বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : করদাতাদের জন্য অনলাইনে নতুন আয়কর রিটার্ন ফাইলিং সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সিস্টেম উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সোমবার (২৬ জুলাই) এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, করদাতারা এনবিআর ওয়েবসাইট কিংবা তাদের মোবাইলসেট ব্যবহার করে অনলাইনে ব্রাউজ করে চলতি ২০২০-২০২১ সালের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। এরই মধ্যে এনবিআরের আয়কর শাখা গত জুনে পরীক্ষামূলকভাবে করদাতাদের গ্রহণযোগ্যতা এবং ইন্টারনেট বিষয়ক একটি পরীক্ষা চালিয়ে এর সফলতা পেয়েছে।
এর আগের প্রকল্পটি অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে করদাতাদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে এনবিআর কর্মকর্তারা নতুন সিস্টেমটি তৈরি করেছেন। যা অনেকটা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চলবে বলে জানা গেছে। এনবিআর সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৬ সালের নবেম্বরে এনবিআর বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমের (বিট্যাক্স) আওতায় ভিয়েতনামের এফপিটি কোম্পানির তৈরি ই-ফাইলিং সিস্টেম চালু করেছিল।
কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত পাঁচ অর্থবছরে মাত্র ২১ হাজার ১০৪ জন করদাতা অনলাইনে তাদের ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেছেন। যা প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। যার মধ্যে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দাখিল করা মোট ২২ লাখ রিটার্নের মধ্যে মাত্র ৭ হাজার ২০৯ জন করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন করেন। শতাংশ হিসাবে যা মাত্র ০.৩৩ ভাগ।
তাই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বি-ট্যাক্স ব্যবস্থাটি যথাযথ ফল দেয়নি। সেজন্য এবার আয়কর এবং এনবিআরের আইসিটি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ১৩ সদস্যের একটি দল পূর্ববর্তী সিস্টেমটি ব্যবহারে করদাতারা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন তা শনাক্ত করে নতুন সিস্টেমটি সংযুক্ত করতে চাইছেন।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, নতুন সিস্টেমের মাধ্যমে করদাতারা যেকোনো সময় আয়কর সার্টিফিকেট, রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তিস্বীকার ও টিআইএন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। এজন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে নিবন্ধিত তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটে গিয়ে করদাতাদের নিবন্ধিত করতে হবে। অনলাইন সিস্টেমটি বিটিআরসির বায়োমেট্রিক ডাটাবেস ব্যবহার করে করদাতাদের সত্যতা যাচাই কর দেবে এবং ব্যবহারকারীর নাম ও পাসওয়ার্ড সরবরাহ করবে।
এ বিষয়ে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, করদাতারা তাদের মোবাইল ফোন দিয়ে খুব সহজেই আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। সফটওয়্যারটি ব্যাংক, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলসহ অন্যান্য সংস্থার সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত রাখা হবে। সবচেয়ে সুবিধার বিষয় হলো- নতুন সিস্টেমের মাধ্যমে করদাতারা যেকোনো সময় আয়কর সার্টিফিকেট, রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তিস্বীকার ও টিআইএন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৬২ লাখের বেশি ই-টিআইএন নিবন্ধিত আয়করদাতা রয়েছেন। যার মধ্যে সর্বশেষ অর্থবছরে ২৪ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। অর্থাৎ, এখনও প্রায় ৫২.৪১ শতাংশ টিআইএন হোল্ডার রিটার্ন জমা দেন না।