মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা বোটানিক্যাল গার্ডেন। ১৯৬১ সালে গোড়াপত্তন হওয়া ২৩০ একর আয়তনের উদ্যানটিতে বিচিত্র প্রজাতির উদ্ভিদের সমারোহ থাকলেও দীর্ঘদিন কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে এর পরিবেশ। অবশেষে এটি আধুনিকায়নে মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিয়েছে সরকার।
বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে এক সভায় পরিকল্পনাটি অনুমোদন করেছে মন্ত্রণালয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসেন চৌধুরী ও প্রকল্প পরিচালক হক মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
‘জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের মাস্টারপ্ল্যান হালনাগাদকরণ এবং বাস্তুসংস্থান সংরক্ষণসহ অত্যাবশ্যকীয় অবকাঠামো সংস্কার/উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পুনর্গঠিত মাস্টারপ্ল্যানে বোটানিক্যাল গার্ডেনকে ১৩টি জোনে ভাগ করার প্রস্তাব রয়েছে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, প্রতিটি জোনের আগ্রাসী প্রজাতির উদ্ভিদের স্থলে শুধু পরিবেশবান্ধব প্রজাতির উদ্ভিদ রোপণ করা হবে। বর্তমানের ছয়টি প্রবেশপথের স্থলে দুটি গেট থাকবে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে একটি সার্কুলার ওয়াকওয়ে নির্মাণ হবে। একটি ব্যবস্থা থাকবে, যার মাধ্যমে খোলা জিপে বয়স্ক দর্শনার্থীরা গার্ডেন ঘুরে দেখতে পারবেন। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে সুপেয় পানি এবং আধুনিক টয়লেটের ব্যবস্থা থাকবে।
মাস্টারপ্ল্যানে প্রশাসনিক ভবনের ওপর টিস্যু কালচার ল্যাব স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। একটি ভিজিটর ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার নির্মাণেরও প্রস্তাব রয়েছে। গার্ডেনের অভ্যন্তরের লেক এবং রাস্তার উন্নয়নের প্রস্তাব রয়েছে। এ ছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্কাইওয়াক নির্মাণ, কর্মচারীদের টিনশেড আবাসিক ভবনের স্থলে বহুতল ডরমিটরি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের পরিচালক হক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্প অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে। আগামী অর্থবছরে কাজ শুরু হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, মাস্টারপ্ল্যানে আধুনিকায়নের কাজের জন্য ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। যেহেতু এটি প্রাকৃতিক সম্পদ, ফলে তিনটি পর্যায়ে সতর্কতার সঙ্গে উন্নয়নকাজ চলবে। আগামী ১৫ বছরের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।