আমাদের কাল
– মাহবুব হাসান
এই শীতের দুপুরে কী শিমুল তুলো উড়ে আসে?
বীজ তার সাথে
খেলা করে পাড়ার যুবাদের চেতনায়
রোগা-নারীর শোভায়!
আশ্চর্য হয়ে এ-সব দেখে
বিকেলের হিমেল শাসিত রোদ,
তার পর ঘুড়ির মতন গোত্তা খেতে খেতে
আমাদের কিশোর রঙের বোধ
চটকা ঘুমের ঘোর থেকে উঠে
দিগন্তের দিকে যেতে যেতে থমকে দাঁড়ায়!
কেন না সে এক হাসি শুনতে পায় খুব মিহিন স্বরে।
আমিও কী শুনেছি সেই নীরব যাত্রার লোকজ কারু?
রিনির চোখের মতো শান্ত রাগী
বিকেলের কমনীয় দিনে
মানুষের শেষ ইচ্ছার মতন উড়ে যেতে ইচ্ছা হলে
আমি ফেরার জন্য নদী সমুদ্র আর মহাসমুদ্রের
গোমরানো রূপের আধার থেকে ফের
উড়াল দিই পরিযায়নপ্রিয় মানুষ!
এখানে তেমন ঠান্ডা নয়, যতটা ভয় দিয়েছে করোনা
আমার চিন্তার নালায়-মগজে,
এখানে জীবন হৈমন্তিক স্বপ্নের মতন অগোছালো
প্রকৃতির শয্যায় শুয়ে-থাকা রাতের অন্ধকারে
মজে গিয়ে আমাদের শোধ দেয়। যেন
সেই বিনিয়োগকারী পুঁজির পিপাসা,
বাতাসের মতো খেলা করে আমাদের চারপাশে
সৎ , সুবোধ মার্জিত প্রতিবেশীর পোশাকে!
চারদিকে তারই রাজনৈতিক খেলার মাঠ!
ধা ধা করে উঠে যাচ্ছে ঢাকার আকাশে
শ্বাপদশঙ্কুল স্কাইস্ক্রাপার
ফ্লাইওভারের ডুবোজাহাজগুলোর নিচে চাপা পড়ে আছে
গাছ-গাছালির মৌন ছাদ ।
সেই গ্রাম আজ আর গ্রাম নেই !
বুনো ঘ্রাণ নেই বাতাসের,
গণ-মানুষের আতর হারিয়ে ফেলেছে তার
সুগন্ধির খেই,
নোংরা-আবর্জনা আর ঘেয়ো মাছির মতন
রাজনৈতিক ব্যভিচার ছড়ায় বৈদগ্ধ্যের
সুগন্ধি আজ চৌদিকে!
কোনো এক ফাঁকে
সরল মানুষের শিমুল তুলোর বিকেল বিক্রি হয়ে গেছে
লোভের তংকায়!
আমাদের আনন্দ-মুহূর্তগুলো
হত্যার শিকার হয়ে গেছে বহুদিন আগে, তার
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট
চাপা পড়ে আছে পুলিশের নির্দয় ডেস্কের অন্ধকারে !
আর আইনের হাত
বিচারকের অন্ধ লোভাতুর সিদ্ধান্তের ডোলে
বীজধানের মতোই বন্দী,
আমি তাদের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই রোজ সকালে
তাদের দীর্ঘশ্বাসের হিসহোস বিকেলের ছায়ায় মিশে গেলে
কালো রাত নামে।
আমাদের পলায়নপর হৈমন্তিক কালে এই সব ঘটে!!!
১২/২৫/২০২০
ঢাকা