আজ সকালে আমার ফেসবুকের এক বন্ধুর স্ট্যাটাস দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারলাম না । দীর্ঘদিন আমার ফেসবুকে থাকা এ বন্ধুর নাম কামাল আহমেদ । ফেসবুক প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী তার বাড়ি পাবনা । কামাল আহমেদ একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সেকালের নির্ভীক সাংসাদিক, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, লেখক সর্বজনশ্রদ্ধেয় কামাল আহমেদ থাকেন ঢাকা । আমার সাথে তার খুব বেশি কথা হয় না । তবে বিভিন্ন সময় তার ছবি বা অন্য কিছুতে কমেন্ট করি । শুভ কামনা জানাই সৃস্টিকর্তা তাকে যেন সুস্থ্য করে তোলেন । নিচে তার ফেসবুক স্ট্যাটাস টি তুলে ধরলাম ।
//একাত্তরে পা//
আমার চরম দুর্ভাগ্য যে কোভিড-১৯ নভেল করোনা ভাইরাস শরীরে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার মধ্যেই সত্তর পেরিয়ে আজ একাত্তরে পা রাখলাম।
উনিশশো একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অন্তত একদফা নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার মাধ্যমে যখন দ্বিতীয় জীবন শুরু হয়েছিল তখন বয়স ছিল ২১। এখন একাত্তরে পা দিয়ে আল্লাহর অপার অনুগ্রহে আপনাদের সকলের দোয়ায় করোনাকে যদি জয় করে আরেক দফা বেঁচে যাই, তাতে যে জীবন শুরু হবে তাকে কি ‘তৃতীয় জীবন’ বলা যাবে?
জীবনসংগ্রামে রত থেকে ৭০ বছরের পথ চলায় সফলতা-ব্যর্থতা বা চাওয়া-পাওয়ার চুলচেরা হিসাব করার অবকাশ হয়নি কখনো। মোটা দাগে জীবনের অর্জন বলতে একমাত্র সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ছাড়া এ জীবনের উল্লেখযোগ্য অর্জনও তেমন কিছু নেই। অথচ সেখানেও কষ্ট। কেননা বাংলাদেশের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গ ঠাঁই পায়নি। অন্যদিকে রাষ্ট্র কর্তৃক গত ৪৯ বছরে রণাঙ্গনের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা না করার অমার্জনীয় ব্যর্থতার কথাও কোন সময়ই ভুলতে পারিনা। এসব সত্ত্বেও কারো প্রতি কোন অভিযোগ না রেখে গোটা জীবনের দিকে ফিরে শুধু এ টুকুই বলতে চাই—
“যা পেয়েছি সেটুকুতেই খুশি আমার মন”!
ফেসবুক বন্ধুরা, আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় করোনাকে পরাজিত করে যদি বেঁচে থাকি তবে আবারও দেখা হবে। তেমনটা না হলে আপনারা আমাকে নিজ নিজ গুণে ক্ষমা করবেন।
তথ্যসূত্র : কামাল আহমেদের ফেসবুক আইডি । সম্পাদনায় : প্রবীর সাহা- বিজয় টেলিভিশনের পাবনা প্রতিনিধি ও সাধারন সম্পাদক : বাংলাদেশ -ভারত সম্পীতি পরিষদ পাবনা জেলা কমিটি ।