নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ ৬৯ পাবনা-২ আসনের সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ তফিজ উদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী ।
সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। আহমেদ তফিজ উদ্দিনের জন্ম ১৯২৯ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়ীয়া (তারাবাড়ীয়া) গ্রামে।তার পিতার নাম আব্দুল শুকুর মন্ডল এবং মাতার নাম ভায়না খাতুন।
আহমেদ তফিজ উদ্দিন নিজ গ্রামের ফ্রী প্রাইমারী স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৩ সালে ম্যাট্টিক,পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে আইএসসি ও বিএসসি পাস করেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব টিচিং (বিটি) ডিগ্রি অর্জন করেন।
আহমেদ তফিজ উদ্দিন কর্মজীবনে প্রথম দিকে শিক্ষাকতা করেন।পরে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে নিরীক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাকুরী করার সময় ইন্টার্ন কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন নামে করাচিতে একটি বাঙালি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিন বছর সমিতি পরিচালনা করেন এবং বাঙালিদের অসুবিধা দূরীকরণে আত্মনিয়োগ করেন।১৯৬৩ সালে তাকে বিদেশে বদলির আদেশ দিলেন এবং বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে তিনি সরকারী চাকুরি ছেড়ে দেন।১৯৬৪ সালের ১লা জুলাই তিনি সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ও এলাকার উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন।ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
আহমেদ তফিজ উদ্দিন রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ১৯৪৮ সালে তৎকালীন মুসলিম ছাত্রলীগে অংশগ্রহণের মাধ্যমে।১৯৫০ সালে তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত এজিএস ছিলেন।এরপর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।আহমেদ তফিজ উদ্দিন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।স্বাধীনতাযুদ্ধে তিনি ভারতের কেচোয়াডাঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ ছিলেন।
আহমেদ তফিজ উদ্দিন ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে এমএনএ,১৯৭৩ সালে ও ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।১৯৮৫ ও ১৯৯০ সালে তিনি সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।আহমেদ তফিজ উদ্দিন সাতবাড়ীয়া কলেজর প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেন।এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সমাজ সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন।মাধ্যমিক পযার্য়ে বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন তিনি।ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জ্যামিতির ওপর তিনি পাঠ্য বই লিখেছেন, যা উচ্চ বিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১৯৯৮ সালের ২৮ জুন পাবনার জননন্দিত নেতা আহমেদ তফিজ উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন।