নিউইয়র্ক (ইউএনএ): যুক্তরাষ্ট্র জিয়া পরিষদের সভায় বিএনপি প্রবর্তিত ’৭৫-এর সাতই নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’-কে সরকারীভাবে পালনের দাবী জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ আর দেশপ্রেমের সাথে ঐদিনের ঘটনা ওতোপ্রতভাবে জড়িত। সেদিনের ‘সিপাহী-জনতার ঐক্য আর সংহতি’ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বন্দীশালা থেকে মুক্ত করে দেশ রক্ষার পাশাপাশি নতুন ইতিহাস রচিত হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ কোনদিন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়নি বরং এই দিন নিয়ে সরকারী ও দলীয়ভাবে মিথ্যাচার করেছে। ঐদিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করে দিনটি সর্বজনীনভাবে সকল দলেরই পালন করা উচিৎ। সভায় বক্তারা বলেন, সেদিনের পথ ধরেই জিয়া বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। তাই দেশের ক্রান্তিকালে সাতই নভেম্বরের চেতনায় বিএনপিকে দেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। খবর ইউএনএ’র।
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র জিয়া পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথা বলেন। রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হলে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহহিল মাসুদ। এসময় তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শহীদ জিয়ার প্রতি গভীল শ্রদ্ধা জানান এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ৭১-এর পর আমরা ২০২৪-এ নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে সকল বাংলাদেশীকে দেশ ও প্রবাসে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। শহীদ জিয়াকে নিয়ে আরো গবেষণা আর বিএনপিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র জিয়া পরিষদের আহ্বায়ক শামসুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ডা. আব্দুস সবুর, ড. মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি বিএনপ নেতা ও সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মোবাশ্বের হাসমী, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন সবুজ ও ফারুক হোসেন মজুমদার ও বরিশাল বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা লুৎফর রহমান লাতু।
যুক্তরাষ্ট্র জিয়া পরিষদের সদস্য সচিব জাকির হাওলাদারের পরিচালনায় সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আব্দুস কদ্দুস হাওলাদার। পরবর্তীতে অতিথি সহ আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের সদস্য হারুনুর রশীদ, হানিফ চৌধুরী, মোতাহার হোসেন ও এডভোকেট জাকির খন্দকার, সাবেক ছাত্রনেতা মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় বক্তারা ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যাচার, নিপীড়ন-নির্যাতন আর গণ বিরোধী কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করেন এবং আওয়ামী লীগের এসব কর্মকান্ডের জন্য দলটি নিষিদ্ধ করারও দাবী জানান। পাশাপাশি বক্তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপিকে সচেতনতার সাথে দায়িত্ব ও ভূমিকা পালন এবং দেশের কোন কোন জায়গায় বিএনপি’র নামে চাঁদাবাজী ও দখল বন্ধের জন্য কেন্দ্রের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুল ইসলাম মজনু বলেন, জিয়া পরিষদ গতানুগতিক সংগঠন নয়, এটি একটি গবেষণামূলক রাজনৈতিক সংগঠন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া, তার আদর্শ, লক্ষ্য, কর্মকান্ড নিয়ে দেশে-বিদেশে বেশী বেশী গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। আমরা প্রবাস থেকে সেই কাজে ভূমিকা রাখতে প্রবাসী সকল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তির সার্বিক সহযোগিতা চাই।