বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আশিকুল ইসলামের বাড়ি ঢাকার অদূরে সাভারে। গত ২৯ জুলাই তিনি সাভারে করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। তিনি পেয়েছেন সিনোফার্মের টিকা। এখন দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষা করছেন। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাঁদের তালিকা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠায়। এরপর তিনি টিকার নির্ধারিত অ্যাপে নিবন্ধন করে টিকা নিয়েছেন।
আশিকুল ইসলামের মতো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ হাজার ২৫৭ জন এবং চিকিৎসাশিক্ষার ৩ হাজার ৬৬২ জন শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে এখনো অধিকাংশ শিক্ষার্থীই টিকার আওতার বাইরে। এ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর প্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়া এখনো শুরু হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরুর বিষয়টি এখনো অনিশ্চিতই রয়ে গেল।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য দিল আফরোজা বেগম গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, টিকার জন্য তাঁরা শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা টিকাও নিচ্ছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে, সে বিষয়ে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পাননি।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই ছুটি আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলো, আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার পর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু করা হবে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ (কলেজগুলো বাদে) থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত মোট এক লাখের বেশি আবাসিক শিক্ষার্থীর তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএসে দেওয়া হয়। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট শিক্ষার্থী প্রায় তিন লাখ।
১৮-ঊর্ধ্ব শিক্ষার্থীরা টিকার আওতায় আসছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ গতকালই এক আদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী সব শিক্ষার্থীকে টিকা নেওয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ ও নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ বছর বয়সীদের নিবন্ধন করা হচ্ছে। তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ীও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পিছিয়ে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা
বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ ২ হাজার ২৬০টি। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক কলেজে অনার্স আছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট শিক্ষার্থী প্রায় ২৯ লাখ। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকার বড় সাতটি সরকারি কলেজে মোট শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা শিক্ষার্থীদের তালিকা সংগ্রহ করেছেন। এতে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থীর তালিকা পাওয়া গেছে। এই তালিকাগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। এ ছাড়া অন্য শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।