নিজস্ব প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু প্রেমী আর ক্ষমতাসীন দলের অনুসারীদের প্রচেষ্টায় ১৯৯৩ সালে পাবনার সুজানগর উপজেলার মালফিয়ায় প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদ।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর টানা তিন বছর জমজমাট ভাবে পরিচালিত হয়েছে বলে স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে তারা জানান। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ক্লাবটি মাথা উচুঁ করে পরিচালিত হলেও ১৯৯৮ সালে এ অঞ্চলের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীন রাজনীতিবিদ পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ তফিজ উদ্দিন মৃত্যুবরণ করার পর ঝিমিয়ে পড়ে ক্লাবটি।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৮ সালের সাংসদ আহমেদ তফিজ উদ্দিনের মৃত্যুর পর আসনটি শুন্য হয়। উপনির্বাচন ঘিরে মালফিয়া বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদে পদধুলি দেন সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) এ কে খন্দকার বীরউত্তম, প্রয়াত স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সিরাজগঞ্জের প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ মির্জা, রাজবাড়ির সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ড. মির্জা আব্দুল জলিল, সাবেক সচিব ড. মজিবুর রহমানসহ খ্যাতনামা নানা ব্যক্তিবর্গ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে মালফিয়ার এই বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদের শুধু ভিটে পড়ে আছে। অনেক আগেই ঝড়ে উড়ে গেছে এই ক্লাবের ঘর ও চালা। ভিটে নিয়ে স্মৃতি আকঁড়ে আছে ক্লাবটি। ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতার পালা বদল হলেও এই ক্লাবটির উন্নয়নে এগিয়ে আসেনি কেউ। বেহাল দশায় ভিটে নিয়ে পড়ে আছে ক্লাবটির কীর্তি।
মালফিয়া বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ফজলে এলাহী মারুফ জানান, ঝড়ে এই ক্লাবটির চাল উড়ে যাওয়ার পর টাকার অভাবে আর সংস্কার করা হয়নি। বেশ কয়েক বছর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদটি এভাবেই পড়ে আছে ভিটে মাটি নিয়ে। তিনি বলেন, আমরা চাই বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদটি পুনঃরায় সংস্কার করে এখানে একটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার করা হোক। এই পাঠাগারের মাধ্যমে এলাকার তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরও বেশি বেশি জানতে পারবে। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
মালফিয়া গ্রামের একাধিক তরুণের সাথে আলাপকালে তাদের দাবী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারের এই বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদটি সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার হিসেবে গড়ে তোলা হোক। এটা এখন আমাদের সময়ের দাবী।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রবীন ও মধ্য বয়সী একাধিক জনের সাথে আলাপকালে তারা নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ অঞ্চলে অনেক বড় বড় নেতা আছে। এলাকায় অনেক নতুন নেতা তৈরী হচ্ছে। তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের পথে দৌড়াচ্ছেন। কেউ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদ নিয়ে ভাবছেন না। তারা বলেন, মালফিয়া গ্রামের এই ক্লাবটি সংস্কার করে পুনরায় চালু করা হলে এলাকার তরুণ সমাজের পাশাপাশি নানা শ্রেণিপেশার মানুষ ইতিহাস ঐতিহ্যসহ সুন্দর সময় কাটানোর জায়গা পাবেন।