কড়া নাড়ছেন তিনি,স্মৃতির দরজায় মায়াবী আঙুলে, যে আঙুল গিটারের রোমান্টিক দ্যোতনা জাগিয়েছিল। সুরেলা কণ্ঠে গেয়েছেন,স্বপ্নের মতো ‘স্মরণের জানালায় দাঁড়িয়ে থেকে তুমি আমায় ডেকো!’
ইন্দ্রজালে ভেসে মানুষের গভীর-গহীন মর্মে প্রবেশ করেছিলো তাঁর গানের কথা,সুর। তিনি গেয়েছিলেন, ‘আমায় ডেকো না’, কিন্তু মানুষ তাকে বার বার কাছে ডাকছে। স্বতন্ত্র পরিচিতিতে দীপ্ত হয়েছেন অনুপম নিজস্বতায় ও স্বকীয়তায় তাই তিনি হারিয়ে যাননি। বাংলাদেশের সংগীতের দিগন্তে তার গানগুলো মায়াবী দোলা দিয়ে যায় মৃত্যুর পরেও। এই নীল মণিহার’, ‘আবার এসেছে সন্ধ্যা’ ইত্যাদি গান দিয়ে হয়েছিলেন লেলিহান তারুণ্যের সঙ্গীতময় আইকন। তিনি তার সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্যকে অটুট রাখেন লালিত্যময় মেলোডি ও স্পর্শকাতর গায়কী দিয়ে।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম উচ্চারণে স্পষ্ট করতে থাকেন তারুণ্যের বেদনা ভরা আর্তনাদ।
বৈশাখের এক সন্ধ্যায় নিজের গানে খোঁজা ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’র মতোই তিনি হারিয়ে যান। হারিয়ে গিয়েও তিনি তার গানের মধ্যে বর্ণিত একটি স্বর্ণালী রাতের নীল মণিহার হয়ে বেঁচে আছেন বাংলা সংগীতের সংখ্যাহীন শ্রোতার স্মৃতি ও সত্ত্বায়। তাঁর গানে প্রাধান্য পায় হারানো সময় স্মৃতি ও নস্টালজিকতা। তাঁর গানে ঝরনাধারার মতো বেদনার টুপটাপ বৃষ্টির শব্দ শোনা যায়। আধুনিক ব্যক্তিজীবনের অস্তিত্বের বেদনাকে মূর্ত করেছিল তাঁর গান।
মানুষের আর্তি ও প্রত্যাশার সেতুবন্ধ হয়ে তিনি আবেদন জাগিয়ে ছিলেন সব সময়ের তারুণ্যের অন্তর্গত হৃদয়ে। অসংখ্য শ্রোতা হৃদয়তাড়িত কণ্ঠে ‘স্মরণের জানালায় দাঁড়িয়ে’ তাকে আবার ডাকে।
– জাহিদ হাসান নিশান।