউএনএ’র।
নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসকারী পেশাদার বাংলাদেশী ইয়েলো ক্যাব চালকদের গর্বিত সংগঠন ইয়েলো সোসাইটি নিউইয়র্ক ইনক’র ব্যতিক্রমী এবারের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সভাপতি সালমান জাহিদ জুয়েল এবং সাবেক সভাপতিদের পক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। মাঝে ইয়েলো সোসাইটির বর্তমান কার্যকরী পরিষদের কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এর আগে প্রধান অতিথি ও সাবেক সভাপতিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পেশাজীবিদের সংগঠন হিসেবে ইয়েলো সোসাটির কর্মকান্ডের ভূয়শী প্রশংসা করে বলেন, নিউইয়র্ক সিটি সহ কমিউনিটিতে তাদের অবদান উল্লেখ করার মতো। তিনি সংগঠনের সফলতা কামনা করেন এবং দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণে প্রবাসী বাংলাদেশীদেরও প্রশংসা করে বলেন হুন্ডির মাধ্যমে নয়, বৈধপথে দেশে অর্থ প্রেরণের জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
মোহাম্মদ শাহ আলম তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ইয়েলো সোসাইটির সদস্যদের সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির উপর গুরুত্বোরোপ করে বলেন, মহামারি করোনার কারণে আমরা অনেকদিন পর একত্র হতে পেরেছি। এই প্রীতি অক্ষুন্ন রাখতে হবে। এসময় তিনি সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে যারা ইন্তেকাল করেছেন তাদের গভীরভাবে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী এস আই টুটুল তার গান পরিবেশনার সময় ইয়েলো সোসাইটির প্রশংসা করে বলেন, এই সংগঠনের অনেকেই আজ আমেরিকান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পেশাজীবি। ছাত্রাবস্থায় তারা কষ্ট করে, সংগ্রাম করে ইয়েলো ট্যাক্সি চালিয়ে বড় হয়েছেন। তাই তারা শ্রদ্ধার পাত্র। তাদের নিয়ে গর্ব করতে পারি। প্রশংগত তিন বলেন, জীবনের এপিঠ-ওপিঠ থাকে। আমাকে নিয়ে অনেক কথাই বলা হচ্ছে, শুনা যাচ্ছে, লেখালিখি হচ্ছে। যার সবই ঠিক না। আমি ভুল করলে শিখবো। ভক্তদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন: তবে একটা কথা বলতে পারি- ‘আমি আপনাদের সম্মান রাখবো’।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিলো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ এম রহমান। এতে কবিতা আবৃত্তি করেন শরফুজ্জামান মুকুল। সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী তানভীর শাহীন। এরপর মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করেন জেরিন মাইশা। এছাড়াও নাটক ও কৌতুক পরিবেশন করেন বাংলাদেশ থিয়েটার অব আমেরিকা (বিটিএ) এর শিল্পীরা। নাটকে অংশ নেন, স্বপ্না কাওসার, ফজলুল কবীর ও শামীম আল মামুন। কৌতুক পরিবেশন করেন আলমগীর চ ল ও শামীম আল মামুন। সবশেষে সঙ্গীত পরিবেশন করেন এস আই টুটুল। যন্ত্র সঙ্গীতে ছিলেন নিউইয়র্কের ‘মাটি ব্যান্ড’। এই পর্ব উপস্থাপনায় ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী শিরিন বকুল।
অনুষ্ঠানটি সফল করতে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান, যুগ্ম অহ্বায়ক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ এ বেলাল সিকদার, মোহাম্মদ টি হোসেন তোফা, আনিসুর রহমান লিপ্টন ও এম ডি হাসান আলী। অনুষ্ঠানটি উপলক্ষ্যে ‘সম্প্রীতি’ শীর্ষক একটি স্মরনিকা প্রকাশ করা হয়।
প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত চলা অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদিœ দেওয়ান সহ প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং ইয়েলো সোসাইটির বিপুল সংখ্যক সদস্য সপরিবারে উপভোগ করেন।