নিউইয়র্ক (ইউএনএ): আগামী ১০ ফেব্রুয়ারী থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ২১টি রাজ্যের ৫১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ‘মেইড ইন চিটাগং’। ২০২৩ সালের প্রথম পরিবেশনা হিসেবে সম্পূর্ণ চট্টগ্রামের ভাষায় নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মেইড ইন চিটাগং’-কে বায়োস্কোপ ফিল্মস যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী শুক্রবার ১০ ফেব্রুয়ারী নিউইয়র্কের জামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা সহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২২টি শহরে ছবিটি প্রদর্শিত হবে। জামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমায় সপ্তাহব্যাপী ২৮টি শো প্রদর্শিত হবে। দ্বিতীয় সপ্তাহে হল সংখ্যা বাড়াবার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। খবর ইউএনএ’র।
নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসস্থ বাংলাদেশ প্লাজা মিলনায়তনে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বায়োস্কোপ ফিল্মস এর অপর কর্ণধার রাজ হামিদ উপরোক্ত তথ্য জানান। অনুষ্ঠানে পার্থ বড়–য়া ও ছবিটির প্লাটফ্রম প্রোডিউসার আরমান আহমেদ সিদ্দিকী, অভিনেতা সাজু খাদেম, ছাড়া বায়োস্কোপ ফিল্মস এর অপর কর্ণধার নাওশাবা রশিদ অনলাইনে/ভিডিও বার্তায় যোগ দেন। রাজ হামিদ ছাড়াও ছবিটির প্রযোজক রূপকথা প্রোডাকশন্স এর কর্ণধার এনামুল কবির সুজন উপস্থিত সাংবাদিক ও সুধীবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএ’র নেতৃবৃন্দ ছাড়াও প্রবাসী চট্টগ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এবং দেশের বাইরে ‘মেইড ইন চিটাগং’ এর একটি গান ‘পেট পুরাদ্দে তুয়ারলাই’ প্রচন্ড জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনুষ্ঠানে সেই গানটি পরিবেশনের পাশাপাশি সিনেমার অংশবিশেষ দেখানো হয়। ছবিটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- সোলস্ খ্যাত সঙ্গীত শিল্পী পার্থ বড়–য়া ছাড়াও অপর্ণা ঘোষ, সাজু খাদেম, নাসিরুদ্দিন, মুকিত জাকারিয়া এবং চিত্র লেখা গুহ।
জনকীর্ণ এই অনুষ্ঠানে রাজ হামিদ বলেন- কোভিড এবং তার পরবর্তী সময়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তাময় একটি সময় কাটিয়েছি। আমার মনে হয়, এখন সবার একটু হাল্কা হওয়া উচিৎ, একটু হাসা উচিৎ। ‘মেইড ইন চিটাগং’ ছবিটি একটি রম-কম রোমান্টিক কমেডি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে হেসে-আনন্দে দেখবার মত একটিছবি।
বায়োস্কোপ ফিল্মস শুধু আমেরিকায় নয় ‘মেইড ইন চিটাগং’ ছবিটি কানাডা এবং মধ্যপ্রাচ্য এর দুবাই, ইউএই, কুয়েত, সৌদি আরব এবং ওমানেও পরিবেশনার দায়িত্ব নিয়েছে। ‘মেড ইন চিটাগং’ ছবিটি বাংলা এবং ইংরেজি দুটি ভাষায় সাব-টাইটেল করা থাকবে বলেও জানান রাজ হামিদ।
বায়োস্কোপ ফিল্মস এর অপর কর্ণধার নাওশাবা রশিদ বলেন, ‘আঞ্চলিক ভাষায় হলেও এই ছবিটিতে শক্তিমান অভিনেতারা রয়েছেন। মজার গল্পে ছবিটি করা। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জিনিস গুলো যেমন- জব্বার এর বলিখেলা, বেলাবিস্কিট, মেজবান রান্না, সব এই ছবিটিতে আছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে ছবিটিতে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে রাজ হামিদ বলেন, দর্শকদের চাওয়া-পাওয়া আর রুচির উপর অনেক সময় ছবির সফলতা নির্ভর করে। আর যেসব ছবি ঢাকা বাংলাদেশে সফল হয়নি সেকল ছবি যুক্তরাষ্ট্রে সফল হয়েছে এখানকার দর্শকদের জন্যই।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী ভালো ছবি পরিবেশন করতে বদ্ধ পরিকর। যদিও শুরুতে নানা সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে। বিশেষ করে আর্থিক যোগান আর আস্থার বিষয়টি ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা আমাদের সততা আর কমিটমেন্ট দিয়ে সেই আস্থা অর্জন করেছি বলেই অনেকই ছবি পরিবেশন করতে পারছি। এজন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আমরা বিভিন্ন ছবির কর্মকর্তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও বাংলা ছবি পরিবেশন করবো। আর ঐ ছবিগুলো বাংলা-ইংরেজী ছাড়াও প্রয়োজনে আরবী ভাষায় টাইটেল ব্যবহার করা হবে। যদিও এসব খুবই ব্যয়বহুল।
এক প্রশ্নের উত্তরে এনামুল কবির সুজন বলেন, বাংলাদেশে সিনেমা হলগেুলোর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। সরকার অনেক সিনেমা হল ভেঙ্গে সিনেপ্লেক্স বানাচ্ছে। ফলে অনেক ছবিই দর্শকরা হলে গিয়ে দেখতে পারছেন না।
বাংলাদেশ থেকে ভিডিও বার্তায় সরাসরি অংশ নিয়ে ‘মেইড ইন চিটাগং’ এর নায়ক ও জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী পার্থ বড়–য়া তার নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে বলেন, ছবিটি করতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হয়েছে। অনেকের কাছ থেকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। তবে চিটাগাং-এর সন্তান হিসেবে চ্যালেঞ্জ নিয়েই ছবিটি করেছি।
এক প্রশ্নের উত্তরে পার্থ বড়–য়া বলেন, আমি নায়ক হতে ছবিটি করিনি। আমি শিল্পী, দেশ-বিদেশের অনেকেই আমাকে চিনেন, ভালোবাসেন। তাই চ্যালেঞ্জ নিয়েই ছবিটি করেছি। ছবিটির ভালো-মন্দ বিচার করবেন দর্শক।