বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আমি যখন ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে প্রথম আসি, তখন এটি জেনে আমি মুগ্ধ হয়েছি যে বাংলাদেশিরা হিরোশিমা ও নাগাসাকির ট্র্যাজেডির বিষয়ে জানেন এবং তারা শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। তাছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমা হামলার ঘটনা, এমনকি সাসাকি সাদাকোর কাগজের সারসের গল্প এ দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে রয়েছে। এছাড়া অনেক বাংলাদেশি কয়েক দশক ধরে ৬ আগস্ট হিরোশিমা এবং নাগাসাকির ট্র্যাজেডিকে হিরোশিমা দিবস হিসাবে স্মরণ করেন। তাই বাংলাদেশ থেকে জাপানের প্রতি সেই মমত্ববোধ আমাদের কাছে অনেক অর্থবহ।
শুক্রবার ৬ আগস্ট হিরোশিমা দিবস। হিরোশিমা শহরে পারমাণবিক বোমা বর্ষণের এই দিনে হিরোশিমা ট্র্যাজেডির ৭৬তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে শান্তির বার্তা বিনিময় করতে চান বলে উল্লেখ করে ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাস তার এই লেখাটি পোস্ট করেছে। এই পোস্টের লেখা থেকে এ তথ্য জানা যায়।
তার লেখা পোস্টে, আমি আশা করি, এই ৬ আগস্ট মানুষকে বিশেষত তরুণ প্রজন্মকে যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং শান্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে অনুপ্রাণিত করবে। যেহেতু মানবিক সংকট এবং মহামারিজাতীয় সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জাতি বর্ণ নির্বিশেষে একসঙ্গে শান্তির বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা এবং তা ভাগ করে নেওয়ার বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাই আনবিক বোমার শিকার অসংখ্য আত্মার প্রতি আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। তিনি জানান, হিরোশিমায় আনবিক বোমায় হতাহতদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে খোদাই করা আছে “এখানে সব আত্মাকে চিরশান্তিতে থাকতে দাও, অশুভের পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়’। হিরোশিমা ও নাগাসাকির ট্রাজেডির যেন কখনই পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আনবিক বোমার ভয়াবহ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একমাত্র জাতি হিসাবে জাপান আনবিক বোমামুক্ত বিশ্ব তৈরির জন্য অন্য সব দেশ ও জনগণের সঙ্গে কাজ করতে চায়।
তিনি আরও জানান, হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পারমাণবিক বোমা ফেলার ৭৬ বছর হয়েছে। যেহেতু প্রতিবছর বেঁচে যাওয়া লোকের সংখ্যা দ্রুতই কমে যাচ্ছে। এজন্য এই ট্র্যাজেডির কথা স্মরণ করা এবং আনবিক বোমা ব্যবহারের সেই অমানবিকতা এবং সেখান থেকে আমরা যে শিক্ষাগুলো পেয়েছি সেগুলো রাষ্ট্রীয় সীমানা পেরিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আমি সত্যিই বাংলাদেশি জনগণের প্রশংসা করি যারা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা দেখিয়েছেন। বিশ্ব শান্তির জন্য দৃঢ় বার্তা প্রকাশ করেছেন। আমি আশা করি, জাপান ও বাংলাদেশের জনগণ সবার জন্য এই বিশ্বকে আরও শান্তিময় ও সম্প্রীতির বিশ্ব করে গড়ে তোলার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে।