বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে সরকার বলেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সরকারি-বেসরকারি সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যার যার কর্মস্থল এলাকাতেই হবে এবার। জনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। তবে শর্ত মেনে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহণ চলাচল করতে পারলেও দূরপালস্নার গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে।
বুধবার এই সংক্রান্ত আদেশসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যা আগামী ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বহাল থাকবে। একই সময় গণপরিবহণ চলাচল সংক্রান্ত পৃথক একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নতুন মেয়াদের এই বিধিনিষেধ আজ বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহণ চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। যা পরে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এরপর আবার তা ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যা আবার বাড়ল। তবে গত ২৫ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিংমল খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলা রয়েছে ব্যাংকও। এ ছাড়া জরুরি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত অফিসগুলোও খোলা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের ঈদের ছুটিতে বাধ্যতামূলকভাবে কর্মস্থলে থাকতে হবে। বৃহস্পতিবার থেকে জেলার মধ্যে বাস চলবে। তবে বন্ধ থাকবে দূরপালস্নার আন্তঃজেলা গণপরিবহণ। এছাড়া আগের মতো ট্রেন ও লঞ্চ বন্ধ থাকবে। আগের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। খোলা থাকবে শিল্পকারখানা। সীমিত পরিসরে ব্যাংকে লেনদেন করা যাবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এছাড়া জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া আগের মতোই সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
প্রথম দফায় গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে সাত দিন করে দুই দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ৬টি নতুন শর্ত যুক্ত করে ৫ মে মধ্যরাত থেকে ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধের সময় বাড়ানো হয়েছে।
নতুন শর্তগুলো হলো- এক. সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করবেন। দুই. দোকানপাট/শপিংমল আগের মতো সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। সব দোকানপাট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় দোকানপাট শপিংমল তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। তিন. আন্তঃজেলা গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। তবে বুধবারের (৫ মে) পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহণ চলাচল করতে পারবে। উলেস্নখ্য, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে। চার. মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাঁচ. জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। ছয়. কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন, জেলা সদর, পৌরসভা এলাকায় বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন/পৌরসভা মাইকিংসহ ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।