বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের গ্রামবাংলার মানুষের আবহমানকালের খাবার পান্তাভাত আর আলু ভর্তা পরিবেশন করে রান্নাবিষয়ক জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া’য় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরী। আর এ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন জাস্টিন। দুই দিন ধরে চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয় জাস্টিন, পিট ও কিশোয়ারকে নিয়ে। প্রথম দিন ফাইনাল ডিশে কিশোয়ার রান্না করেন স্মোকড ওয়াটার রাইস, আলু ভর্তা ও সার্ডিন। অর্থাৎ বাঙালির কাছে চিরচেনা পান্তা-ভাত, আলু ভর্তা আর সার্ডিন মাছ ভাজি।
ফাইনাল ডিশ রান্না নিয়ে কিশোয়ার বিচারকদের বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় এমন রান্না সত্যিই চ্যালেঞ্জের। সাধারণ রেস্টুরেন্টে এমন রান্না হয় না। কিন্তু বাঙালির কাছে এটা পরিচিত রান্না।’ আর ফাইনাল ডিশ হিসেবে এটা রেঁধে নিজের তৃপ্তির কথাও জানান কিশোয়ার। এ রান্না দেখে ও খেয়ে বিচারকরা রীতিমতো অভিভূত হয়ে পড়েন। তিনজনই দশে দশ দেন কিশোয়ারকে। তবে চূড়ান্ত পর্বের শুরুটা বেশ চ্যালেঞ্জের ছিল কিশোয়ারের জন্য।
তিনি হাঁসের একটি পদ রান্না শুরু করেছিলেন। বিচারকরা যখন তার রান্না দেখতে এলেন সবকিছু দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন এখানে কিশোয়ার কোথায়? তার পরই তিনি তার মেন্যু চেঞ্জের চিন্তা করেন আর ফাইনাল ডিশ হিসেবে পরিবেশন করেন বাঙালির চিরপরিচিত আলু ভর্তা, পান্তা ভাত আর সার্ডিন মাছ, যেই মাছের স্বাদ অনেকটা ইলিশের কাছাকাছি। তবে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার চূড়ান্ত ফলাফলের আগেই লাখ লাখ বাঙালির মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশে প্রচলিত নানা ধরনের খাবারকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের কারণেই ৩৮ বছর বয়সী এ শেফকে অন্যসব প্রতিযোগী থেকে আলাদা করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের মেলবোর্নের বাসিন্দা কিশোয়ার চৌধুরী পেশায় বিজনেস ডেভেলপার। দুই সন্তানের মা কিশোয়ার সন্তানদের জন্য বাংলাদেশি খাবার রান্না করতে পছন্দ করেন। পরিবারের কাছ থেকে শিখেছেন নানান রেসিপি। কিশোয়ার তার পারিবারিক রান্নার সংস্কৃতি নিয়ে গর্বিত। তিনি জানান, তার পরিবারের সবাই কমবেশি রাঁধুনি। পারিবারিক রেসিপির সঙ্গে নিজস্বতার ছোঁয়া কিশোয়ারের মূল শক্তির জায়গা। কিশোয়ার চৌধুরী অস্ট্রেলিয়ায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাওয়া এবং পরিচিত মুখ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কামরুল হোসাইন চৌধুরী ও লায়লা চৌধুরীর মেয়ে। কিশোয়ার চৌধুরী মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক এবং আর্টস লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাফিকস ডিজাইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।